উপকারী কমলার রসের কিছুটা অপকারও আছে

তাজা কমলার রস খেতে মজাদার হলেও এর রয়েছে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

লাইফস্টাইলডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2021, 03:13 PM
Updated : 18 May 2021, 03:13 PM

পুষ্টিবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে, কমলার গুণাগুণ হিসেবে এতে থাকা হেস্পেরেডিন নামক রাসায়নিক উপাদানের কথা বলতেই হয়। এই উদ্ভিজ্জ উপাদান সিট্রাস বা টক ফলে পাওয়া যায়। এটা রক্তনালী ভালো রাখে ও প্রদাহ কমায়।

কমলার রসের উপকারিতা

পুষ্টিবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ইটদিস ডটকম’য়ের একটি প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ ও ‘নিউট্রিশন নাও’এর প্রতিষ্ঠাতা লরেন মানেকার বলেন, “শতভাগ খাঁটি কমলার রস শরীর আর্দ্র রাখে এবং কোনো শর্করা নেই। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ফোলাট এবং পটাসিয়াম। এসকল উপাদান শরীরের জন্য উপকারী”

খাঁটি কমলার রস “রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম যা কিনা ভিটামিন সি’য়ের ভালো উৎস” বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভেষজ ভিত্তিক নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ এবং ‘প্ল্যান্ট-বেইজড ইট’-এর কর্ণধার অ্যামি গোরিন।

কমলার রস পান করার একটি প্রধান প্রতিক্রিয়া হল ‘হেস্পেরিডিন’য়ের উপকারিতা গ্রহণ। কমলার রসে উচ্চ পরিমাণে এটা পাওয়া যায় যা একটি ‘বায়োঅ্যাকটিভ’ যৌগ।

গোরিনের ভাষায়, “হেস্পেরিডিন প্রদাহ কমায় এবং রক্ত প্রবাহ বজায় রেখে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করতে পারে।”

অন্যদিকে খাঁটি কমলার রস পান করলে অনেকের রক্তচাপ হ্রাস পেতে পারে।  

‘ইউরোপিয়ান জার্নাল অব নিউট্রিশন’য়ের এক গবেষণা থেকে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীরা তিন মাস ধরে কমলার রস, হেস্পেরিডিন সমৃদ্ধ কমলার রস অথবা নিয়ন্ত্রিত পানীয় পান করেছিলেন।

গবেষকরা দেখেন যে, নিয়মিত হেস্পেরিডিন সমৃদ্ধ পানীয় গ্রহণ ‘সিস্টোলিক’ রক্তচাপ কমায়।

এই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে গোরিন আরও জানান, কমলার রসে প্রাকৃতিকভাবে হেস্পেরিডিন থাকে এবং এই গবেষণায় হেস্পেরিডিনের উপকারিতা সম্পর্কেই বলা হয়েছে।

তিনি পুষ্টি গ্রহণের সহজ উপায় হিসেবে কমলার রস পান করার পরামর্শ দেন।

‘দ্যা ক্লিনিকাল জার্নাল অব দ্যা আমেরিকান সোসাইটি অ্যান্ড নেফ্রোলজি’তে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে জানান যায়, দৈনিক শতভাগ খাঁটি কমলার রস পান করলে বৃক্কে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে।

শতভাগ খাটি কমলার রসে ৮৮ শতাংশ পানি, যা শরীরকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে ও বৃক্ক সুস্থ রাখে।

এছাড়াও এতে খাবার উপযোগী সিট্রেইট থাকে, যা বৃক্কের পাথর গঠনকারী উপাদান কমাতে ও পাথর হ্রাস করতে সাহায্য করে।

‘হেস্পেরিডিন’য়ের উপকারিতা পেতে যেভাবে কমলার রস খাওয়া বেশি কার্যকর

কমলার রস সবসময় একই পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় না।

তাই বাজার থেকে কেনার সময় তা শতভাগ খাঁটি কিনা তা দেখে নিতে হয়। বিশেষত, সেখানে কোনো বাড়তি চিনি যোগ করা আছে কিনা দেখে নেওয়ার পরামর্শ দেন গোরিন। 

বড়দের জন্য আট আউন্স এবং ছোটদের জন্য চার আউন্স গ্রহণ করা উপকারী।

কোনো কিছুই প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভালো নয়। তা যতই ভালো জিনিস হোক না কেনো। অতিরিক্ত কমলার রস খাওয়া টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

গোরিন পানির পরিবর্তে সারাদিন কমলার রস গ্রহণের পরামর্শও দেননি।

তিনি বলেন, “কমলার রস ফলের পরিপূরক হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। কমলার স্মুদি, কমলার মাফিন বা কেকও তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে।”

আরও পড়ুন