অতিরিক্ত কফি পানের প্রভাব

দিনে কতখানি কফি পান করলে ক্ষতির কারণ হতে পারে, সেটাও জানার বিষয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2021, 07:24 AM
Updated : 21 Jan 2021, 07:24 AM

বিশেষজ্ঞরা বলেন, “প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ সপ্তাহের ২৮ কাপ পর্যন্ত কফি পান করতে পারেন নিশ্চিন্তে। যা দিনে প্রায় ৪ কাপ কফি। তবে এর বেশি পান করলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব দেখা দিতে পারে।”

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিয়েন্স’য়ে অবস্থিত ‘জন অকশনার হার্ট অ্যান্ড ভাস্কুলার ইন্সটিটিউট’য়ের ৪০ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে দিনে চার কাপের বেশি কফি খাওয়ার কারণে অংশগ্রহণকারীদের শরীরের বিভিন্ন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।”

দিনে চার কাপ কফি কারও কাছে অনেক বেশি আবার কারও কাছে নস্যি। যারা দিনে ৩২ আউন্সের বেশি কফি পান করেন কিংবা রেস্তোরাঁয় গিয়ে চিনি মেশানো ‘লাতে’ পান করেন, তাদের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নিয়ে সচেতন হতে হবে। কারণ অতিরিক্ত কফি ডেকে আনতে পারে অকাল মৃত্যুও।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল অতিরিক্ত কফি পানের ক্ষতিকর প্রভাব টের পাওয়ার উপায় সম্পর্কে।

মানসিক অস্থিরতা: আট আউন্স পরিমাপের কফিতে থাকে প্রায় ৯৫ মি.লি. গ্রাম ‘ক্যাফেইন’। চার কাপের বেশি কফি পান করলে দিনে ৫০০ মি.লি. গ্রামের বেশি ‘ক্যাফেইন’ গ্রহণ করা হবে।

‘জার্নাল অফ সাইকোফার্মাকোলজি’য়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এত উচ্চমাত্রায় ‘ক্যাফেইন’ গ্রহণ করলে মানসিক চাপ, অস্থিরতা, হতাশা সবই বাড়বে। সপ্তাহে ১ হাজার মি.লি. গ্রামের বেশি কফি পান করা হলে তা মানসিক অস্থিরতা বাড়াবে মারাত্মক পর্যায়ে।”

ঘুমের সমস্যা: ঘুমের স্বাভাবিক নিয়মে ব্যাঘাত ঘটাবে অতিরিক্ত কফি পানের অভ্যাস। বিশেষ করে দুপুরের আলসেমি কাটানোর একমাত্র উপায় যদি হয় কড়া কফি।

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস’য়ে অবস্থিত ‘কলেজ অফ হলি ক্রস’য়ের ১৯৭ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে হওয়া এক গবেষণায় দেখা যায়, অনেকেরই খুব ভোরে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে এবং সারাদিন শরীরে আলসেমি থাকছে।

তাই কফির নানান স্বাস্থ্যগত উপকারিতা থাকলেও তা গ্রহণের মাত্রার সীমাবদ্ধতা বজায় রাখা এবং কফি সকালে পান করাই শ্রেয়।

হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে যাওয়া:  ‘জামা ইন্টারনাল মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত ব্রাজিলের গবেষকদের করা গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, এক থেকে পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে ১০০ মি.লি. গ্রাম কফি গ্রহণের পর অংশগ্রহণকারীদের হৃদস্পন্দনের গতিতে কোনো পরিবর্তন পাওয়া যায়নি।

তবে এরও বেশি মাত্রায় কফি পান করলে হৃদস্পন্দনের স্বাভাবিক গতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

শরীরে কাঁপুনি: অতিরিক্ত কফি পান করেছেন এমনটা বোঝার নিশ্চিত উপায় হল কফি শেষ করার পর হাত কিংবা পুরো শরীরে কাঁপুনি অনুভব করা। সেই সঙ্গে দেখা দিতে পারে মাথাব্যথা, ঘুমের সমস্যা এবং হৃদস্পন্দন প্রচণ্ড বেড়ে যাওয়া। এই অবস্থায় তৎক্ষণাত কফি পান বন্ধ করতে হবে। বেশি অস্বস্তি অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অবসাদ: অবসাদ বা আলসেমি কাটাতে যে কফির সাহায্য নিচ্ছেন, অতিরিক্ত পান করলে সেই কফিই আপনার অবসাদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে প্রতি কাপ কফিতে চিনি মেশালে অবসাদ দ্রুত ঘিরে ধরবে। কারণ কফি সাময়িক সময়ের জন্য শরীর চাঙা করে ঠিক। তবে অতিরিক্ত পান করলে তা শরীরের ওপর যে প্রচণ্ড ধকল দেবে সেটাই অবসাদ সৃষ্টি করে। অপরদিকে ওই অবসাদগ্রস্ত অবস্থায় চাইলে ঘুমাতেও পারবেন না, আর সেটারও কারণ ওই কফি।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন