নানান স্বাদের পোলাও

ঈদে সাধারণ পোলাও নয় বরং রান্না করতে পারেন ভিন্ন স্বাদের বিভিন্ন রকম পোলাও।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2021, 02:24 PM
Updated : 13 May 2021, 02:25 PM

ইলিশ পোলাও, মতি পোলাও, মোরগ পোলাও, পালং পোলাও- কত রকম যে পোলাও রয়েছে তার হিসাব রাখা দায়।

তাই ঈদে খাবার টেবিল সাজাতে রান্না করতে পারেন বিভিন্ন স্বাদের পোলাও।

ওভেনে ইলিশ পোলাও

খুব সহজেই মাইক্রওয়েভ ওভেনে তৈরি করুন মজাদার ইলিশ পোলাও। রেসিপি দিয়েছেন আফরোজ সাইদা।

উপকরণ: পোলাওয়ের চাল (বাসমতি) ৫০০ গ্রাম। ইলিশ মাছ ৫০০ গ্রাম। পেঁয়াজ-বেরেস্তা ২ টেবিল-চামচ। পানি সাড়ে ৪ কাপ। লবণ পরিমাণ মতো। এলাচ, দারুচিনি, লং, তেজপাতা ৪টি করে। ঘি ২ টেবিল-চামচ। কিশমিশ ১ টেবিল-চামচ। পেঁয়াজ-বেরেস্তা ২ টেবিল-চামচ। সাদা সরিষাবাটা ২ চা-চামচ। পেঁয়াজকুচি ২ টেবিল-চামচ। কাঁচামরিচ ৫,৬টি। লেবুর রস ১ টেবিল-চামচ। তেল ৩ টেবিল-চামচ।

পদ্ধতি: ইলিশ মাছ কেটে টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন।

পোলাওয়ের চাল ধুয়ে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। একটা ওভেনপ্রুফ পাত্রে ঘি, চাল, সব গরম মসলা, পেঁয়াজ-বেরেস্তা, লবণ মিশিয়ে পাত্রের ঢাকনা খুলে ওভেনে রাখুন।

মাইক্রো পাওয়ারে সেট করে চার মিনিট চাল ভুনে নিতে হবে। মাইক্রোওয়েভ ওভেন থেকে বের করে ভুনা চালের সঙ্গে গরম পানি মিশিয়ে পাত্রের ঢাকনা বন্ধ করে আবার ১৬ মিনিট রান্না করতে হবে।

মাঝখানে একবার বের করে নেড়েচেড়ে দিন।

একটা ওভেনপ্রুফ পাত্রে মাছের টুকরাগুলোর সঙ্গে তেল, পেঁয়াজকুচি, সরিষাবাটা, কাঁচামরিচ, লবণ, পেঁয়াজ, লেবুর রস একসঙ্গে মাখিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন।

তারপর মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ১৫ মিনিট ঢেকে রান্না করুন। মাঝখানে একবার নেড়ে দিন।

পোলাওয়ের সঙ্গে রান্না করা ইলিশ মাছ লেয়ারে মিশিয়ে তার উপর কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা, কিশমিশ মিশিয়ে দিন। পাত্র ঢেকে ওভেনে তিন মিনিট রান্না করুন।

মোরগ পোলাও

উৎসবে মজাদার পোলাও রান্না করুন  রন্ধনশিল্পী ডা. ফারহানা ইফতেখারের রেসিপিতে।

উপকরণ: পোলাওয়ের চাল আধা কেজি। মোরগের মাংস দেড় কেজি। কাঠ, কাজু ও পেস্তা বাদাম বাটা ১ টেবিল-চামচ। পেয়াঁজ-কুচি ১ কাপ। পেঁয়াজ-বাটা ২ টেবিল-চামচ। আদা ও রসুন বাটা ১ টেবিল-চামচ করে। গরম মসলা গুঁড়া আধা চা-চামচ। তেজপাতা ২টি। টক দই ২ টেবিল-চামচ। কিসমিস ও আলু বোখারা কয়েকটা। দারুচিনি, এলাচ ও লবঙ্গ ৩,৪টি করে। জায়ফল ও জয়ত্রী বাটা ১ চা-চামচ। লবণ পরিমাণ মতো। ঘি ২ টেবিল-চামচ। সয়াবিন তেল আধা কাপ। চিনি ১ চা-চামচ। গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ। কাঁচামরিচ কয়েকটা। জিরা বাটা ১ চা-চামচ। তরল দুধ ১ কাপ। ধনে ও মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ করে। গোলাপজল ও কেওড়ার জল ১ টেবিল-চামচ। পানি ৩ কাপ।

পদ্ধতি: মোরগের চামড়া ছাড়িয়ে হাড়-সহ পছন্দ মতো টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। পানি ঝরে গেলে এতে সব মসলা ও আলু বোখারা, টক দই দিয়ে ভালো করে মেখে কমপক্ষে ১ ঘন্টা মেরিনেইট করে রাখতে হবে।

পোলাওয়ের চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে।

ঘি ও তেল একসঙ্গে চুলায় দিয়ে একটু গরম হলে তাতে পেঁয়াজ-কুচি দিয়ে নাড়ুন। বাদামি হয়ে গেলে পেঁয়াজের বেরেস্তাটুকু আলাদা তুলে রাখুন।

ওই তেলেই গরম মসলা ও তেজপাতার ফোঁড়ন দিয়ে মাখানো মাংস কষাতে হবে।

মাংস সিদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে গেলে মাংসের টুকরা তুলে রেখে ওই পাত্রেই পোলাওয়ের চাল দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। তারপর তাতে ৩ কাপ পা, ১ কাপ তরল দুধ ও পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে ঢেকে দিন।

চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। চাল ফুটে উঠলে মাঝে মাঝে নেড়ে দিয়ে মাঝারি আঁচে ঢেকে রাখুন।

পোলাওয়ের পানি শুকিয়ে এলে কিছুটা পোলাও উঠিয়ে রান্না করা মোরগের মাংসের টুকরাগুলো দিয়ে কাঁচামরিচসহ বাকি পোলাও দিয়ে মৃদু আঁচে কিছুক্ষণ দমে রাখুন।

১০ মিনিট পর হালকাভাবে নেড়ে দিয়ে আবার দমে রেখে কিসমিস, গোলাপ জল ও কেওড়ার জল দিয়ে আরও পাঁচ মিনিট পর নামিয়ে ফেলুন।

পরিবেশনের সময় বেরেস্তা পোলাওয়ের ওপরে ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

মতি পোলাও

পোলাওয়ের স্বাদে ভিন্নতা আনতে রন্ধনশিল্পী ডা. ফারহানা ইফতেখারের এই রেসিপি অনুসরণ করতে পারেন।

উপকরণ: মাংসের কিমা ২ কাপ। পোলাওয়ের চাল ২৫০ গ্রাম। রসুন ও আদা বাটা এক টেবিল-চামচ করে। তেজপাতা ২টি। লবঙ্গ, এলাচ ও দারুচিনি ৩,৪টি করে। এক কাপ তরল দুধ। তেল পরিমাণ মতো। ময়দা অল্প। চিনি ১ চা-চামচ। স্বাদ মতো লবণ। গরম মসলার গুঁড়া অল্প। বেরেস্তা ১/৪ কাপ। ধনে ও পুদিনা পাতা কুচি আধা কাপ। কাঁচামরিচ-কুচি কয়েকটা।

পদ্ধতি: মাংস পেস্ট করে তাতে পেঁয়াজ, রসুন ও আদা বাটা ১ চা-চামচ করে দিয়ে, অল্প লবণ, কাঁচা-মরিচ, ধনে ও পুদিনা পাতা কুচি, গরম মসলার গুঁড়া, বেরেস্তা, ডিম ও অল্প ময়দা মিশিয়ে ছোট ছোট বলের আকারে গড়ে ডুবো তেলে ভেজে নিতে হবে।

পোলাওয়ের চাল ধুয়ে পানি ঝরাতে দিন। এবার একটি পাত্রে তেল গরম করে, এলাচ-দারুচিনি ও আদা-রসুন বাটা দিয়ে একটু ভেজে ধুয়ে রাখা চালসহ নাড়তে হবে।

স্বাদ মতো লবণ ও চিনি দিয়ে দিন।

ভাজা ভাজা হয়ে আসলে পরিমাণ মতো গরম পানি দিন। পানি কমে আসলে দুধ দিয়ে একটু করে নেড়ে দিন।

চাল আধা সিদ্ধ হলে নামিয়ে ঢাকনা দিয়ে রাখুন। কয়েকটা কাঁচা-মরিচ দিয়ে দিন। এরপর ১ চা-চামচ করে কেওড়া ও গোলাপ জলের সঙ্গে সামান্য জর্দার রং মিশিয়ে ছিটিয়ে দিন।

বাকিটা ভাপেই হয়ে যাবে। এতে পোলাও ঝরঝরে হবে এবং দেখতে সুন্দর লাগবে। এবার ভাজা মিটবলগুলো পোলাওয়ের সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

