কাজের দিন এবং ছুটির দিনের মধ্যে ঘুমের সময় ও পরিমাণ পার্থক্য বেশি হলে সমস্যা হতে পারে। যাকে বলে ‘সোশাল জেটল্যাগ।’
আর লকডাউনের কারণে মানুষের দিন কাটছে ঘরের মধ্যে শুয়ে বসে। বেড়েছে ঘুমানোর পরিমাণও। তবে লম্বা সময় বিছানায় কাটানোর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ঘুমের মান, বলছে গবেষণা।
সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ বাজেল’য়ের করা এক জরিপে অংশগ্রহণকারীরা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় লকডাউনে প্রায় ৫০ মিনিট বেশি ঘুমানোর কথা জানিয়েছেন। এর একটি বড় কারণ হল ঘরে বসে অফিসের কাজ করলেও সকালে অফিস যাওয়ার তাড়াহুড়া না থাকা।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানি ডা. ক্রিস্টিন ব্লুম বলেন, “যাতায়াত নেই, কাজের সময়সীমায় শিথিলতা এবং ঘুমের সময় বেশি পাওয়া- এসব কিছু মিলে দৈনন্দিন জীবনের চাপ কমেছে। তবে তার সঙ্গে মিল থেকে ঘুমের মান বাড়েনি। বরং যাদের নিয়ে এই পরিসংখ্যান করা হয়েছে তাদের কথা অনুযায়ী ঘুমের মানের আরও অবনতি হয়েছে।”
ব্লুম ব্যাখ্যা করেন, “এই পরিস্থিতি আসলে অবাক করেনি আমাদের। আর্থসামাজিক পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য ঝুঁকি, সন্তান প্রতিপালন ইত্যাদি বিভিন্ন দুশ্চিন্তা ঘুমের মান কমে যাওয়া অন্যতম কারণ।”
তিনি আরও বলেন, “অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ ঘরে বসে অফিসের কাজ করছেন এই সময়ে। গড় হিসেবে অংশগ্রহণকারীরা ভালোই ঘুমিয়েছেন আর তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই নারী। সামাজিক জীবনে চিরাচরিত তালে শিথিলতা আসায় তাদের সামাজিক কারণে হওয়া মানসিক চাপ কমেছে। এথেকে বোঝা যায়, অংশগ্রহণকারীদের ঘুম ও জেগে থাকার সময় নিয়ন্ত্রণ করেছে তাদের অভ্যন্তরীন জৈবিক সংকেত, সামাজিক নিয়ম নয়।”
আধুনিক জীবনযাত্রার কারণে বিভিন্ন ধরনের ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। অবিরাম সক্রিয় থাকা, কিছু না কিছু করার চাপই এখানে মুখ্য বিষয়।
কাজের নিয়মের ওপর নির্ভরশীলতা, অবসর কাটানো ইত্যাদির চক্র অনেকসময় শরীরের স্বাভাবিক চক্রের সঙ্গে মেলেনা। তবে ঘুমের নিয়ম একেক দিন একেক রকম হলে কিংবা কাজের দিন আর ছুটি দিনের মধ্যে লম্বা সময়ের ব্যবধান থাকলেও অবসাদগ্রস্ততা বাড়ে।
সমস্যার সমাধান হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে।
আরও পড়ুন