কর্মীদের প্রেরণা বাড়ানোর উপায়

ঘরে থেকে কাজ করার অনুপ্রেরণা যোগাতে নেওয়া যেতে পারে ভিন্ন কিছু কৌশল।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2020, 07:18 AM
Updated : 12 August 2020, 07:18 AM

লকডাউন শিথিল হলেও এখনও অনেকেই ঘরে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। আর বেশিরভাগ সময়ে ঘরে বসে কাজ করার জন্য কর্মীদের মধ্যে নানান ধরনের সীমাবদ্ধতাও কাজ করে।

সৃজনশীলতা যে শুধু শিল্পীদের মাঝেই থাকে তা কিন্তু নয়, অফিসের কর্মীদের মাঝেও তা আছে।

তবে সবার সৃজনশীলতা, সৃষ্টিশীলতার মাত্রা যে এক হবে সেটা ভেবে নেওয়া ভুল। একটি দলের প্রতিটি সদস্যের মাঝেই থাকে বিশেষ কিছু মেধা।

একজন কর্মকর্তা হিসেবে কীভাবে কাজে লাগাবেন এই মেধার ভাণ্ডার?

মানসিক স্বাস্থ্য-বিষয়ক এক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তেমনই কয়েকটি উপায় তুলে ধরেছে। জানানো হলো বিস্তারিত সেই প্রতিবেদনের আলোকে। 

কর্মঘণ্টা নির্ধারণে কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা

চাকরি বলতেই আমরা বুঝি আট ঘণ্টার বাধা ধরা রুটিন। এই কড়া রুটিনে কর্মীদের কাজের উদ্যম কমায়, সঙ্গে চাকরির প্রতি সন্তুষ্টি কমায়। তবে কর্মঘণ্টায় শিথিলতা থাকলে, কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনার সুযোগ করে দিলে তারা আরও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবে। পাশাপাশি তা কর্মীদের কাজে আর সৃষ্টিশীল হতে অনুপ্রেরণা যোগাবে। আর সময় নিয়ে কর্মীদের দুশ্চিন্তা কমানো গেলে তারা সৃষ্টিশীল কাজে আরও মনযোগ দিতে পারবে।

বিরতি নেওয়া সুযোগ দেওয়া

কর্মীদের দক্ষতা ও কাজের প্রতি সন্তুষ্টি বাড়াতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখে কাজের ফাঁকে ছোট বিরতি। একজন কর্মীর মেধাকে অবহেলা করা উচিত নয়। কাজের চাপ থেকে সামান্য বিরতি পেলে একজন নিষ্ঠাবান কর্মী তার কাজ কীভাবে আরও পটু হাতে সম্পন্ন করা যায় সেটা নিয়ে চিন্তা করবে। আর একজন কর্মকর্তা হিসেবে সেই সুযোগও আপনাকে তৈরি করে দিতে হবে। তাই বেঁধে দেওয়া সময়ের মাঝে কাজ শেষ করা চাপ না দিয়ে প্রয়োজনে একটু সময় নিয়ে হলেও নির্ভুল কাজের প্রতি বেশি জোর দিতে হবে।

কর্মীদের উদ্ভাবনী শক্তির মূল্যায়ন

পেশাগত জীবনের একটি ক্ষতিকর দিক হল সেখানে সচরাচর নতুন পদ্ধতিকে, উদ্ভাবনী ধারণাকে সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না। একটি কাজ একাধিক পদ্ধতিতে করা যেতে পারে। তাই গতবাঁধা পদ্ধতির বাইরে কেউ যদি নতুন কোনো পদ্ধতি বের করতে পারেন তবে কর্মকর্তাদের উচিত সেটা উড়িয়ে না দিয়ে তার কার্যকারীতা বিচার করা।

এজন্য ভালো হোক কিংবা খারাপ কর্মীদের মতামত শোনা জরুরি। এমন পরিবেশ তৈরি করতে পারলে কর্মীরাও নতুন পদ্ধতি খুজে বের করতে উৎসাহ পাবে।

বুদ্ধিদীপ্ত আলোচনা

একজন মানুষের পক্ষে সকল বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখা কখনই সম্ভব নয়। আমিই সব জানি, আর আমার জানাটাই সঠিক - এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

কর্মকর্তারা চাইলেই কর্মীদের দিকে নতুন কিছু ‘আইডিয়া’ ছুড়ে দিতে পারেন, বলতে পারেন আপনাদের কী মনে হয়, কেমন হয় এমনটা করলে। এতে কর্মীরা বুঝবে কর্মকর্তা তাদের মতামতের মূল্য দেন। ফলে তারাও বিষয়টা নিয়ে ভাববে তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে। এভাবেই দশের অভিজ্ঞতা মিলে বেরিয়ে আসতে পারে যুগান্তকারী কোনো ‘আইডিয়া’, যা সবাইকেই লাভবান করবে। 

দলবদ্ধ মানসিকতা গড়ে তোলা

কাজ করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের নতুনতম কর্মীর মাথায়ও একটা বুদ্ধি খেলে যেতে পারে। সেই বুদ্ধি সে যদি নিজের কাছেই রেখে দেয় তবে সেটাকে ঘষে মেজে যুগান্তকারী কিছু তৈরি করার সুযোগ হারালেন। তাই কর্মক্ষেত্রে দলবদ্ধ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।

কর্মী যেন শুধুই বেতনের জন্য কাজ না করে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের স্বার্থেও কাজ করে এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি নতুন কোনো ‘আইডিয়া’ বের হওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের সবাইকে কাজটাকে নিবিঢ়ভাবে বুঝতে হবে।

তবে কর্মী যদি ফাইলের চাপেই আটকে থাকে তাহলে সেটা সম্ভব হবে না। তাই শুধু কাজ করা নয়, কাজটা গবেষণা করার সুযোগ আর পরিবেশ দুটোই তাদের দিতে হবে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন