শরীরচর্চার প্রাথমিক পর্যায়ের ভুল প্রত্যাশা

ব্যায়ামাগারে ভর্তি হয়েই দ্রুত ফল পাওয়ার আশা করা ভুল।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2021, 04:32 PM
Updated : 1 Feb 2021, 04:32 PM

ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন ব্যায়াম করতে হবে। হয়ে গেলেন ব্যায়ামাগারের সদস্য। প্রথম দিন থেকেই সুঠাম দেহের স্বপ্ন নিয়ে শরীরের ওপর অতিরিক্ত ধকল দিলেন। কিন্তু একসময়ে দেখলেন তেমন কিছুই পরিবর্তন হয়নি। এভাবেই সৃষ্টি হতে থাকে হতাশা, একসময় ব্যায়ামাগারে যাওয়ার আর সময় হয়না।

নতুন ব্যায়ামাগারে যোগ দেওয়া সিংহভাগ মানুষের সঙ্গে এই কথাগুলো মিলে যাবে। ভাবছেন ভুল কোথায় হল?

শরীরচর্চা-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল সেই ব্যাপারেই। 

শুরুতেই ভারোত্তলন: ব্যায়ামাগার শুনলেই মানুষের চোখে ভাসে বিশাল যন্ত্রে ভারি ওজন নিয়ে বিভিন্নভাবে ব্যায়াম করতে থাকা পেশিবহুল মানুষ। ফলে ভর্তি হয়ে আপনার মন পড়ে থাকে একপাশে সাজিয়ে রাখা ‘ডাম্বেল’গুলোর দিকে। আর আপনি যখন সামান্য বুকডন কিংবা দড়িলাফ দিচ্ছেন তখন আশপাশের পেশিবহুল সদস্যরা  ভারোত্তলন নিয়ে প্রতিযোগিতা করছে। তা দেখে যেন জেদ চেপে বসে। একদিন প্রশিক্ষকের দেওয়া রুটিন ছেড়ে আপনি ডাম্বেল ধরেই ফেলেন। ওজন তুললেই আপনার দুদিনের মধ্যেই যেন আপনার বিশাল পেশি হবে।

ভুলটা এখানেই। শরীরচর্চা শুরুর প্রাথমিক দিনগুলোতে আপনাকে ‘কার্ডিও’, ‘ফ্রি হ্যান্ড’ ইত্যাদি ব্যায়াম করে আগে শরীরের ভিত্তি গড়তে হবে। আর ওজন নিয়ে ব্যায়াম করার সঠিক পদ্ধতি ‘পশ্চার’ না জানলে শুধু ভারোত্তলন কোনো উপকারে আসবে না, বরং আঘাত পেতে পারেন।

ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে: ব্যায়ামাগারে সকল সদস্যের একটা নির্দিষ্ট রুটিন আছে। সেই রুটিনের বাইরের বেশি ব্যায়াম করলেই দ্রুত শরীর গড়ে উঠবে এমনটা ভাবা আরেকটি ভুল ধারণা। এমনকি রুটিনের সবটুকু ব্যায়াম প্রথম দিন থেকে করতেও নিষেধ করেন অনেক প্রশিক্ষক। তাই যে রুটিন দেওয়া হয়েছে তা পুরোপুরি আয়ত্ত করতে হবে। যে সপ্তাহে পুরো রুটিন সহজেই শেষ করে ফেলতে পারবেন, তখন প্রশিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে রুটিন পরিবর্তন নিয়ে। এভাবেই ধাপে ধাপে শরীর গঠনের দিকে এগোতে হবে ক্রমান্বয়ে।

খাদ্যাভ্যাস আর ওজনের দিকে নজর না দেওয়া: শুধু ব্যায়াম করে ওজন নিয়ন্তণ কিংবা সুঠাম দেহ কোনোটাই পুরোপুরি পাওয়া সম্ভব নয়। ব্যায়ামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে প্রতিদিন। শুরুতে এই ভুলটা অনেকেই করেন। প্রচুর ব্যায়াম করেন ঠিক। কিন্তু যে খাদ্যাভ্যাসের কারণে আপনার ওজন বেড়েছে সেটাই পরিবর্তন করা হয় না। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিদিন কী খাচ্ছেন, কতটুকু ক্যালরি গ্রহন করছেন তার তালিকা রাখা জরুরি। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে আনার পরও সেই তালিকা চালিয়ে যেতে হবে। তাহলেই নিজের শারীরিক উন্নতির হিসেবটা করতে পারবেন। 

দ্রুত ফল আশা করা: ব্যায়ামাগারে ভর্তি হয়ে তা চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভবত সবচাইতে বড় কারণ এটাই। প্রথম সপ্তাহ থেকেই আপনি আশা করছেন আর মাত্র কদিন, তারপরই দেখা দেবে টগবগে পেশি। শরীর গঠন একটা দীর্ঘ অধ্যাবসায়, যেখানে আছে বিভিন্ন চড়াই উতরাই। শরীরের ধরন ভেদে নুন্যতম ব্যায়ামের ফলাফল দেখতে হলে কমপক্ষে তিন মাস ব্যায়াম চালিয়ে যেতে হবে নিয়মিত। তাই অবাস্তব স্বপ্ন না বুনে প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিন, সেই মাফিক কাজ করুন, মনবল রাখুন দৃঢ়।

আরও পড়ুন-