করোনাভাইরাস: শিশু আক্রান্ত হলে যা করণীয়

সময়ের সঙ্গে করোনাভাইরাস রূপ বদলে শিশুদের জন্য হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2021, 04:56 PM
Updated : 26 April 2021, 04:56 PM

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশুদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এদের মধ্যে অধিকাংশেরই রোগের মাত্রা মৃদু, উপসর্গ নেই বললেই চলে। কিন্তু রোগ ছড়াতে তারা বড় ভূমিকা পালন করছে।

আর সন্তানের সেবা করতে গিয়ে নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখতে অনেকে ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হচ্ছেন বাবা-মা।

সন্তানের বয়স যদি ১০ বছরের কম হয় তবে তাকে আলাদা করে রাখা প্রায় অসম্ভব। এমনকি তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোও কঠিন।

এই অবস্থায় কী করণীয়?

বিস্তারিত জানানো হল স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে।

শিশুদের ঝুঁকি বাড়ল কীভাবে?

করোনভাইরাস মহামারীর প্রথম দিকে শিশুরা যে আক্রান্ত হয়নি তা নয়, তবে সংখ্যা ছিল সামান্য। ভাইরাসের সংস্পর্শে তারা এসেছে বিভিন্ন প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়া প্রাপ্তবয়স্কদের কাছ থেকেই। করোনাভাইরাসের নতুন যে ধরন তা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিয়ে শ্বাসতন্ত্রকে আক্রমণ করার ক্ষমতা বেড়েছে।

আগেও শিশুদের তা দেখা দিলেও উপসর্গ দেখা যায়নি, তবে এখন দেখা যাচ্ছে। এখন শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ‘মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লামাটরি সিন্ড্রোম ইন চিলড্রেন (এমআইএসসি)’তে। যেখানে দেখা দিচ্ছে মৃদুমাত্রার উপসর্গ।

শিশুদের মাঝে লক্ষণ যেমন

প্রাপ্তবয়স্কদের মতো শিশুদের ক্ষেত্রেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শ্বাসতন্ত্র। শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণ লক্ষণ হল- প্রচণ্ড জ্বর, কাঁপুনি, দম আটকে আসা, কাশি, গন্ধ না পাওয়া, গলা ব্যথা, অবসাদ, শরীর ব্যথা।

এছাড়াও মুখের স্বাদ হারানো, ডায়রিয়া, পেটের গোলমাল, বমি এবং ‘মিউকোকিউটেনিয়াস ইফ্লামাটরি সাইন’ বা একই সঙ্গে ত্বক ও শ্লেষ্মা ঝিল্লিতে প্রদাহ দেখা যাচ্ছে।

বাবা-মায়ের করণীয়

যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলেও তার ‘কোয়ারেন্টিন’য়ের ব্যবস্থা করতে হবে। পরের ধাপ হবে পরীক্ষা করানো এবং রক্তে ‘অক্সিজেন স্যাচুরেইশন’য়ের মাত্রার ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা।

এই মাত্রা ৯৪ এর নিচে নামলেই তাকে অক্সিজেন কৃত্রিমভাবে সরবরাহ করতে হবে, পর্যাপ্ত তরল পান করাতে হবে এবং পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে।

সঙ্গে প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে দ্রুত, প্রয়োজনে হাসপাতালে নিতে হবে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দেওয়ার তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই তারা সুস্থ হয়ে যায়। তবে শিশুর আগে থেকেই কোনো রোগ থাকলে সুস্থ হতে আরও সময় লাগতে দেখা গেছে।

আর শিশুর ‘কোয়ারেন্টিন’ বন্ধ করার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে প্রথম উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর কমপক্ষে ১০দিন পেরিয়েছে কি-না। কোনো ওষুধ ছাড়াই টানা ২৪ ঘণ্টা কোনো জ্বর আসেনি এবং অন্যান উপসর্গগুলো কমছে। 

শিশুদের জন্য টিকা

এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনো টিকাই শিশুদের জন্য প্রযোজ্য নয়। তবে ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এই বিষয়েই কাজ করে যাচ্ছে।

ভারতের ‘ভারত বায়োটেক’ ‘কোভ্যাক্সিন’য়ের ‘ফেইজ থ্রি ক্লিনিকাল ট্রায়াল’য়ের অনুমোদনের আবেদন করেছে। পাঁচ থেকে ১৮ বছর বয়সের শিশুরা এই টিকা নিতে পারবে।

অপরদিকে ‘ফাইজার’ আর ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র শিশুদের জন্য তৈরি নিজ নিজ টিকাগুলো এখনও পরীক্ষাধীন।

আরও পড়ুন