চিংড়ি পোলাও

রন্ধনশিল্পী ডা. ফারহানা ইফতেখারের রেসিপিতে তৈরি করুন এই মজার স্বাদের পোলাও।

উপকরণ: পোলাওয়ের চাল ১ কেজি। চিংড়ি মাঝারি আকারের আধা কেজি। দুধ ১ কাপ। নারিকেল কোরানো আধা কাপ বেটে নেওয়া। পেঁয়াজ-কুচি ৫/৬টি। পেঁয়াজ-বাটা ২ টেবিল-চামচ। আদা ও রসুন বাটা ১ চা-চামচ করে। বিরিয়ানির মসলা আধা চা-চামচ। দারুচিনি, এলাচি ও তেজপাতা ২টি করে। কাঁচা-মরিচ ৫,৬টি। মরিচের গুঁড়া সামান্য। তেল বা ঘি পরিমাণ মতো। লবণ (স্বাদ মতো)। গরম পানি পরিমাণ মতো।

পদ্ধতি: চাল ধুয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভিজেয়ে রাখুন এবং পানি ঝরিয়ে নিন।

প্রথমে প্যানে তেল গরম করে অল্প লবণ ও মরিচ-গুঁড়া দিয়ে চিংড়িগুলো হাল্কা ভেজে নিন।

তারপর এই প্যানেই পরিমাণ মতো তেল দিয়ে গরম মসলা ও পেঁয়াজের-কুচি ভেজে বাদামি করে নিতে হবে। অর্ধেকটা পেঁয়াজ ভাজা তুলে রেখে দিন।

বাকি পেঁয়াজের সঙ্গে একে একে পেঁয়াজ-বাটা, নারিকেল-বাটা, আদা ও রসুন বাটা, লবণ ও মরিচের-গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষিয়ে তাতে ভাজা চিংড়ি মাছ ঢেলে দিন।

সামান্য পানি দিয়ে চিংড়ি মাছগুলোকে কষিয়ে তাতে দুধ, বিরিয়ানির মসলা এবং কাঁচামরিচ দিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রান্না করুন।

চিংড়িগুলো আলাদা পাত্রে তুলে রেখে, মাছের ঝোলের সঙ্গে চাল দিয়ে ছয় থেকে সাত মিনিট ভেজে পরিমাণ মতো গরম পানি দিয়ে দিন। কয়েকবার ফুটে উঠলে পোলাওয়ের সঙ্গে রান্না করা চিংড়ি দিয়ে উপরে পেঁয়াজ-ভাজা ছড়িয়ে দিন।

অল্প আঁচে ঢেকে ২০ মিনিট রান্না করুন। তারপর নামিয়ে গরম গরম চিংড়ি পোলাও সালাদের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

জাফরানি পোলাও

ডা. ফারহানা ইফতেখারের রেসিপিতে উদরপূর্তি করুন মজার স্বাদের পোলাওয়ে।

উপকরণ: বাসমতী চাল ২ কাপ। ঘি ৩ টেবিল-চামচ। এলাচ ২টি। তেজপাতা ১টি। দারুচিনি ২টি। কাঁচা-মরিচ কয়েকটা। লবণ স্বাদ অনুযায়ী। পেঁয়াজ মিহি কুচি ২টি। জাফরান আধা চা–চামচের একটু বেশি। জায়ফল গুঁড়া সামান্য। কেওড়ার জল আধা টেবিল-চামচ। আদাবাটা ১ চা-চামচ। ঘন দুধ সিকি কাপ। চিনি ১ চা-চামচ। গরম পানি ৩,৪ কাপ বা প্রয়োজন মতো।

পদ্ধতি: চাল ধুয়ে আধা ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পানি ঝরিয়ে নিন। কেওড়ার জলে অর্ধেক জাফরান ও ঘন দুধে অর্ধেক জাফরান ভিজিয়ে রাখুন।

পাত্রে ঘি গরম করে গরম মসলা ও তেজপাতা ফোঁড়ন দিয়ে পেঁয়াজ-কুচি হালকা সোনালি করে ভেজে নিন। এতে আদাবাটা দিয়ে নেড়ে চাল, লবণ ও চিনি দিয়ে ভালো করে কিছুক্ষণ ভেজে নিন।

সাবধানে ভাজুন যেন চাল না ভাঙে।

এবারে গরম পানি, কাঁচা-মরিচ এবং দুধে ভেজানো জাফরান দিয়ে আলতোভাবে নেড়ে ঢেকে দিন যেন ভেতরের বাষ্প বের না হয়। অল্প আঁচে ১৫ মিনিট রান্না করুন।

ঢাকনা খুলে ওপরে সামান্য জায়ফল-গুঁড়া ছিটিয়ে কেওড়ার জলে ভেজানো জাফরান এবং চারপাশে ২ টেবিল-চামচ ঘি দিয়ে ঢেকে দিন।

চুলা বন্ধ করে ১০ মিনিট দমে রেখে তারপর পরিবেশন করুন।

পালং পোলাও

খেতে দারুন। পুষ্টিতে ভরপুর। নিমিষেই তৈরি করে ফেলুন। রেসিপি দিয়েছেন দিলরুবা সুলতানা লুবনা।

উপকরণ: পোলাওয়ের চাল দুই কাপ। পালংশাক-কুচি দুই কাপ। আধা কাপ হাড় ছাড়া মুরগির মাংস। ১টি ডিম। পেঁয়াজকুচি ২ টেবিল-চামচ। কাঁচামরিচ কয়েকটি। ধনেপাতার কুচি ৬ টেবিল-চামচ। আদাবাটা বা ছেঁচানো ১ টেবিল-চামচ। রসুনকুচি ১ টেবিল-চামচ। গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ। লবণ স্বাদ অনুযায়ী। তেল ৫ টেবিল-চামচ। এক টেবিল-চামচ ঘি। সয়া সস ২ টেবিল-চামচ। লেবুর রস ১ চা-চামচ। পানি পরিমাণমতো।

পদ্ধতি: সামান্য পানিতে চাল ও লবণ দিয়ে সিদ্ধ করুন। খেয়াল রাখবেন যেন বেশি নরম বা বেশি সিদ্ধ না হয়। ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে চালগুলো ঝরঝরে করে ফেলুন এবং পানি ঝরিয়ে রেখে দিন।

পালংশাক সামান্য লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। তারপর ধনেপাতার কুচি সামান্য লবণ দিয়ে পালংশাক ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। একটি ডিম ফেটিয়ে সামান্য তেল দিয়ে ডিমের ঝুরি বানিয়ে রাখুন। লক্ষ রাখবেন যেন ঝরঝরে হয়।

এবার কড়াইতে তেল গরম করুন, এক চামচ ঘি দিতে পারেন। তেল গরম হয়ে গেলে প্রথমে এক চিমটি লবণ দিয়ে পেঁয়াজকুচি, আদাবাটা ও রসুনকুচি ভাজুন। সঙ্গে মুরগিগুলো দিয়েও ভেজে নিন।

এবার ধীরে ধীরে পালংশাক-ধনেপাতার পেস্ট দিয়ে ভাজুন। তারপর পানি ঝরিয়ে রাখা ভাত ছিটিয়ে দিন। নাড়তে থাকুন।

ভাত সাত থেকে আট মিনিট ভেজে সয়া সস, গোলমরিচ ও লেবুর রস দিন। এবার ডিমের ঝুরি (যা আগে করে রাখা হয়েছিল) দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিন। পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত পালং পোলাও।

ছোট বাচ্চাদের মুরগির স্টক দিয়ে, ভাত নরম করে এই পালং পোলাও খাওয়াতে পারবেন। যা খুবই পুষ্টিকর হবে।

মুরগির স্টক তৈরি: একটি ছোট মুরগির হাড় নিয়ে ১০ থেকে ১২ কাপ পানিতে একটু লবণ, আদা ও রসুনবাটা দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে। পানি শুকিয়ে অর্ধেক হলে নামিয়ে ছেঁকে নিন। এভাবে তৈরি হবে মুরগির স্টক।

কাবুলি ঝাল পোলাও

আমাদের দেশে বিভিন্ন রকম ডাল, যেমন- কালাই, বুট ইত্যাদি দিয়ে সাধারণত পোলাও রান্না করা হয় না। কিন্তু অন্যান্য দেশে মাংসের বদলে পোলাও রান্নায় ডাল অহরহ ব্যবহৃত হয়।

তেমনই একটি সুস্বাদু পোলাওয়ের রেসিপি দিয়েছেন ফারহানা রহমান।

উপকরণ: পোলাওয়ের চাল ২ কাপ, কাবুলি ডাল ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, আদা-রসুন বাটা ১ টেবিল-চামচ করে, মরিচ গুড়া ১ টেবিল-চামচ, হলুদ গুড়া ১ চা-চামচ, জিরা গুড়া আধা চা-চামচ। লবন স্বাদ মত, ৩ টি এলাচ, ১ টুকরা দারচিনি, দুইটি তেজপাতা, ৫ কাপ গরম পানি, ৪-৫ টি ফালি করা কাঁচামরিচ, ১ টেবিল চামচ ঘি, তেল ১/৩ কাপ।

