শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতির মতো মানুষের মনও অনেক সময় নির্জীব ও উদাসীন লাগে। অনেকেরই এই সময় আলসেমি, কাজে অনিহা, মনোযোগের ঘাটতি দেখা দেয়।
ইংরেজিতে যাকে বলে ‘উইনটার ব্লুজ’। চিকিৎসা-বিজ্ঞানের ভাষায় ‘সিজোনাল এফেক্টিভ ডিজঅর্ডার (এসএডি) বা স্যাড।’
এর সঠিক কারণ সম্পর্কে জানা না গেলেও আমেরিকার সাইক্রিয়াটিক অ্যাসোসিয়েশনের মতে, এটা ঋতু পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকতে পারে, শীতের সময়ে সূর্যালোকের সঙ্গে যোগাযোগ কম হওয়ার কারণে মস্তিষ্কে রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়।
মানসিক স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে শীত মৌসুমে মানসিক অবস্থার পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে জানানো হল।
পর্যাপ্ত আলো: এই ধরনের বিষণ্নতা সৃষ্টি হওয়ার মূল কারণ হল সূর্যালোকের ঘাটতি। শীতকালে সুর্যালোক কম থাকায় এই ধরনের অনুভূতির সৃষ্টি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন কয়েক মিনিট রোদে যাওয়া ইতিবাচক ফলাফল রাখবে।
লাইট থেরাপি বক্স: যদি বাইরে যাওয়ার সুযোগ না থাকে তাহলে ঘরে ‘লাইট থেরাপি’ ব্যবহার করতে পারেন।
‘থেরাপি বক্স’য়ের আলো সাধারণ বাল্বের তুলনায় বেশি উজ্জ্বল হয় এবং কার্যকর।
শীতকালে বিষণ্ন লাগলে এই লাইট বক্স থেরাপি ব্যবহার করতে পারেন। এটা শরীরকে প্রাণবন্ত রাখবে এবং অনিদ্রা সৃষ্টিকারী মেলাটোনিনের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে।
ঘুম চক্র: কম সূর্যালোক মানুষের মন, মেজাজের পাশাপাশি শরীরের ওপরে প্রভাব রাখে। ফলে আলসেমি ও অনিদ্রা দেখা দেয়।
নিরবিচ্ছিন্ন ও সঠিক ঘুম চক্র মস্তিষ্ক ও শরীরকে প্রাণবন্ত রাখতে সহায়তা করে। তাই পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
ক্যাফেইন গ্রহণে সতর্ক থাকুন। ঘরের ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় শরীরচর্চা করুন। এতে ঘুম চক্র উন্নত হবে।
যোগ ব্যায়াম করা: শারীরিক পরিশ্রমের জন্য যোগ ব্যায়াম করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, মন ভালো রাখতে যোগ ব্যায়াম ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
যোগ ব্যায়াম মানসিক ও শারীরিক চাপ কমায় এবং হতাশা দূর করতে সহায়তা করে।
পরিবার ও সজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা: পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটানো হতাশা কাটিতে উঠতে সহায়তা করে। তাই পরিবর্তিত আবহাওয়ায় বিষণ্নভাব কাটাতে পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করুন। ভালো সময় কাটান।
সকলের সঙ্গে ভিডিও কল, ফোন বা অনলাইন আড্ডায় অংশ নিতে পারেন। এতে মন ভালো থাকবে ও সময়ও ভালো কাটবে।
এসেনশিয়াল তেলের ঘ্রাণ: এই ধরনের তেলের ঘ্রাণ প্রাকৃতিকভাবে মন ও শরীর ভালো রাখতে সহায়তা করে।
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, এসেনশিয়াল তেলের ঘ্রাণ আবেগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মস্তিষ্ককের অংশকে উদ্দীপিত করে।
পুদিনার তেলের ঘ্রাণ মন ভালো রাখতে সহায়তা করে ও দুর্বলতা কমায়। ল্যাভেন্ডার তেল ঘুম ভালো করে এবং কমলার তেল মানসিক উদ্বেগ কমায়।
এই ধরনের তেল কয়েক ফোঁটা ব্যবহারেই সারা ঘরে সুগন্ধ ছড়িয়ে আরাম অনুভূত হয়।
আরও পড়ুন