পালস অক্সিমিটার যেভাবে কাজ করে

করোনাভাইরাসের এই সময়ে ‘পালস অক্সিমিটার’ নামক যন্ত্রটির জনপ্রিয়তা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2020, 05:49 PM
Updated : 23 June 2020, 05:49 PM

গ্লাভস, মাস্ক, পিপিই, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, ব্লিচিং পাউডার, সামাজিক দূরত্ব- ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে এই মহামারীর সময়ে পরিচিত হতে হচ্ছে।

এরমধ্যে ‘পালস অক্সিমিটার’ নামক যন্ত্রটির কথাও কানে গেছে প্রায় সবার।

এই যন্ত্রটির কাজ, ব্যবহার পদ্ধতি, কার্যকারিতা ইত্যাদি বিষয়ে জানানো হলো স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিতি প্রতিবেদনের আলোকে।

‘পালস অক্সিমিটার’য়ের কাজ হল রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ও হৃদস্পন্দনের গতি নির্ণয় করা।

হাতের আঙুলে ‘ক্লিপ’য়ের সাহায্যে লাগানো হয় যন্ত্রটি এবং করোনাভাইরাস আসার আগে তার ব্যবহারকারীরা ছিলেন শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত মানুষগুলো। তবে বর্তমানে তা ব্যবহার হচ্ছে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে কি-না সেদিকে নজর রাখার জন্য, যা করোনাভাইরাসের প্রভাবে হয়ে থাকে।

‘অ্যাসিম্টোম্যাটিক’ কোভিড-১৯ রোগী হলেন তারাই যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিন্তু কোনো উপসর্গই তারা অনুভব করছেন না। ফলে রোগী কিছু বোঝার আগেই তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা মারাত্বক হারে কমে যায়।

পালস অক্সিমিটা’য়ের পরিমাপ অনুযায়ী, রক্তে অক্সিজেনের স্বাভাবিক মাত্রা হল ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ। আর সেই মাত্রা ৯২ শতাংশের নিচে নামলেই তাকে অস্বাভাবিক বিবেচনা করা হয় এবং সেসময় চাই তাৎক্ষণিক চিকিৎসা ব্যবস্থা।

অক্সিজেনের মাত্রা এতটা কমে গেলে রোগী শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া উচিত। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা ধীরে ধীরে অক্সিজেন হ্রাস পাওয়া সঙ্গে মানিয়ে নিতে থাকে।

সিদ্ধান্তহীনতা কিংবা প্রচণ্ড উত্তেজনা বা আনন্দ অনুভব করা হতে পারে এই পরিস্থিতির বাহ্যিক লক্ষণ। আর এখানেই কাজে আসে ‘পালস অক্সিমিটার’।

ব্যবহারবিধি ও কার্যপ্রণালী

সাধারণত হাতের আঙুলে যন্ত্রটি বসানো হলেও, পায়ের আঙুল কিংবা কানের লতিতেও তা বসানো যায়। আলোর সাহায্যে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা নির্ণয় করে যন্ত্রটি।

‘ক্লিপ’ দিয়ে বসানো যন্ত্রটির এক অংশ শরীরের রক্তের ভেতর দিয়ে আলো ছড়ায় যা অপর অংশ আবার গ্রহণ করে। রক্তে ভেতর দিয়ে আলো চলাচলের সময় তার কতটুকু রক্তে শোষিত হয়েছে সেটার পরিমাপ হিসাব করে নির্ণয় হয় রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা।

যাদের দরকার

হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি শ্বাসতন্ত্রের জটিলতায় যারা ভুগছেন তাদের এই যন্ত্র থাকা উচিত। কোনো সম্ভাব্য করোনাভাইরাস রোগী আশপাশে যারা গিয়েছেন তারা যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারেন। আবার যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি ফুসফুস কিংবা হৃদরোগ আছে তাদের কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তাই এই মানুষগুলোরও উচিত রক্তে অক্সিজেনের মাত্রার দিকে নজর রাখা।

অস্বাভাবিক অবসাদ কিংবা জ্বর হলে যন্ত্রটি ব্যবহার করে অক্সিজেন মেপে নিতে দোষ নেই। আর যারা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন তাদের যন্ত্রটি নিয়মিত ব্যবহার করা উচিত।

মনে রাখতে হবে

রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা আশঙ্কাজনক নয় বলেই যে আপনি সুস্থ তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়না। তাই ‘পালস অক্সিমিটার’য়ের ‘রিডিং’ ভালো বলেই যে চিকিৎসা নেবেন না এমনটা করা যাবে না।

আরও পড়ুন