আর এই চাপ হয়ত আরও বেড়েছে লকডাউন কিংবা ‘হোম অফিস’ করে।
ভারতের ‘ইএনটিওডি ইন্টারন্যাশনাল’য়ের মেডিকেল কনসালটেন্ট ডা. অনুপ রাজাধ্যক্ষ বলেন, “ট্যাবলেট, টেলিভিশন বা ল্যাপটপের সামনে অধিকাংশ সময় ব্যয় করা শরীর ও মনের পাশাপাশি চোখের ওপরেও প্রভাব ফেলে।”
এই কথা মাথায় রেখে তিনি ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, “আগের চেয়ে আরও বেশি লোক তাদের ট্যাবলেট, টেলিভিশন এবং ল্যাপটপে আটকে রয়েছে। যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে এই অভ্যাস আপনার মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি চোখের অবস্থার ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলবে।”
কোভিডকালীনে স্কুল, কলেজ ও অধিকাংশ অফিস অনলাইন ভিত্তিক হয়ে যাওয়ায় স্ক্রিনের সামনে সময় বেশি দিতে হয়। এর ফলে চোখে নানান রকমের সমস্যা যেমন-শুষ্কতা, চুলকনাও ভাব, লালচে হয়ে যাওয়া এমনকি চোখে পানি আসা বা মাথা ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার কয়েকটি উপায়
চোখ বিশেষজ্ঞদের মতে চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার একমাত্র উপায় হল স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। তারা ভিটামিন-জাতীয় খাবার ও ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দেন।
চোখের সুস্থতায় পালংশাক বা কলি সালাদ ও রঙিন সবজি খাওয়া উপকারী। সবুজ শাক সবজি থেকে লুটেইন ও জিয়াক্সানথিন নামক উপাদান চোখের রোগ থেকে সুস্থ থাকতে সহায়তা করে বলে জানান, ডা. রাজাধ্যক্ষ।
ভারতের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মেডিসিন’ অনুযায়ী রঙিন খাবার- হলুদ ও কমলা রংয়ের সবজি (গাজর, মিষ্টি আলু) ভিটামিন এ সমৃদ্ধ যা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।
কলা, আঙুর ও আম উচ্চ ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা চোখের রোগ থেকে সুস্থতা দান করে।
ওমেগা-থ্রি সমৃদ্ধ খাবার চোখের আর্দ্রতা রক্ষা করে। ফলে শুষ্কতা দূর হয় এবং চোখ সুরক্ষিত থাকে।
বিরতি
কাজের ফাঁকে নিয়মিত বিরতি নেওয়া প্রয়োজন।
রাজাধ্যক্ষ বলেন, “স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে কাজ শুরু করার পর প্রতি ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর পর চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন। দুই ঘণ্টা অন্তর অন্তর চোখের পেশিগুলোর চারপাশে মালিশ করুন বা পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে আসুন।”
তবে মালিশ করতে হাত দিয়ে খুব জোরে চোখ ঘষা উচিত নয়। এবং চোখের শুষ্কতা দূর করতে কিছুরক্ষণ পর পর চোখের পলক ফেলা প্রয়োজন।
কম্পিউটার বা স্ক্রিন ব্যবহারের সময় কমাতে চাইলে নিচের পদ্ধতিগুলো অনুশীলন করা যেতে পারে।
নীল আলো থেকে সুরক্ষা দেয় এমন উন্নত চশমা ব্যবহার
দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনে কাজ করলে এর থেকে বের হওয়া নীল আলো চোখের ক্ষতি করে। ‘কম্পিটার গ্লাস’ স্ক্রিনের নীল আলো থেকে চোখকে সুরক্ষিত রাখে এবং চোখের ওপরে চাপ পড়া কমায়।
অধিকাংশ স্ক্রিন থেকে শক্তিশালী আলো নিঃসরণ হয় যা এই গ্লাস দিয়ে প্রতিহত করে যায়। নীল আলো প্রতিহত করার চশমাতে হলদে রংয়ের শেইড ব্যবহার করা হয়।
স্ক্রিন থেকে নিঃসৃত হওয়া আলো রাতের ঘুম চক্রের ওপরে প্রভাব ফেলে। ফলে ঘুম হয়না ঠিক মতো।
নীল আলোর প্রভাব থেকে বাঁচতে অন্ধকার বা আবছায়া আলোতে কাজ করা চোখের ওপরে আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে জানান ডা. রাজাধ্যক্ষ।
পরিবার ও পোশা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানো
পরিবার-পরিজন ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানো নিজেকে ‘স্ক্রিন টাইম’ থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে। এতে চোখের বিশ্রাম হয়।
আরও পড়ুন-