দিন শেষে যেসব অঙ্গ পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন

সুস্থ থাকতে ও ত্বক ভালো রাখতে নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা উচিত।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2021, 03:56 PM
Updated : 6 June 2021, 03:56 PM

বাইরে থেকে ফিরে গোসল দেওয়া অবশ্যই ভালো অভ্যাস। তবে সারাদিন বাসায়, ভাবছেন একবার তো গোসল হয়েছে। আর দরকার কী!

সারাটা সময় বাসায় কাটিয়ে দিলেও দিন শেষে দেহের কয়েকটি অংশ পরিষ্কার করা অবশ্যই উচিত।

‘এক্সপ্রেস ডটকো ডট ইউকে’তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কস্মেটিক চিকিৎসক ডা. রেখা টেইলর বলেন, “সন্ধ্যায় গোসল করা ত্বকের জন্য ভালো। এতে ত্বকে জমে থাকা সারাদিনের ঘাম, ধুলাবালি, জীবাণু ইত্যাদি দূর হয়। ঘুমের আগে রাতে গোসল করা ত্বক পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি সারা রাত ত্বক পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে।”

দেহের যে সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত সেগুলো হল:

পায়ের পাতা

পায়ের পাতা ও নখ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের চিকিৎসক টম বিয়ারনাটস্কি’র মতে, “পায়ের মৃত কোষ ও ঘামের কারণে ফাঙ্গাস ও দুর্গন্ধ দেখা দেয়।”

পায়ের দুর্গন্ধ দূর করার জন্যই কেবল তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি নয়। পায়ের ফাঙ্গাস, নখ ও গোড়ালিতেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। ফলে অনেক সময় সার্জারির মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। 

পায়ের পাতা ভালো রাখতে তা স্ক্রাব করা উচিত। তবে কেবল গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রেখে পরিষ্কার করলে হবে না।

লন্ডনের ‘অপটিমাল’ ক্লিনিকের স্বাস্থ্য পরিচালক ও যুক্তরাজ্যের ‘ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস’য়ের চিকিৎসক ক্রিস এয়ারি, “নখের নিচ ও আঙ্গুলের মধ্যে ফাঙ্গাস দেখা দিতে পারে এবং তা পরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।”

এছাড়াও পায়ের গোড়ালি, আঙ্গুল ও পাতা আর্দ্র রাখা এবং ফাটল এড়াতে এর যত্ন নেওয়া উচিত।

কানের পেছনের অংশ

এয়ারি বলেন, “কানের পেছনের অংশ নিয়মিত পরিষ্কার না করলে সংক্রমণ বা চর্মরোগ হতে পারে। না হলেও দুর্গন্ধ হবেই।”

তাই অবহেলা না করে শুরুতেই এর প্রতি সচেতন হওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকৃতিক রোগ ও প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ, স্যান্ড্রা এল হাজ বলেন, “কানের পেছনের ভাঁজযুক্ত অংশে অনেক তেল গ্রন্থি রয়েছে। এতে ঘাম ও সেবাম জমে। যা পরে ব্যাক্টেরিয়াতে পরিণত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এগুলো খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তাই নিয়মিত কানের পেছনের অংশ পরিষ্কার রাখা জরুরি। 

জিহ্বা

নিউ ইয়র্কের ‘অ্যাবোভা হেল্থ’য়ের পরামর্শক, জর্জিয়ার ‘অর্থোডোনটিক কেয়ার’য়ের নির্বাহী ক্লিনিকাল পরিচালক এবং ‘ওরাল কেয়ার পারফেক্টেডে’য়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উইলিয়াম এল বালানোফ, প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করার সময় জিহ্বা পরিষ্কার করার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “দাঁত ভালো রাখতে সবাই প্রতিদিন ব্রাশ করেন এবং ফ্লস ব্যবহার করেন। কিন্তু অধিকাংশই জিহ্বা পরিষ্কারের বিষয়টা এড়িয়ে যান।” 

“এতে মুখে ব্যাক্টেরিয়া জন্মিয়ে দুর্গন্ধ দেখা দেয়। এছাড়াও দাঁতের বিবর্ণতা, এমনকি স্বাদগ্রন্থির দুর্বলতাও দেখা দিতে পারে।”

বালানোফ পরামর্শ দেন, “অধিকাংশ ব্রাশের পেছনের অংশে জিহ্বা পরিষ্কার করার অংশ যোগ করা থাকে। এর নিয়মিত ব্যবহার মুখ পরিষ্কার ও সুস্থ রাখে।” 

বাহুমূল ও পায়ের সংযোগ স্থল

বাহুমূল বা বগল এবং পায়ের সংযোগ স্থল কখন পরিষ্কার রাখা উচিত তা নিজেই বুঝতে পারবেন।

তবে এই দুই জায়গাই সংবেদনশীল ও লোমশ হওয়াতে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

‘সাশেট ইনফিউজনস’য়ের চিকিৎসক ওয়াকাস আহমাদ বাটার বলেন, “এসব জায়গায় অধিকাংশ জীবাণু আটকে গিয়ে ঘাম সৃষ্টি করে। এছাড়াও লোম ও গরমের কারণে ঘাম বা আর্দ্র আবহাওয়া থেকে সংক্রমণ দেখা দেয়।”

যদিও, ডিউডোরেন্ট ব্যবহার ঘামের দুর্গন্ধ দূর করে। তবে এসব স্থানে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে প্রতিদিন অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালো মতো গোসল করা প্রয়োজন। আর শুকনা রাখা জরুরি।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন