সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ার উপায়

কর্মক্ষেত্রে সুস্থ মানসিক অবস্থা ধরে রাখতে হলে সেখানেও প্রতিটি কর্মীর বন্ধু থাকা জরুরি।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2020, 07:59 AM
Updated : 13 Oct 2020, 07:59 AM

আর সেই বন্ধু হবেন আপনার সহকর্মীরাই। সপ্তাহের পাঁচ থেকে ছয় দিন লম্বা সময় কাটবে সহকর্মীদের সঙ্গে, তাই তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সচেষ্ট হতে হবে।

তাতে কাজের পরিবেশ উন্নত হবে, কাজের চাপ সহনীয় হবে, কর্মক্ষেত্রে আপনার ‘নেটওয়ার্ক’ বিস্তৃত হবে যা ভবিষ্যতে ‘ক্যারিয়ার গ্রোথ’য়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

তবে কর্মক্ষেত্রের এই বন্ধুত্ব আপনার ব্যক্তিগত জীবনের বন্ধুত্ব থেকে কিছুটা ভিন্ন।

তাই অফিসের বাইরে তাদের সঙ্গে বন্ধু হিসেবে মিশতে শুরু করার আগে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

জীবনযাপন-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনের জানানো হল সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে।

সীমাবদ্ধতা বজায় রাখতে হবে: কর্মক্ষেত্রে আপনার ‘ম্যানেজার’ হয়ত বন্ধুসুলভ আচরণ করেন সবার সঙ্গেই। তাই বলে ওই ব্যক্তি যে আপনার উর্ধ্বতন কর্তা সেকথা ভুলে গেলে চলবে না। তাই তার সঙ্গে সবকথাই আপনি মন খুলে আলোচনা করতে পারবেন না। আবার যে বিষয়েই আলোচনা করা হোক না কেনো তার প্রাপ্য সম্মান সবসময় বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি নিজের সম্মানটাও বজায় রাখতে হবে। মোদ্দাকথা হল কর্মক্ষেত্রের বন্ধুত্ব সবসময়ই কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবে। আর নিজের ভালোর কথা ভেবেই সেই সীমাবদ্ধতাগুলো মেনে চলতে হবে।

বন্ধু নির্বাচনে বাছবিচার: শিক্ষাজীবনে কিছু সহপাঠীর সঙ্গে মন মানসিকতার মিল ছিল। তাই তাদের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। আবার কার সঙ্গে মনের মিল হয়নি, তাদের সঙ্গে একেবারেই মেশেননি। তবে কর্মক্ষেত্রে কারও সঙ্গে একেবারেই মিশবেন না সেটা হওয়া সম্ভব নয়, পছন্দ হোক বা না হোক সবার সঙ্গে একটা ভদ্রস্থ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

আবার অন্য সহকর্মীরা আপনার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাবে সেই অপেক্ষায় থাকা চলবে না। বরং নিজে থেকেই সবার সঙ্গে মেশার চেষ্টা করতে হবে। অন্যথায় অন্য সহকর্মীরা আপনাকে অসামাজিক মনে করতে পারে। আপনাকে ঘৃণার চোখেও দেখতে পারে। তাই নিজ থেকেই আলাপ শুরু করতে হবে।

পরিস্থিতির প্রতি সহনশীল হতে হবে: কর্মক্ষেত্রে সমাজের ভিন্ন স্তরের মানুষ থাকবে, তাদের মন মানসিকতা, পছন্দ-অপছন্দ ভিন্ন হবে। তাই সহকর্মীদের নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করা আগে, অফিসের বাইরে আড্ডায় বসার আগে সবাই সময় দিতে নাও পারতে পারে। সেই ব্যাপারগুলোকে আপনার বিবেচনা করতে হবে এবং সেভাবেই পরিকল্পনা সাজাতে হবে, তাদের সুবিধা অসুবিধা দেখতে হবে।

নিজের অবস্থান গড়ে তোলা: সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়ানো আগে কর্মক্ষেত্রে নিজের অবস্থান শক্ত করতে হবে। নিজেকে নিষ্ঠাবান কর্মী হিসেবে তুলে ধরতে হবে। বন্ধুত্ব বাড়ানোর জন্য আপনি হয়ত ভাবতে পারেন বাড়িতে কিংবা রেস্তোরাঁয় দাওয়াত করার কথা। তবে তার আগে যাদের দাওয়াত করছেন সেই সহকর্মীদের সঙ্গে কিছুটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকতে হবে এবং কর্মক্ষেত্রে একটা স্থিতিশীল অবস্থানে যেতে হবে। অন্যথায় সহকর্মীদের কাছে আপনি ছোট হয়ে যেতে পারেন।  

নিজস্ব ব্যক্তিত্বের উপস্থাপন: নতুন অফিসের নতুন পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিতে গিয়ে নিজেকেই বদলে ফেলে সবার সঙ্গে মানিয়ে চলার ইচ্ছা তৈরি হতে পারে। তবে তা করা যাবে না।

আপনি যেমন না তেমনটা জোর করে মানুষের সামনে ফুটিয়ে তোলা এক ধরনের অভিনয়ের সমতুল্য, যা স্থায়ী তো হবেই না, বরং একসময় যখন আপনার প্রকৃত মানসিকতা বেরিয়ে আসবে তখন সহকর্মীরা আপনাকে ঘৃণা করতে পারে।

তাই নিজের প্রকৃত ব্যক্তিত্ব তুলে ধরুন। নিজের অভিমত প্রকাশ করুন সুযোগ থাকলে। তবেই কেবল নিজের মতো মন মানসিকতার মানুষদের খুঁজে পাবেন। অফিসে দারুণ কিছু বন্ধু তৈরি হবে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন