যেভাবে বুঝবেন সহকর্মীরা আপনাকে অপছন্দ করে

অফিসের প্রতিটি মানুষই যে আপনাকে পছন্দ করবে এমনটা না হওয়াই স্বাভাবিক।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Oct 2020, 05:36 AM
Updated : 15 Oct 2020, 05:36 AM

কোন মানুষগুলো আপনাকে পছন্দ করে না, কেনো করে না সেই বিষয়গুলো জানার ইচ্ছা জাগবে, তবে সরাসরি প্রশ্ন করাও তো সম্ভব নয়।

এই অবস্থায় সহকর্মীদের আচরণ থেকেই বুঝে নিতে পারেন কারা আপনার সঙ্গে মিশতে নারাজ।

জীবনযাত্রা-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো তেমন কিছু ইঙ্গিত সম্পর্কে।

আপনার মনে হচ্ছে সহকর্মীরা আপনাকে অপছন্দ করে

এমনটা মনে হওয়া আপনার মনের ভুল যেমন হতে পারে আবার তা সত্যিও হতে পারে। তফাৎ বোঝার উপায় হল অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে তাদের আচরণ আর আপনার সঙ্গে আচরণ যদি ভিন্ন হয়, তবে আপনার ধারণা সত্যি হওয়া সম্ভাবনাই বেশি। তবে শুধু এটুকুই যথেষ্ট নয়, তাই আর ইঙ্গিতের জন্য চোখ কান খোলা রাখা উচিত।

আপনি আশপাশে থাকলে সবাই কঠিন চেহারায় থাকে

কর্মক্ষেত্রে একজন কিংবা একদল সহকর্মীর খারাপ সময় যেতেই পারে, তা কর্মজীবনেরই অংশ। তবে হাস্যোজ্জ্বল কিছু সহকর্মী যদি আপনার উপস্থিতি টের পেয়ে হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যায়, থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়, তবে বুঝতে হবে তার কারণটা আপনিই।

চোখে চোখ মেলায় না

যাকে মানুষ সম্মান করে না কিংবা পছন্দ করে না, তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় মানুষ চোখে চোখ রাখে না। তাই আপনার সহকর্মীরা যদি আপনার সঙ্গে কথা বলার সময় চোখে চোখ না মেলায় তবে সেটাও হতে পারে অপছন্দের ইঙ্গিত।

এমনটা করার সম্ভাব্য কারণ হল, মানুষের ধারণা হয় তাদের চোখের ভাষায় আপনার প্রতি তাদের ঘৃণা প্রকাশ পেয়ে যাবে। তাই চোখের ভাষা লুকিয়ে রাখার জন্যই তারা চোখে চোখ না মেলানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করেন।  

এড়িয়ে চলা

আপনি লিফটের অপেক্ষায় থাকলে সহকর্মীরা যদি সিঁড়ি বেছে নেয়, আপনি দুপুরের খাবার শেষ করা পর্যন্ত তারা খাবার খেতে বসে না এসব আপনাকে এড়িয়ে চলার শক্ত উপসর্গ। আর এড়িয়ে যাওয়ার মানেই হল তারা আপনার সঙ্গে মিশতে চায় না।

গুজব ছড়ানো

ছেলেমানুষির পরিচয় দেওয়া হলেও কর্মক্ষেত্রে গুজব ছড়ানোর বিষয়টা খুবই সাধারণ ঘটনা। কেউ আপনাকে পছন্দ করে না, তাই সে আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক গুজব ছড়ায়।

আপনার উপস্থিতি টের না পাওয়া অভিনয়

অফিসে সব সহকর্মীদের মধ্যেই দিনের শুরুতে কুশল বিনিময়, দিন শেষে বিদায় নেওয়া হয়। কিন্তু আপনার সঙ্গে তা কেউ যদি না করে তবে ওই ব্যক্তি আপনাকে পছন্দ করে না সেটা বুঝে নেওয়া ভুল হবে না।

অল্প কথায় সেরে ফেলা

আপনার আলাপ জমানোর চেষ্টাকে যদি সহকর্মীরা অল্প কথায় থামিয়ে দেয়, আলোচনা এগিয়ে নিতে না চায় তবে বোঝাই যায় তারা আপনার সঙ্গে আলাপে আগ্রহী নয়। কোনো প্রয়োজনে আপনার কাছে এসে যদি কেউ সরাসরি কাজের আলাপ শুরু করে এবং তা শেষ হওয়ার পরপরই আলাপ শেষ হয়ে যায়, সেখান থেকেও বোঝা যায় আপনার সঙ্গে প্রয়োজনের বাইরে কথা বলতে তারা নারাজ। সবকিছুই ইঙ্গিত করে আপনাকে তাদের পছন্দ না।

অঙ্গভঙ্গি

সহকর্মীদের মধ্যে আপনার প্রতি আন্তরিক অঙ্গভঙ্গি দেখতে না পাওয়াও উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। যেমন, আপনার কোনো প্রশ্নে তাদের বিরক্তিতে চোখ ঘোরানো, কথা বলার সময় দুই হাত বুকের ওপর ভাঁজ করে রাখা, আপনি তাদের সামনে যাওয়ার পরও তাদের কাজ থেকে মনোযোগ না সরানো ইত্যাদি হবে অঙ্গভঙ্গিতে আন্তরিকতার অভাব।

দাওয়াত না দেওয়া

আপনার বিভাগের কর্মীরা বাইরে কোথাও আড্ডায় যাওয়া পরিকল্পনা করছেন কিন্তু আপনাকে দাওয়াত করছে না। আপনাকে তারা পছন্দ করে না- এথেকে পরিষ্কার বোঝা যায়।

সরাসরি কথা না বলা

আপনি আশপাশে থাকলেও কেউ যদি আপনার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ইমেইল, টেক্সট ইত্যাদি মাধ্যম বেছে নেয় এবং ইচ্ছাকৃতভাবে সরাসরি কথাবার্তা এড়িয়ে যায় তবে তার মানে হল সে আপনাকে পছন্দ করছে না।

মতবিরোধ

আপনার মতামতকে গুরুত্ব না দেওয়া, কথা বলার সুযোগ না দেওয়া, আপনার মতের বিরুদ্ধে সবার একত্রিত হওয়া ইত্যাদি পরিষ্কার বলে দেয় ওই মানুষগুলোর পছন্দের পাত্র আপনি নন। 

ব্যক্তিবিষয় নিয়ে কথা না বলা

যদি লক্ষ্য করেন সহকর্মীরা নিজেদের মধ্যে শখ বা সন্তানদের নিয়ে আলাপ করছে, কিন্তু এই ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে কোনো সময় আপনার সঙ্গে আলাপ করে না, তবে ধরে নিতে পারেন আপনার সম্পর্কে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই।

সহকর্মীদের কৌতুকে আপনার স্থান নেই

প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই বিভিন্ন বিষয়ে কৌতুক হয়, হাসাহাসি হয়, আড্ডা হয়। সেই আড্ডায় বা হাসাহাসিতে যদি কখনই আপনাকে অন্তর্ভুক্ত না করা হয়, তবে তারা আপনাকে পছন্দ করে না।

কৃতিত্ব কেড়ে নেওয়া

আপনার মতকে গুরুত্ব দেয় না কিন্তু আপনার অভিনব মতামতকে পুঁজি করে নিজে কৃতিত্ব নিলে সে যে আপনাকে পছন্দ করে না তা ধরে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। সমপদস্থ সহকর্মী যদি আপনার ওপর কতৃত্বের ছড়ি ঘোরাতে চায়, তাতেও বুঝে নিতে হয় সে আপনাকে পছন্দ করছে না। 

এছাড়াও অফিসের গালগল্পে আপনাকে অংশ নেওয়ার সুযোগ না দেওয়া, আপনার প্রতি বিনা কারণে আস্থাহীনতা, আপনার সঙ্গে সবসময় রক্ষণশীল মনভাব নিয়ে কথা বলা, আপনার কাজ এবং সুবিধা-অসুবিধাগুলো কখনই বিবেচনা না করা ইত্যাদি সবই হল আপনাকে অপছন্দ করার নিশ্চিত ইঙ্গিত।

আরও পড়ুন