এই মহামারীর সময়ে নিরাপত্তার স্বার্থে অনেকেই বাসা থেকে অফিসের কাজ করছেন। প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বাসায় বসে কাজ করার ক্ষেত্রে তেমন কোন সমস্যায় পড়তে না হলেও কাজের ক্ষেত্রে নিজেকে বিশেষভাবে সক্রিয় রাখা বেশ জরুরি।
আবার সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন কিনা সেই বিষয়টাও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে রাখার দরকার রয়েছে।
এই দুই বিষয় সামলানোর কয়েকটি উপায় জানানো হল জীবনযাপন-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।
ভিডিও কল: বাসায় থেকে কাজ করার ক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে সবসময় ভিডিও কলে আসা সম্ভব হয় না। ফোন কল বা অডিও কল করেই ছোট-খাটো কাজের হালনাগাদ তথ্য নেওয়া যায়।
তবে গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের ক্ষেত্রে ভিডিও কলে এসে প্রয়োজনীয় কথা সেরে নেওয়া শ্রেয়। দীর্ঘদিন ধরে বাসা থেকে কাজ করলে নিয়মিত বিরতিতে ভিডিও কলে আসা অত্যন্ত জরুরি।
সবার মধ্যে কাজ ভাগ করে দেওয়া: দলগতভাবে কাজ করার সময় দলের অন্যান্য সদস্যদের কাজের তালিকা তৈরি করে কাজ ভাগ করে তা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করলে সার্বিকভাবে সুফল বয়ে আনে। দলে কার দায়িত্বে কী কাজ তা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে পারলে সবাই নিজ নিজ কাজের ব্যাপারে পুরোপুরি অবগত থাকতে পারেন এবং ঘরে বসে কাজ করেও প্রতিষ্ঠানের জন্য সুফল বয়ে আনা যায়।
অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে মিটিংয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া: প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য বিভাগ বা দলের সঙ্গে মিটিং আগের তুলনায় বেশি করাটাই ভালো। যদিও ঘন ঘন কিংবা অতিরিক্ত মিটিং করা কেউই পছন্দ করেন না। তবে বাসা থেকে কাজ করার ক্ষেত্রে বেশি বেশি মিটিং করাটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে।
নতুন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা, পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য জানা, অন্যান্য বিভাগগুলোতে কী কী কাজ হচ্ছে সে ধারণা নেওয়া এবং সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের সবাইকে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সম্পর্কে অবগত রাখতেই তুলনামূলকভাবে বেশি মিটিং করা আবশ্যক।
কাজের প্রশংসা করা: মিটিংয়ে, ইমেইলে কিংবা গ্রুপ চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে নিজের বিভাগ বা দলের কাজের প্রশংসা করা জরুরি। কঠিন কোনো কাজ কীভাবে সম্পন্ন হল তা প্রশংসার মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিয়ে দলের সদস্যদের মাঝে কাজের স্পৃহা তৈরি হয়। এছাড়া নিজের দলের প্রশংসনীয় কাজ সবার সঙ্গে শেয়ার করার মাধ্যমে দলের এবং দলনেতা হিসেবে নিজের সফলতা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
সপ্তাহজুড়ে করা কাজের হালনাগাদ তথ্য পাঠানো: পুরো সপ্তাহে নিজের দলের সম্পন্ন হওয়া কিংবা চলমান কাজের হালনাগাদ তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ইমেইলের মাধ্যমে অবগত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহের যেকোনো একটি দিন যেমন- বৃহস্পতিবারে তা পাঠানো যেতে পারে।
প্রধান কর্মকর্তা বা তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক বজায় রাখা: ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক বজায় রাখাটা জরুরি। তাকে বোঝাতে হবে যে আপনি তার জন্য এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্ব বহন করেন, দলের অন্যান্যদের সঙ্গে মেলামেশা ও তাদের কাজের মূল্যায়ন আপনার জন্য ততটাই গুরুত্বপূর্ণ যতটা সুপারভাইজারসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য জরুরি।
বাড়তি কাজের দায়িত্ব নেওয়া: সুপারভাইজারের গুরুত্বপূর্ণ কোনো মিটিংয়ে আপনিও যে তার হয়ে উপস্থিত থাকতে পারেন তা তাকে বোঝানো ক্যারিয়ারের জন্য সুফল বয়ে আনে। সুপারভাইজারকে বোঝান যে, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিংয়ে উপস্থিত থেকে আপনিও প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রজেক্টের অংশ হতে পারেন। এতে করে সুপারভাইজারের কাজের চাপ কমবে এবং আপনার প্রতি তার সুদৃষ্টি বজায় থাকবে।
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া: প্রতি সপ্তাহে স্বপ্রণোদিত হয়ে যেকোনো একটি দিন সহকর্মীদের জিজ্ঞাসা করতে পারেন যে তাদের কোনো প্রয়োজনে আপনার সহযোগিতা লাগবে কিনা কিংবা কোনো তথ্য দিয়ে তাদের সাহায্য করা যায় কিনা। এতে করে সহকর্মীরা আপনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবে।
সীমাবদ্ধতা মাথায় রেখে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান: নিজ জ্ঞান ও সীমাবদ্ধতাকে মাথায় রেখে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্যদের কথা ও কাজে নিজের প্রতিক্রিয়া বা মতামত তুলে ধরুন। ভিডিও কলে মিটিং হোক কিংবা চ্যাট, যুক্তি দিয়ে আপনি আপনার মতামত উপস্থাপন করুন। এতে করে কেউ আপনাকে তুচ্ছ বা ছোট করে দেখার মনোভাব পোষণ করবে না।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন-