প্রাণিজ উৎস বাদে প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর উপায়

ডিম, মাছ ও মাংস ছাড়াও প্রোটিনের উৎস হতে পারে উদ্ভিজ্জ খাবার।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2021, 05:52 AM
Updated : 24 Jan 2021, 05:52 AM

বাঙালির পরিচয় মাছে ভাতে। তবে আজকাল মুরগির মাংসই বেশি খাওয়া হয়। দাম, রান্নার সুবিধা, সহজলভ্যতা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণ আছে এর পেছনে।

অপরদিকে মুরগির ডিম আরেকটি খাবার যা বাঙালির খাদ্যাভ্যাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

এছাড়াও গরু, খাসি, কবুতর, কোয়েল পাখি ইত্যাদির মাংসও আছে খাদ্যাভ্যাসে। তবে তা নিয়মিত নয়। অনেকের জন্যই সেগুলো শখ করে বিশেষ দিনগুলোতে খাওয়ার খাবার।

পুষ্টিগত বিবেচনায় মাংস থেকে প্রোটিন পাওয়াই থাকে মূল উদ্দেশ্য। যা মুরগির মাংস ও ডিম থেকে পূরণ করায় কোনো ক্ষতি নেই। তবে কিছু মানুষ আছেন যারা প্রাণিজ উৎসের খাবার বাদ দিতে চান।

আবার ‘বার্ড ফ্লু’য়ের আতঙ্ক থেকেও অনেকে মুরগির মাংস ও ডিম থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। কেউ হয়ত একেবারেই মাংস খাওয়া বাদ দিতে চান।

এখন প্রশ্ন হল, তাহলে প্রোটিনের চাহিদা মেটাবে কে?

খাদ্য ও ‍পুষ্টি বিষয়ক ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রোটিনের চাহিদা মেটানো উপায়।

প্রোটিন যতটুকু দরকার

চাহিদা মেটানোর আগে তো জানতে হবে চাহিদাটা কতটুকু। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন মানুষের শারীরিক ওজনের প্রতি কেজির বিপরীতে ০.৮ থেকে ০.১০ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন প্রতিদিন।

প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যে তুলনা করলে প্রোটিনের জন্য প্রাণিজ উৎসই আদর্শ। তবে যারা মাংস খান না তাদের কোনো উপায় নেই তা তো হতে পারে না।

‘সাপ্লিমেন্ট’ ছাড়াও আরও অসংখ্য উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস আছে।

উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রোটিন গ্রহণের সীমাবদ্ধতা হল তাতে সব ধরনের ‘অ্যামিনো অ্যাসিড’ পাওয়া যায় না। ফলে তা প্রোটিনের উৎস হিসেব পরিপূর্ণ হতে পারে না।

তবে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রোটিন গ্রহণের মাধ্যমে সেই সীমাবদ্ধতাও মোকাবেলা করা সম্ভব। 

কোন ফল ও সবজি খাবেন

প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার ফল ও সবজি খাওয়া প্রত্যেকের লক্ষ্য থাকা উচিত। প্রোটিনের উৎস হিসেবে ফল বেশ দুর্বল। তবে অনেক সবজিতে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন পাওয়া যায়।

পালংশাক, বক চই, মসুর ডাল ও শাক, ফুলকপি, মাশরুম, মটরশুঁটি, ভূট্টা, ব্রকলি ইত্যাদি তাদের মধ্যে অন্যতম। ফলের মধ্যে কলা, পেয়ারা, জাম, অ্যাভোকাডো ইত্যাদি থেকে প্রোটিন মিলবে।

বাদাম ও বীজ ধরনের খাবার

এই ধরনের খাবারে ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ মিলবে প্রচুর। পুষ্টিবিদরা বলেন, প্রতিদিন একমুঠ পরিমাণ বাদাম কিংবা বীজ-জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত সবার। এদের মধ্যে কয়েকটি প্রোটিনের উৎস হিসেব চমৎকার। যেমন ‘শিয়া সিড’ মাত্র দুই টেবিল-চামচ পরিমাণ খেলেই প্রায় চার গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যাবে। ‘হেম্প সিড’ও প্রায় একই পরিমাণ প্রোটিন সরবরাহ করতে পারে। এছাড়াও খেতে পারেন ‘ফ্লাক্সসিড’, কুমড়ার বীজ, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট ও চিনাবাদাম।

শষ্যজাতীয় খাবার

যব, ‘কিনোয়া’, বার্লি, গম ইত্যাদি শষ্যজাতীয় খাবারের মধ্যে আদর্শ প্রোটিনের উৎস। আবার চালও এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড সরবরাহ করে যা শরীরে গিয়ে প্রোটিন উৎপাদন করে।

যারা পুরোপুরি শাকাহারি তাদের জন্য ভিন্ন প্রোটিনের ‍উৎস হতে পারে ‘পিনাট বাটার’, ‘টোফু’, ‘স্পিরুলিনা’ ও ‘ইস্ট’।

মনে রাখতে হবে, যে ধরনের খাদ্যাভ্যাসেই অনুসরণ করা হোক না কেনো খাবারের ভিন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

একই খাবার দিনের পর দিন খেলে যতটুকু স্বাস্থ্যগত উপকার পাবেন, বিভিন্ন ধরনের খাবার খেলে সবসময়ই তার তুলনায় বেশি উপকার মিলবে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন