অতিরিক্ত ওজন থেকে পুরুষের বিশেষ সমস্যা

পেটের মেদ থেকে ‘প্রোস্টেইট’ ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2021, 02:01 PM
Updated : 17 June 2021, 02:01 PM

শরীরে মেদ জমলে, ভুঁড়ি বাড়লে প্রথম যে অস্বস্তি দেখা তা হল চলাফেরায় আগের মতো চাঞ্চল্য পাওয়া যায় না।

ভাবতে থাকেন ব্যায়াম করব, খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করব। তবে ভাবনা আর বাস্তব হয় না বিভিন্ন ঝামেলায় কিংবা শুধুই আলসেমির কারণে।

তাই মানুষকে ওজন নিয়ন্ত্রণে অনুপ্রেরণা যোগাতে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন গবেষণা সিদ্ধ দুঃসংবাদ।

আর তা হল- অতিরিক্ত ওজনের সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে থাকতে পারে ‘প্রস্টেইট ক্যান্সার’য়ের ঝুঁকি।

এই ক্যান্সার কানাডায় পুরুষদের মৃত্যুবরণ করার প্রধান কারণ। আর যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দ্বিতীয়।

‘ক্যান্সার কজেস অ্যান্ড কন্ট্রোল’ শীর্ষক সাময়িকীতে এপ্রিলে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়।

কানাডার ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ সাইন্টিফিক রিসার্চ’য়ের পাঁচজন ‘হেল্থ অ্যান্ড এপিডেমিওলজি’র গবেষক এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন। আর সহযোগিতায় ছিল ‘কানাডিয়ান ক্যান্সার সোসাইটি’।

স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়, স্থূলতার সঙ্গে ‘প্রোস্টেইট ক্যান্সার’য়ের সম্পর্কের ইঙ্গিত নতুন নয়।

তবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বাড়তি চর্বি জমা হওয়া ক্যান্সার সৃষ্টিতে কোনো ভূমিকা রাখে কি-না সেটা জানাই ছিল এবার গবেষকদের উদ্দেশ্য।

এজন্য ২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মোট ১,৯০০ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। এদের মধ্যে সবচাইতে বয়স্ক পুরুষের বয়স ছিল ৭৫ বছর।

গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের কোমর ও নিতম্বের মাপ নেন, জানা হয় তাদের উচ্চতা, ওজন এবং ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স (বিএমআই)’ বিষয়ক অন্যান্য তথ্য।

গবেষণায় দেখা যায়, পেটের চর্বির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘প্রোস্টেইট’ ক্যান্সারের সবচাইতে বড় ঝুঁকি। পাশাপাশি ‘বিএমআই’ যত বাড়বে, এই ঝুঁকিও ততই বাড়বে।

আর যাদের কোমরের বেড় ৪০ বা তারও বেশি তাদের ‘প্রোস্টেইট ক্যান্সার’ হওয়ার ঝুঁকি অন্যান্য স্থূলকায় মানুষের চাইতে কয়েকগুন বেশি।

‘ইউনিভার্সিটি অফ মন্ট্রিয়াল’য়ের ‘ডক্টরাল স্টুডেন্ট’ এরিক ভালিয়ের এই গবেষণার প্রধান লেখকের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি বলেন, “সাধারণ স্থূলতা প্রোস্টেইট ক্যান্সারের তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে পেটের চর্বিই মূলত প্রোস্টেইট ক্যান্সারের মূল হোতা।”

পেটের মেদ হরমোন ও বিপাকক্রিয়ায় পরিবর্তন আনে যে কারণে হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হয় এমন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বাড়ে।

স্থূলতা ‘টেস্টোস্টেরন’ কমায়, বাড়ায় দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ঝুঁকি। আর তা থেকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টিউমার তৈরি হয়।

গবেষণার প্রধান গবেষক মেরি-অ্যালিস পারেন্ট বলেন, “সক্রিয় বা উগ্র ক্যান্সার কোষ সৃষ্টি হওয়া কারণ চিহ্নিত করতে পারা স্বাস্থ্য গবেষণায় একটি বড় অগ্রগতি। কারণ ক্যান্সার নিরাময় করা অত্যন্ত কঠিন।”

“এই গবেষণার তথ্য ক্যান্সার থেকে সুরক্ষিত থাকতে সহায়ক হবে। আর যে পুরুষের পেটের মেদ বেশি তাদের সচেতন হতে হবে, সঙ্গে চিকিৎসকদেরও এই বিষয়ে রোগিদের সতর্ক করা উচিত।”

আরও পড়ুন