পদ্ধতি: ডাল ৭-৮ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। এবার একটু আদা বাটা, লবন ও তেল দিয়ে বেশি পানিতে ভালো মত সিদ্ধ করুন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, ডাল যেন পুরোপুরি গলে না যায়।

এবার পেঁয়াজ সামান্য তেলে লাল করে ভেজে নিন। গরম মসলা, আদা বাটা, রসুন বাটা দিয়ে একটু ভাজুন।

ডালের পানি ঝরিয়ে ফেলে দিন। এবার ভাজা পেঁয়াজে ডাল দিয়ে দিন। ঘি এবং কাঁচামরিচ বাদে সব মশলা দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কষান। পানি শুকিয়ে গেলে আগে থেকে ধুয়ে রাখা চাল দিয়ে দিন এবং ডালের সঙ্গে অল্প সময় ভাজুন। এবার গরম পানি ঢেলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন ও অল্প আঁচে রান্না করুন। লবন হয়েছে কিনা চেখে দেখুন। লাগলে আরও একটু লবন দিয়ে দিতে পারেন।

চাল যখন প্রায় সিদ্ধ হয়ে আসবে তখন কাঁচামরিচ ও ঘি দিয়ে মিশিয়ে দিন। ভালভাবে ঢেকে, ভালভাবে সিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত দম এ রাখুন। হয়ে গেলে পেঁয়াজ এর বেরেস্তা ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।

আফগানি মাটন পোলাও

রন্ধনশিল্পী ডা. ফারহানা ইফতেখারের রেসিপিতে স্বাদ বদলাতে তৈরি করতে পারেন এই পোলাও।

এই রেসিপির বিশেষত্ব হচ্ছে গাজরের টুকরা, কিশমিশ ও কাঠ-বাদাম ভেজে গার্নিশ করা হয়। আর মাংস রান্নাতেও রয়েছে একটু ভিন্নতা।

পদ্ধতি: প্রথমে ২ কাপ বাসমতি চাল পরিষ্কার করে ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। তারপর পানি ঝরিয়ে রাখুন।

প্রেশার কুকারে ১ কেজি মাটন বা খাসির মাংস (বড় করে টুকরো করা) এর সঙ্গে ১ টেবিল-চামচ করে আদা ও রসুন বাটা, ১ টেবিল চামচ শাহি গরম মসলার গুঁড়া মসলাগুলো না টেলে গুঁড়া করা), ৪ থেকে ৫ কাপ পানি ও পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে ১২ থেকে ১৫টি সিঁটি দেওয়া পর্যন্ত সিদ্ধ করে নিন।

এবার যে পাত্রে পোলাও রান্না করবেন ওই পাত্রে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে ১/৩ কাপ করে কিশমিশ ও কাঠ-বাদামের টুকরা হাল্কা বাদামি করে ভেজে নিন।

এবার এক কাপ পরিমাণে লম্বা করে কাটা গাজরের টুকরা সামান্য লবণ দিয়ে হাল্কা করে ভেজে নিন। ভাজা বাদাম, কিশমিশ ও গাজর একত্রে রাখুন বাটিতে।

এবার ওই পাত্রেই ১ কাপ পরিমাণ পেঁয়াজ কুচি বাদামি করে ভেজে সিদ্ধ মাংসের টুকরাগুলো দিয়ে দিন। সঙ্গে দিন একটি পাকা টমেটো কুচি।

টমেটো গলে মাংসের সঙ্গে ভালো করে মিশে গেলে এর সঙ্গে তিন কাপ মাংস সিদ্ধর পানি দিয়ে দিন। (১ কাপ চালে দেড় কাপ পানি)।

পানিটা ফুটে উঠলেই চালটা দিয়ে দিন।

এবার ১ টেবিল-চামচ শাহি গরম মসলার গুঁড়া, ১ চা-চামচ চিনি ও পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে রান্না করুন।

পানিটা যখন শুকিয়ে মাখা মাখা হয়ে আসবে তখন ভাজা বাদাম, কিশমিশ ও গাজরের টুকরাগুলো পোলাওয়ের ওপরে ছড়িয়ে দিয়ে ২০ মিনিট দমে রাখুন।

তারপর ঢাকনা খুলে আলতো হাতে পোলাওটা নেড়ে দিন। এবার পরিবেশন করুন আর উপভোগ করুন মজাদার আফগানি মাটন পোলাও।