চল্লিশের পরে যেসব পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন

কথায় বলে, জীবন শুরু হয় চল্লিশের পরে। তবে এই বয়সে শরীর ঠিক রাখতে চাই প্রয়োজনীয় পুষ্টি।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2020, 08:43 AM
Updated : 17 Nov 2020, 08:43 AM

খাদ্য ও পুষ্টি-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে চল্লিশের পরে খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে জানানো হল।

বি-১২: লোহিত রক্ত কণিকা ও মস্তিষ্ক শুষ্ক রাখতে ভিটামিন বি ১২ জুরুরি। যা দুধের তৈরি খাবার, মুরগি, মাছ ও ডিমে পাওয়া যায়। আর যারা নিরামিষভোজি তাদের পরিপূরক খাবার ভিটামিন ট্যাবলেট হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।

বয়স্কদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি শোষণকারী অ্যাসিড তৈরি হয় না। ভিটামিন বি-১২’য়ের স্বল্পতা হতাশা ও মানসিক অশান্তি সৃষ্টি করে।

ভিটামিন ডি: হাড়ের জন্য ভিটামিন ডি জরুরি। হাড়ের ভর নিয়ন্ত্রণ করতে এস্ট্রোজেন উপকারী। তাই মেনোপোজের পর নারীদের হার অপেক্ষাকৃত ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, ভিটামিন ডি’য়ের মাত্রা কমে যাওয়া ক্যান্সার, হাঁপানি, ডায়াবেটিস  ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। খাবারে ভিটামিন ডি পাওয়া কঠিন। তাই আলাদাভাবে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা ভালো হবে।

ক্যালসিয়াম: বেশ কিছু জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন। খাবারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা না হলে হাড় থেকে এর ঘটতি পূরণ করা হয়। ফলে হাড় দুর্বল হওয়া শুরু করে। ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়স্ক নারীদের জন্য দৈনিক ১ হাজার মি.গ্রা এবং পুরুষদের জন্য ১২শ’ মি.গ্রা. ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন। পঞ্চাশোর্ধ নারীরা খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার, যেমন-কাঠ-বাদাম, কমলা, মটর, কপি ও পালং শাক যুক্ত করলে উপকার পাবেন।

অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম (পরিপূরক বা ট্যাবলেট আকারে) গ্রহণ করলে ধমনীর প্রাচীরে জমা হতে পারে এমনকি বৃক্কে পাথর সৃষ্টি করে। তাই খাবারের মাধ্যমে যতটা সম্ভব ক্যালসিয়াম গ্রহণের চেষ্টা করা উচিত।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: ‘ফ্রি রেডিকেল’ কোষের কার্যকলাপের উপজাত হিসেবে সৃষ্টি হয়। এছাড়াও, এটা খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ, ধূমপান, প্রদাহ ও দূষিত বাতাসের সংস্পর্শে যাওয়ার কারণে হতে পারে। এটা ত্বকের ক্ষতি করে এবং দেহে বয়সের ছাপ ফেলে। এছাড়াও, হৃদরোগ, ক্যান্সার ও অন্যান্য রোগ সৃষ্টিতেও অবদান রাখে।

এই ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।

মাল্টিভিটামিন: যারা স্বাস্থ্যকর খাবার (ফলমূল, সবজি, শস্য ও স্বাস্থ্যকর চর্বি) খান তাদের জন্য মাল্টিভিটামিন সামান্য উপকার করে। তবে, যারা স্বাস্থ্যকর খাবার খান না তাদের খাবারে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা প্রয়োজন।

চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন (এ, ডি, ই, কে)গুলোর উপকারিতা দেহে সঞ্চিত থাকে। এবং বি কমপ্লেক্সের বাড়তি অংশ দেহ থেকে বের হয়ে যায়।

ওমেগা-থ্রি: তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ওমেগা-থ্রি হল- ইপিএ, ডিএইচএ এবং এএলএ। ইপিএ এবং ডিএইচএ পাওয়া যায় মাছ থেকে। এএলএ পাওয়া যায় উদ্ভিজ্জ খাবার যেমন- আখরোট, তিসির বীজ ও চিয়া বীজ থেকে।

ওমেগা-থ্রি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। ইউরোপের এক ক্লিনিকের করা পরীক্ষা থেকে জানা যায় যে, মাছের তেলও এক্ষেত্রে কার্যকর। মাছের তেলে ইপিএ ও ডিএইচএ থাকে। এছাড়াও শৈবালের তেলেও ডিএইএ পাওয়া যায়। তাই যারা মাছ খান না তারা এটা বেছে নিতে পারেন।

* যেকোনো ধরনের ওষুধ ও ভিটামিন ট্যাবলেট গ্রহণ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আরও পড়ুন