কাজের জন্য জায়গা

কাজের জন্য জায়গা দরকার। অথচ বড় পরিসরে অফিস নিয়ে কর্মকাণ্ড চালানো খরচের ব্যাপার।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2021, 11:32 AM
Updated : 8 June 2021, 11:32 AM

এরকম সমস্যায় অনেকেই ছোট পরিসরে কাজের জায়গা খোঁজেন। ‘কো-ওয়ার্কিং অফিস স্পেস’ বা একই জায়গায় বিভিন্ন জন বিভিন্ন কাজের জন্য জায়গা ভাগাভাগি করে নেওয়ার পদ্ধতিতে খরচ যেমন কম হয় তেমনি প্রয়োজনে সরিয়ে ফেলা যায় নিজের কর্মক্ষেত্র।

প্রতিষ্ঠানের ধরণ, কর্মীদলের ব্যাপ্তি, কাজের ক্ষেত্র ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে অফিস কেমন দরকার। আবার যেকোনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ‍শুরুর দিকে অফিসের প্রয়োজন থাকলেও তাতে বিনিয়োগ করা এবং তা মাসের পর মাস চালিয়ে যাওয়া অনেকের কাছেই হয় অসম্ভব।

এমন নানাবিধ সমস্যার এক সমাধান হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বহু বছর আগে থেকেই চালু আছে কো-ওয়ার্কিং অফিস স্পেস্।

বাংলাদেশেও ২০১৩ সাল থেকে এমন সুবিধা চালু থাকলেও খুব সংখ্যক মানুষই সেগুলোর খবর জানেন।

এমন কয়েকটি ‘কো-ওয়ার্কিং অফিস স্পেস’ ঘুরে জানানো হলো বিস্তারিত।

রাজধানীর ধানমণ্ডি, বনানী ও তেজগাঁও অঞ্চলে কো-ওয়ার্কিং স্পেস হিসেবে ‘মোড়’ অন্যতম।

মজার ব্যাপার হল একজন সদস্য যেকোনা শাখাই ব্যবহার করতে পারবেন নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী।

প্রতিষ্ঠানের দুই কর্ণধারের একজন নাবিলা নওরিন বলেন, “২০১৫ সালে বনানীতে প্রথম শাখা চালু করি আমরা। ধানমণ্ডি শাখা ২০১৯ সালে আর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তেজগাঁ শাখা।”

“কো-ওয়ার্কিং অফিস স্পেস’য়ের প্রেক্ষাপটে আমরাই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা একাধিক শাখা চালু করতে পেরেছি। ধানমণ্ডির শাখাটি চার হাজার বর্গফুট, আর গুলশানেরটা তিন হাজার তিনশ বর্গফুট জায়গা নিয়ে তৈরি।”

তবে দেশে কো-ওয়ার্কিং স্পেস’য়ের যাত্রা শুরু হয় ‘হাবঢাকা’র হাত ধরে। মিরপুর সাতের সেকশন ১১তে এর একমাত্র শাখা।

মিরপুর ডিওএইচএস ও নিকেতনে শাখা আছে ‘ভিসটা কো-ওয়ার্কিং’য়ের। বনানীতে আছে ‘জেএমসি শেয়ারড অফিস’ নামে আরেকটি ভাগাভাগির অফিস।

এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে আছে এ ধরনের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান। যেমন, ‘লোকাস’, ‘কো+ল্যাব’, ‘ইঙ্ক স্টুডিও’, ‘ওয়ার্কস্টেশন ১০১’, ‘ম্যাডহাব’, ‘কোস্পেস ঢাকা’, ‘বনিক’ ইত্যাদি।

‘মোড়’য়ের সদস্যপদ তিন ধরনের। মাসে ৪০ ঘণ্টার প্যাকেজটির খরচ দুই হাজার টাকা। যতক্ষণ মোড়ের দরজা খোলা আছে সেই সময়ের একজন সদস্য মাসের যেকোনো সময়েই ৪০ ঘণ্টা কাজে লাগাতে পারবেন যেকোনো শাখায়। বেঁধে দেওয়া সময়ের বেশি যদি প্রয়োজন হয় তবে প্রতি ঘণ্টার জন্য বাড়তি ৫০ টাকা করে দিতে হবে।

তিন সদস্যের জন্য মাসে ১২০ ঘণ্টার প্যাকেজ পাঁচ হাজার টাকা। তবে একজন সদস্যের জন্য বরাদ্দ করা সময় আরেক সদস্য ব্যবহার করতে পারবেন না। আবার কোনো মাসে পুরো ১২০ ঘণ্টা ব্যবহার না করলে তা পরের মাসে যোগ হওয়ার সুযোগ নেই।

এছাড়াও রয়েছে লকার সুবিধা। চা-নাস্তা খাওয়ার ব্যবস্থা। আর ইন্টারনেট সংযোগ তো আছেই।

নিজের জন্য আস্ত একটা অফিস ঘর নিতে হলে ‘মোড়’য়ের সঙ্গে ছয় মাসের জন্য চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। প্রতিমাসে খরচ হবে ৫০ হাজার টাকা।

‘হাবঢাকা’য়ের সদস্যপদ দুই ধরনের, ‘বেসিক’ আর ‘প্রিমিয়াম’।

‘বেসিক মেম্বারশিপ’য়ে শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার ‘হাবঢাকা’য় বসতে পারবেন। বসায় জায়গাটা হবে অন্য সদস্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়া। স্থানটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। দিনে একবারই চা কিংবা কফি দেওয়া হবে সদস্যদের। এছাড়াও সদস্যরা কোনো লকার সুবিধা পাচ্ছেন না। আর মিটিং রুম ব্যবহার করতে হলে আলাদ ভাড়া দিতে হবে।

‘প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ’য়েও শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার বসতে পারবেন। তবে এখনে আপনার জন্য আছে নির্দিষ্ট বসার স্থান যা কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করতে হবে না। ঘরটি হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রতিমাসে দুই ঘন্টা মিটিং রুম ব্যবহার করা যায় বিনামূল্যে। চা কিংবা কফি যত খুশি তত। লকার ব্যবস্থাও বিনামূল্যে।

ভিসটা কো-ওয়ার্কিং’য়ে ‘ওপেন ডেস্ক’, ‘শেয়ারড স্পেস’, ‘ডেডিকেটেড রুম’, কনফারেন্স/মিটিং রুম’, ‘ভার্চুয়াল প্যাকেজ’ ইত্যাদি কয়েক ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে এখানে।

স্থানভেদে খরচে ভিন্নতা আছে। যেমন, মিরপুর ডিওএইচএস’য়ের একটি অফিস ঘর একাধিক ব্যক্তি ভাগাভাগি করে নিয়ে প্রতি ব্যক্তিকে প্রতি ঘণ্টায় গুনতে হবে ৩৫০ টাকা। একই সুবিধা আবার নিকেতন শাখায় মিলবে ২৫০ টাকায়।

তাই নিজের প্রয়োজনের সঙ্গে কোনটা মানাবে তা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার উপায় পেয়ে যাবেন তাদের ফেইসবুক পেইজ কিংবা ওয়েবসাইটে।

‘জেএমসি শেয়ারড অফিস’য়ে সরাসরি ঘর ভাড়া নিতে হবে এখানে। ৬৫ বর্গফুটের একটি কক্ষের ভাড়া মাসে ৫০ হাজার টাকা। থাকবে দুটি ডেস্ক, দুটি চেয়ার, ‘এয়ার কুলার’, ল্যান ও ওয়াইফাই।

১১৯ বর্গফুটের অফিস কক্ষের ভাড়া মাসে এক লক্ষ টাকা। থাকবে চারটি ডেস্ক, চারটি চেয়ার, ‘এয়ার কুলার’, ল্যান ও ওয়াইফাই।

একই সুযোগ সুবিধা সংবলীত ৪২ বর্গফুটের অফিস ঘরের ভাড়া মাসিক ৪০ হাজার টাকা। প্রতিষ্ঠানটির একটাই শাখা, আর তা বনানীতে।

ছবি: ফেইসবুক থেকে।