প্রেমে বিচ্ছেদের পূর্বাভাস

সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার লক্ষণগুলো প্রায় সব ক্ষেত্রেই একইরকম।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2020, 11:20 AM
Updated : 10 Oct 2020, 11:20 AM

সম্পর্ক প্রেমের হোক কিংবা বৈবাহিক, তার যন্ত্রণা মনকে দুমড়ে মুচড়ে দেয়। যদিও ঘটনাটি কখনই কাম্য নয়।

তারপরও অনেক সময় সঙ্গীর আচরণে বিচ্ছেদের পূর্বাভাস দেখা যায়।

সম্পর্কবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে তুলে ধরা হলো এমন কিছু ইঙ্গিত।

আকর্ষণটা আগের মতো নেই: আপনার প্রতি সঙ্গী আকর্ষণটা যদি কমে যায়, তবে আগেকার মতো তার সব কথা আপনাকে জানানো সে কমিয়ে দিতে পারে। নিজের মধ্যকার আলাপচারিতায় দূরত্ব অনুভব করতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মানসিক-বিশেষজ্ঞ কিয়া জেমস বলেন, “সঙ্গী যখন তাদের দৈনন্দিন জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো জানানো কমিয়ে দিতে শুরু করে তখন থেকে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা কমতে থাকে। এই ভাগাভাগি যত কমতে থাকবে, নিজেদের মধ্যকার দূরত্বের দেয়াল ততই বাড়তে থাকবে।”

এই অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে জেমস বলেন, “সবকিছু ঠিক আছে মনে করে নেওয়া ঠিক হবে না। বরং নিজের অনুভূতির কথা সঙ্গীকে জানাতে হবে। বদলে যাওয়া আগে সে সুন্দর সম্পর্কটা ছিল সেটা যে আপনি ‘মিস’ করেন সেটা জানাতে হবে। তাকে এটাও জানাতে পারেন যে সম্পর্কটাকে পুনরুদ্ধার করতে আপনি সচেষ্টা।” 

ভবিষ্যত ভাবনায় অনিহা: সম্পর্কের শুরুতে হয়ত আপনার সঙ্গী ভবিষ্যত পরিকল্পনায় আগ্রহী ছিল। কিন্তু আজকাল কেমন যেন এড়িয়ে যায় বা যেতে চায়। এমনটা যদি ঘটে তবে ধরে নিতে পারেন শিগগিরই সম্পর্কের ইতি ঘটতে যাচ্ছে।  

যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত সাংসারিক পরামর্শদাতা ও মনবিজ্ঞানী ক্রিস্টেল ওভারস্ট্রিট বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে ধারণাকে সত্যি মনে করার আগে সঙ্গী সঙ্গে আলোচনায় যাওয়া উচিত। এমনও হতে পারে সঙ্গীকে অন্য কোনো ঘটনা পিছু হটতে বাধ্য করছে। কিংবা হয়ত সঙ্গী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে ভয় পাচ্ছে। দুজনের ভাবনার মধ্যে মেলবন্ধন থাকা জরুরি।”

বিয়ে করতে অনিহা: যুক্তরাষ্ট্রের ‘ম্যাচমেইকার’ স্টেফানি স্যাফ্রান বলেন, “সঙ্গী যদি বিয়ে করতে আগ্রহ না দেখায় তবে সে কী বলতে চায় তা ভালোভাবে বুঝতে হবে।”

“আপনাদের অনেক বছরের প্রেম, পরিবারও রাজি তার মানে এই নয় যে বিয়ে হবেই হবে। হতে পারে আপনার সঙ্গীই হয়ত স্থায়ী কোনো সম্পর্কে জড়াতে চায় না। আপনি বিয়ে করতে চান আর সঙ্গী সবকিছু অনুকূলে থাকার পরও বিয়েতে আগ্রহী না হলে তার জন্য অপেক্ষা করে কোনো পরিবর্তন আসবে না। তাই ভবিষ্যত চিন্তা করে এখনই সেই সম্পর্কে ইতি টানা মঙ্গল।”

আপনাকে সময় দেওয়াকে যদি কাজ মনে করে: সম্পর্কের শুরুতে প্রতিটি যুগল একে অপরের সঙ্গে অনেক বেশি সময় পার করে। তবে সম্পর্কের বয়স বাড়ায় সঙ্গে তাল রেখে সেই সময় কমতে থাকে। আর সেটা অস্বাভাবিক নয়।

তবে আপনার সঙ্গে সময় কাটানোটাকে সঙ্গী যদি কাজ মনে করে তবে সেটা অস্বাভাবিক।

মার্কিন মনোবিজ্ঞানি জুলি উইলিয়ামসন বলেন, “যুগলবন্দি হওয়ার পরও দুজন মানুষের ব্যক্তিগত কিছু সময় প্রয়োজন হয়। তা নিজের জন্য কিংবা পরিবার, বন্ধুমহলের জন্য। তবে আপনার সঙ্গে যে সময়টুকু সে ব্যয় করছে সেটা তার কাছেও বিশেষ মুহূর্ত হওয়া উচিত। আর দশজনের সঙ্গে যেমন দেখা হয়, কথা হয়, আপনাকেও যদি সে তেমনি একজন ধরে নেয় তবে তা আর যাই হোক সুস্থ সম্পর্ক নয়।”

তিনি আরও বলেন, “একটি সম্পর্কে দুজনেরই উচিত দুজনকে সমান মূল্যায়ন করা। তাহলেই পরস্পরের প্রতি ভরসা তৈরি হবে। আর তা যদি না হয় তবে সে সম্পর্কের ভবিষ্যত অনিশ্চিত।”

নিজের সন্দেহকে প্রশ্রয় দিন: সম্পর্কে সন্দেহপ্রবণতা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। তবে কাউকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করাও অনুচিত।

মনোবিজ্ঞানী টনি কোলম্যান বলেন, “আপনার যদি মনে হয় আপনাদের সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন এসেছে যা স্বাভাবিক নয় এবং তা কেনো হয়েছে তা আপনি বুঝতে পারছেন না, তবে সেই সন্দেহগুলোকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত।”

“সঙ্গীর কথা কম বলা, রেগে যাওয়া, দূরত্ব তৈরি করা ইত্যাদি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছালে তার সঙ্গে সরাসরি আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। এমন করার অর্থ হলো আপনার সঙ্গী রক্ষণশীল হয়ে উঠেছে, আপনার সঙ্গে আলোচনায় আগের মতো স্বচ্ছন্দ বোধ করছে না। যার কারণ হতে পারে আপনার অনুভূতি তার কাছে মূল্য হারিয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সম্পর্কের ইতি ঘটার সম্ভাবনাই বেশি।”

আরও পড়ুন