সুখী দম্পতি নেট জগতে ছবি দেয় কম

দাম্পত্য জীবনের রোমান্টিক ছবি দেওয়া মানে এই নয় যে তারা সবসময় সুখী।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2021, 11:26 AM
Updated : 26 March 2021, 11:26 AM

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষের দাম্পত্য জীবনের ছবি কিংবা ভিডিও দেখে অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করেন। আবার মনের গভীরে হয়ত আপনি অন্যের সুখ দেখে হিংসা অনুভব করছেন।

অপরদিকে যারা দাম্পত্য জীবনের এই রোমান্টিক ছবিগুলো নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরছেন, নেপথ্যে তাদের দাম্পত্য জীবন আসলেই কতটুকু সুখের সেটাও ভাবার বিষয়।

যারা সত্যিকার অর্থে দাম্পত্য জীবনে সুখে আছেন, তাদের অধিকাংশই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নিজের সুখের সম্প্রচার এড়িয়ে চলেন।

কেনো তা করেন সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হল সম্পর্কবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে।

সুখী সংসারের প্রমাণ দেওয়া অপ্রয়োজনীয়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের সুখী পরিবার নিয়ে পোস্ট দেওয়ার পেছনে কারণ হতে পারে আপনি মানুষকে বিশ্বাস করাতে চান যে আপনারা সুখে আছেন। তবে বাস্তবে এমন ইচ্ছে থাকাটা অযৌক্তিক। নিজের জীবনসঙ্গীকে নিয়ে আপনি সুখে আছেন এমনটা বাইরের মানুষকে বোঝানো কখনই প্রয়োজনীয় হতে পারেনা। আর একারণেই সত্যিকার সুখী দম্পতিরা ব্যক্তিগত জীবনের চিত্র মানুষের সামনে তুলে ধরতে আগ্রহ পান না।

নার্সিসিজম

যারা নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের সকল খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে ফেইসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি মাধ্যমে পোস্ট দেন তাদের মধ্যে বিভিন্ন মাত্রায় ‘নার্সিসিজম’য়ের বৈশিষ্ট্য থাকে একথা প্রমাণিত। তারা নিজের সম্পর্কে মানুষের প্রসংশা চায়, মানুষের আলোচনার বিষয়বস্তু হতে চায়, মানুষ তাদেরকে অনুসরণ করুক এটাই তাদের কাম্য। এর নেপথ্যের কারণ হতে পারে বাস্তব জীবনে তাদের কোনো সহমর্মী বন্ধু নেই। যে দম্পতি একে অপরের সঙ্গের মাঝেই আনন্দ খুঁজে পান তাদের অন্য মানুষের প্রসংশা কুড়ানোর প্রয়োজন হয় না।

জীবনকে উপভোগ করা

নিজেদের সংসার নিয়ে তৃপ্ত একটি দম্পতি কোথাও বেড়াতে গেলে সেই ভ্রমণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব কমই দেখা যায়। বেড়ানো মাঝে তারা ছবি দেন না বললেই চলে। বরং ভ্রমণ থেকে ফিরে এসে কিংবা কয়েক মাস পরে হাতে গোনা কিছু ছবি হয়ত দেখা যেতে পারে। অনেকেই ছবিই তোলেন না আর তুললেও খুব কম। এর কারণ হল তারা দুজনার সঙ্গ আর যেখানে বেড়াতে গেছেন সেখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করতেই বেশি মনযোগ দেন। সেটা মানুষকেও দেখানোর প্রয়োজন তারা অনুভব করেন না।  

তাদের সম্পর্কে নিরাপত্তাহীনতা নেই

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জীবন যেন জীবনটা কে কতটা উপভোগ করছে তার প্রতিযোগিতা। গতকালকের থেকে আজ আরও বেশি ভালো আছি, উন্নতি করছি সেটা যেন মানুষকে বোঝাতেই হবে। আর এভাবেই তারা নিজেদের জীবনে চরম নিরাপত্তাহীনতা মুখোমুখি হন প্রতিনিয়ত। অন্যের জীবনের উন্নতি দেখে আমরা খুশি না হয়ে বরং আমার কেনো হলো না সেই হতাশায় আরও নিমজ্জিত হই। ফলে নিজের জীবনের অর্জনগুলো মূল্যহীন হয়ে ওঠে, নিজের যা আছে তা তুচ্ছ মনে হয়, আরও ভালো কিছুর আকাঙ্ক্ষা বাড়তে থাকে। আর যারা নিজেদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট তারা সেই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি নির্ভরশীলতা নেই

একটি সুখী দম্পতির সুখের চাবিকাঠি হল পরস্পরের প্রতি সততা। তারা নিজের ওপর নির্ভরশীল, নিজেদের সুখ নিজেরাই তৈরি করেন। অন্যের মূল্যায়নের তারা ধার ধারেন না, লোকের কথায় কান দেন না। আর একারণেই তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা নিজেদের জীবনকে তুলে ধরেন না।

আরও পড়ুন