তাই মন খারাপ, মানসিক চাপ কিংবা বিষণ্ন বিকেলে হঠাৎ করেই খেতে ইচ্ছে করে নানান মুখরোচক খাবার।
বিগড়ে যাওয়া মেজাজ ঠিক করার মস্তিষ্কের এই প্রতিরোধ ব্যবস্থায় আক্রান্ত হয়ে ভরা পেটেও অনেকসময় নানান মজাদার খাবারের জন্য মন উচাটন হয়।
অথচ মন খারাপের খিদে মেটাতে গিয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে, পরে আবার আত্মগ্লানিতে ভুগতে হয়।
কেনো বেশি খেলাম? এই খাবার তো ওজন বাড়িয়ে দেবে।
এরকম অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কিছু পন্থা দিয়েছেন ভারতের ‘ইউকেয়ার’ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা লিউক কুটিনোহ।
পিংকভিলা ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ‘হলিস্টিক লাইফস্টাইল কোচ’ বলেন, “মনকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা তো আর সম্ভব না। তবে যতটুকুই সম্ভব নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে।”
আর আবেগপ্রবণ হয়ে খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিয়ে চাইলে প্রথমেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা শিখতে হবে।
ধাপে ধাপে এগিয়ে গেলে মনের লাগাম নিজের হাতেই টানা সম্ভব হয় অনেকটাই।
১. কষ্টের অনুভূতি কারোরই কাম্য না, সবাই চায় সুখী হতে। সবসময় সুখে থাকা সম্ভব না হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কেবল নিজের আনন্দ ও সুখ প্রকাশের প্রবণতা থাকায় অনেকেই নিজের কষ্টের আবেগ গোপন করার চেষ্টা করেন।
নিজের কখনও মন খারাপ হলে তা প্রকাশ করার চেষ্টা করুন। আবেগ অনুভূতি লুকিয়ে রাখার ফলাফল কখনও ভালো হয় না।
২. পাশাপাশি খাবারের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন তা যাচাই করা প্রয়োজন।
পুষ্টির ঘাটতি পূরণে, কোষ সুস্থ রাখতে নাকি মনকে খুশি করতে খাবার গ্রহণ করছেন?
সন্তানকে পুরস্কার স্বরূপ কখনও খাবার উপহার দেবেন না। সন্তানকে খুশি হয়ে কিছু দিতে চাইলে বই দিতে পারেন। বনভোজনে নিয়ে যেতে পারেন অথবা অন্য কোনো কাজের মাধ্যমে পুরস্কৃত করতে পারেন, কিন্তু খাবার কখনই না।
খাবার উপহার দেওয়া শিশুকে প্রাথমিক আনন্দ দিলেও তা কোনো ভালো অভিজ্ঞতা দান করে না। ছোট থেকে শিশু খাবারের মাধ্যমে পুরস্কৃত হতে থাকলে নিজের আবেগের সঙ্গে খাবারকে জড়িয়ে ফেলে এবং পরে ভালো বা খারাপ যে কোনো অনুভূতিতেই খাবারকে আশ্রয় হিসেবে বিবেচনা করে।
৩. মন বা হৃদয়ের খারাপ অনুভূতি খাবার সমাধান করতে পারে না। তাই যাই অনূভব করুন না কেনো তা প্রকাশ করতে হেব। তবে আবেগ প্রকাশের সময় খেয়াল রাখবেন যেন তা অন্যের ক্ষতি না করে।
রাগ, ক্ষোভ, হিংসা, অপরাধবোধ সবকিছুই একজন মানুষের ভেতর কাজ করতে পারে। কিন্তু তা যেন কখনই অন্যের সমস্যার কারণ না হয়। আবেগকে আবেগের মতো করে প্রকাশ করুন। আর সেভাবেই সমাধান করুন।
৪. যতটা সম্ভব নিজের অনুভূতি প্রকাশ করুন। কথা বলে, লিখে, নিজের কন্ঠ রেকর্ড করে মনের কথা প্রকাশ করতে পারেন। চাইলে পরে মুছে ফেলুন। ইচ্ছা হলে সংরক্ষণ করে এগুলোর মাধ্যমে কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নিতে পারেন।
৫. অন্যের সহায়তা চাইতে ভয় পাবেন না। আবেগের কারণে খাওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শের প্রয়োজন হয়। সেই সাহায্য নিতে মোটেও পিছ পা হওয়া যাবে না। না হলে ভবিষ্যতে এর খারাপ প্রভাব দেখা দিতে পারে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন