যেভাবে বুঝবেন হাঁটার জুতার আয়ু শেষ

যে কোনো জুতা যদি পুরানো হয়ে যায় তবে ফেলে দিন।

লাইফস্টাইলডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2021, 06:23 AM
Updated : 3 June 2021, 06:23 AM

আর সেই জুতা যদি হয় ব্যায়াম কিংবা হাঁটার জন্য তবে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে পছন্দের জুতা আদৌ শরীরচর্চার উপযোগী কিনা।

কারণ পুরান জুতা ব্যবহারে দেখা দেয় পা, হাঁটু ও গোড়ালির ব্যথা।

“অনুশীলনের জুতা হবে ঝাঁকি শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন, বাঁকানোর মতো স্থিতিস্থাপক ও কুশনযুক্ত যা হাঁটা চলা ও শরীরচর্চায় আরাম দেবে।”

হাফপোস্ট ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেন যুক্তরাষ্ট্রের সিলভার স্প্রিং’য়ের পায়ের পাতা ও পায়ের নখ-বিষয়ক চিকিৎসক সেলি টুলপুলি।

তার মতে, পা বা গোঁড়ালির ব্যথা জুতা পরিবর্তনেরই নির্দেশ দেয়।

তবে কেবলমাত্র পায়ের পাতা বা গোড়ালি ব্যথার জন্যই নয়, জুতা যদি বড় হয়ে যায় তাহলেও তা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। অন্যথায়, পা, পায়ের পেশি ও অন্যান্য সংযোগস্থল এমনকি ‘লিগামেন্ট’ও ব্যথা হতে পারে।

তাই এমন সমস্যা দেখা দিলে জুতা পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করতে হবে।

আট মাস মেয়াদ

‘আমেরিকান জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিন’য়ে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যায়, সাধারণ ‘অ্যাথলেটিক’ জুতা এমনভাবে তৈরি করা হয় যার মেয়াদ ৩৫০ থেকে ৫০০ মাইল পর্যন্ত।

মাইলের হিসাব বা ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যবহার না করা হলে, মোটামুটি নিয়মিত হাঁটা হয় এমন জুতা ব্যবহারের মেয়াদ খুব বেশি হলে আট মাস পর্যন্ত হওয়া উচিত বলে জানায় এই গবেষণার ফলাফল।

গবেষণার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘সুপার অ্যাক্টিভ’ লোকদের জুতা তিন মাসের মধ্যে পরিবর্তন করে ফেলা প্রয়োজন।

পায়ে ব্যথা অনুভব করলে

স্বাস্থ্যকর ব্যায়ামের জুতা হিসেবে অন্যান্য জিনিসের মতো এর ঝাঁকি শোষণ, বাঁকানো নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির পাশাপাশি ভেতরের কুশনের স্তর থাকাও জরুরি।

‘ভেরি ওয়েল ফিট’ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আপনার শরীরই বলে দেবে কখন জুতার কুশনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

পুরানো জুতা ‘পেশির ব্যথা ও পা ফাটা’ এমনকি হাঁটু ও অন্যান্য সংযোগস্থলেও ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে।   

যখন দুই পায়ে (এক হাঁটুর বদলে দুই হাঁটু) ব্যথা দেখা দেয় তখন সেই জুতার মেয়াদ শেষ বলেই নির্দেশ দেয়। 

যারা মাইল বা হাঁটার ধাপ গুনতে চান না তাদের জন্য ‘রানার’স ওয়ার্ল্ড ডটকম’য়ের পরামর্শ হল ‘নিজের অনুভূতির দিকে খেয়াল রাখা’।

সাধারণভাবেই কিছুক্ষণ হাঁটার পর যদি মনে হয় জুতা আপনাকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে পারছে না তাহলে ধরে নিতে হবে, জুতাটা এখন আর উপযোগী নয়।

এরপরও এক সপ্তাহ সময় নিয়ে দেখুন। যদি কোনো উন্নতি না হয় তাহলে দেরি না করে জুতা পরিবর্তন করুন।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্পোর্টস শু’ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ব্রুকস রানিং’য়ের ব্রিটনি গ্লিটন বলেন, “দৌড়ানোর জুতাগুলোর সামনের অংশ নমনীয় হওয়া প্রয়োজন। কারণ এখানকার হাড়গুলো নমনীয়। তাই জুতা কেনা সময় এদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

আর জুতার মাঝের বা গোড়ালির অংশ ঢিলা হওয়া শুরু করলে বুঝতে হবে পাল্টে ফেলার সময় হয়ে গেছে।

ট্রেডমিলে যেসকল জুতা ব্যবহার করা যাবে না

চলতি বছরে ‘অ্যানালস অফ ইন্টার্নাল মেডিসিন’য়ে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে হাঁটুতে ‘অস্টিওআর্থ্রাইটিস’ আছে এমন বয়স্কদের জন্য কী ধরনের জুতা ব্যবহার উপযোগী সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

গবেষণার ফলাফলে দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন যে, বয়স্কদের জন্য স্থিতিশীল ও সহায়ক জুতা বেশি কার্যকর। নিতম্ব, হাঁটু ও পায়ের ব্যথা কমাতে স্থিতিশীল জুতা সহায়তা করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নমনীয় জুতা পরেন তাদের তুলনায় যারা স্থিতিশীল জুতা পরেন তাদের মাঝে পা, গোঁড়ালি ও হাঁটুর ব্যথার প্রবণতা কম থাকে। তাই জুতা কেনার সময় এসব বিষয় মাথা রাখা উচিত।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন