করোনাভাইরাস: টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা

দ্বিতীয় ডোজ না নিলে শরীরে পর্যাপ্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নাও তৈরি হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2021, 03:45 PM
Updated : 28 April 2021, 04:05 PM

মডার্না ও ফাইজার’য়ের কোভিড-১৯ টিকার ডোজ দুটি, কার্যকরী হতে দুটোই নিতে হয়।

তবে শঙ্কার বিষয় হল যু্ক্তরাষ্ট্রে সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি)’র পরিসংখ্যান বলে, তাদের দেশের প্রায় আট শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ নেওয়া পর দ্বিতীয় ডোজ নিচ্ছে না।

এই আট শতাংশ মানে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। এর আগে দেশটিতে দ্বিতীয় ডোজ টিকা না নেওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল ৩.৪ শতাংশ অর্থাৎ ক্রমেই এমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, ‘টিকা নিতে না আসার পেছনে কারণ নানান ধরনের। কেউ একটি ডোজের ওপর ভরসা করে ভাগ্যের ওপর নিজের জীবনকে ছেড়ে দিয়েছেন। ফাইজার’য়ের টিকা এক ডোজের মাত্রা ৫২.৪ শতাংশ কার্যকর, আর দুই ডোজ নিলে ৯৫ শতাংশ। অপরদিকে মডার্না’র টিকা এক ডোজে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কার্যকর। আর দুই ডোজ নিলে ৯৪.৫ শতাংশ।

তবে টিকা গ্রহীতার অনিহাই এখানে দায়ী নয়, সঠিক সময়ে টিকার দুষ্প্রাপ্যতাও এখানে বড় ভূমিকা রাখছে।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দ্বিতীয় ডোজ’য়ের গুরুত্ব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওহাইয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটি ওয়েক্সনার মেডিকাল সেন্টার’য়ের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ কার্লোস মালভেসতুতো (এমপিএইচ)-এর  দেওয়া তথ্য অবলম্বনে জানানো হল বিস্তারিত।

টিকার দুই ডোজ যে কারণে প্রয়োজন

সহজভাষায় এক ডোজের পরিবর্তে দুই ডোজ নিলে, টিকা শরীরে ‘অ্যান্টিবডি’র মাত্রা বাড়ায় উল্লেখযোগ্য হারে। যত বেশি ‘অ্যান্টিবডি’ ততই ভালো। কারণ এটাই হল সেই প্রোটিন যা করোনাভাইরাসকে ধ্বংস করবে রোগ সৃষ্টি করার আগেই।

আর একারণেই টিকাগুলোর প্রাথমিক পরীক্ষার আমলে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর যখন ‘অ্যান্টিবডি’র মাত্রা বাড়তে দেখা যায় তখন ফাইজার ও মডার্না তাদের টিকাকে দুই ডোজ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এই পদ্ধতি নতুন নয়। ‘হেপাটাইটিস বি’ ও ‘হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস’য়ের টিকাও একাধিক ডোজে দেওয়া হয় যাতে বেশি ‘অ্যান্টিবডি’ তৈরি হয়।

এখন পর্যন্ত আসা সকল টিকাই যে দুই ডোজের তা কিন্তু নয়। জনসন অ্যান্ড জনসন’য়ের টিকার ডোজ একটাই। এই প্রতিষ্ঠানও তাদের টিকার দুই ডোজ নিয়ে গবেষণা করছে।

ডা. মালভেসতুতো বলেন, “জনসন অ্যান্ড জনসন তাদের ‘প্রিক্লিনিকাল ট্রায়াল’য়ে দেখেছিল এক ডোজ টিকা নিলেই শরীরে পর্যাপ্ত ‘অ্যান্টিবডি’ তৈরি হচ্ছে।”

তাহলে দুই ডোজ নেওয়াই উচিত

ডা. মালভেসতুতো আরও বলেন, “ফাইজার এবং মডার্না’র টিকা দুই ডোজের। তাই দুটোই নেওয়া সর্বোচ্চ সুরক্ষা পাওয়ার জন্য আবশ্যক। কেউ যদি মনে করেন আমি এক ডোজ নিয়েছি, দ্বিতীয় নেওয়ার আর প্রয়োজন নেই, তবে সেটা মস্ত বড় ভুল হবে। যেহেতু আমারা টিকা পেয়েছি, আমাদের উচিত হবে সেই টিকার সর্বোচ্চ ব্যবহার।”

টিকার সল্পতা থাকতে পারে, টিকা যিনি নেবেন তার কোনো সমস্যা থাকতে পারে, এমনকি প্রথম ডোজ নেওয়ার পর যদি শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে তবে সেটার ভয় থেকেও দ্বিতীয় ডোজ নিতে অনিহা আসতে পারে।

তবে সবকিছুর পর যদি দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সুযোগ থাকে তবে কখনই তা উপেক্ষা করা বা অবহেলা করা উচিত হবে না।

আরও পড়ুন