হরমোনের কারণে মেদ বাড়ার ইঙ্গিত

মিষ্টি খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা হরমোনের ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2021, 09:41 AM
Updated : 23 Feb 2021, 09:41 AM

সঠিক উপায় ও মাত্রায় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আর শরীরচর্চা করেও কিছু মানুষ মেদ ঝরাতে পারেন না। আর এমন পরিস্থিতির নেপথ্যের কারণ হয়ত হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।

হরমোনের কারণে মেদ বাড়ছে এমনটা বোঝার কিছু উপায় তুলে ধরা হল স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।  

হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে পেটে মেদ বাড়লে তাকে চিকিৎসকরা ‘হরমোন বেলি’ বলেও আখ্যায়িত করেন। শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া, মানসিক অবস্থা, ক্ষুধা, যৌন ক্ষমতা ইত্যাদিসহ আরও অসংখ্য শারীরিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে হরমোন। এর ভারসাম্য নষ্ট হলে কিংবা কোনো হরমোনের ঘাটতি দেখা দিলে এই শারীরিক কার্যক্রমগুলোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

থাইরয়েড গ্রন্থির সক্রিয়তা কমে যাওয়া, রজঃবন্ধ, পরিবেশগত বিভিন্ন পরিবর্তন, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, যা থেকে বাড়তে পারে পেটের মেদ।

খাওয়ার পরও তৃপ্তি না পাওয়া

পর্যাপ্ত খাবার খাওয়ার পরও যেন পেট ভরেনি- এমন অনুভূতি যদি হয় তবে বুঝতে হবে যৌন সম্পর্কের সঙ্গে জড়িতে হরমোন আপনার বিপাকক্রিয়ার বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে।

‘ইস্ট্রোজেন’ এমনই একটি যৌন হরমোন, যার ভারসাম্যহীনতার কারণে খাওয়ার পরও ক্ষুধার অনুভূতি রয়ে যায়। এই ‘ইস্ট্রোজেন’ হরমোন শরীরের ‘লেপ্টিন’য়ের মাত্রা বাড়ায়। শরীরে ‘লেপ্টিন’ যত বেশি হবে, ততই সমস্যা বাড়বে।

‘টেসটোস্টেরন’য়ের মাত্রা বাড়লে আবার ‘লেপ্টিন’ কমে আসে। এই ‘লেপ্টিন’ দেহের ওজন ও শক্তির ভারসাম্য ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

মানসিক চাপ

মানসিকভাবে চাপে থাকলে শরীরের ‘অ্যাড্রেনাল’ গ্রন্থি নিঃসরণ করতে থাকে ‘কর্টিসল’ নামক হরমোন, যা মানসিক চাপ সামলাতে শরীরকে সাহায্য করে। তবে আপনি যদি দিনের বেশিরভাগ সময়ই মানসিক চাপে থাকেন, সেক্ষেত্রে একসময় শরীরে ‘কর্টিসল’য়ের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেড়ে যাবে। ‘কর্টিসল’ বেড়ে গেলে বাড়বে হৃদস্পন্দনের গতি, রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা এবং পেটের চর্বি।

শুধু পেটেই চর্বি বাড়ছে

রজঃবন্ধ শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন আনে। এই সময়ে ‘ইস্ট্রোজেন’য়ের মাত্রা যখন কমে যায় তখন ওজন বেশি বেড়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে এসময় পেট, উরু, নিতম্ব আর কোমরে মেদ জমে বেশি।

মিষ্টি কিছু খাওয়া তীব্র ইচ্ছা

অবিরাম মিষ্টি কিছু খাওয়া ইচ্ছা হতে থাকলে বুঝতে হবে আপনার শরীর লড়াই করছে ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’য়ের বিরুদ্ধে। অর্থাৎ আপনার শরীর রক্ত থেকে চিনি বা শর্করা শোষণ করতে পারছে না, আর সেকারণেই আপনার কোষের ‘কার্বোহাইডেট’য়ের চাহিদা বাড়ছে। অপরদিকে একই কারণে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে ‘লেপ্টিন’য়ের মাত্রার ওপর। ‘লেপ্টিন’ ও ‘ইনসুলিন’ দুইয়ের মাত্রা কমে যাওয়া ফলাফল হল প্রচণ্ড মিষ্টি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। এমননি খাওয়া শুরু করলে শেষ করা কষ্ট হয়ে যায়। আর এভাবেই পেটের মেদ বাড়তে থাকে।

আরও পড়ুন