মাদকাসক্তির পেছনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব

ভালো দিকের পাশাপাশি খারাপ প্রভাবও রাখতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2020, 03:19 PM
Updated : 29 April 2020, 03:19 PM

আর খারাপ প্রভাবের অন্যতম হল মাদকাসক্তি। যাতে তরুণরাই প্রভাবিত হতে পারে বেশি।

প্রাপ্তবয়স্করা এই বিষয় নিয়ে এই মাধ্যমেগুলোতে আলোচনা করছেন, তা নির্মূল করার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একইভাবে সেবনকারীরাও মাদকের ব্যবহার নিয়ে নিজেদের গর্ব, বিশ্বাস, মাদক সেবনের অনুভূতি, নিজেদের এসব সেবনের পক্ষে যুক্তিও তুলে ধরছে।

মাতাল অবস্থায় তাদের বিভিন্ন কার্যকলাপের চিত্র সামাজিক মাধ্যমেগুলোতে উঠে আসে। এতে অন্যদের মাঝে মাদক সেবনের আকাঙ্ক্ষা কিংবা মাদক সেবনের অভিজ্ঞতা নেওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া আশঙ্কা বেশ প্রবল। 

‘জেএমআইআর পাবলিক হেলথ অ্যান্ড সার্ভেইল্যান্স’ শীর্ষক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, তরুণ প্রজন্ম মাদক সেবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে কেমন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করছে সেটা জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আর এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোরই উচিত তা বোঝার জোর চেষ্টা চালানো।

গবেষণার প্রধান গবেষক, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়া’র রবিন স্টিভেন্স বলেন, “তরুণরা প্রায়শই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাদক সেবন করে নিজেদের মানসিক চাপ, কষ্ট, আতঙ্ক ইত্যাদিকে ভুলে থাকার বিষয়টি প্রকাশ করে। সবার জীবনেই এই সমস্যাগুলো আছে, আর সেখানেই মাদক সেবনকারীদের এই যুক্তি অন্যান্য তরুণদের মাদকের প্রতি হাতছানি দেবে। তাদের মনে হবে মাদকের মধ্যেই হয়ত আমিও শান্তি পাব।”

গবেষকরা বলেন, “তরুণ প্রজন্মের মাদকাশক্তি এখনও একটি বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। আর মাদক সেবন সংক্রান্ত বিভিন্ন ‘কনটেন্ট’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো কিংবা সেগুলো দেখা একজন তরুণকে কীভাবে প্রভাবিত করে সে সম্পর্কে আমরা অনেকাংশেই অজ্ঞ।”

এই গবেষণার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ে তরুণদের ‘পোস্ট’ করা ২ কোটি ৩০ লাখ ‘টুইট’ পর্যালোচনা করেন গবেষকরা। জানার চেষ্টা করেন ‘পোস্ট’কারীরা মাদকদ্রব্যকে কোন দৃষ্টিতে দেখেন? তা সেবনের ক্ষেত্রে তাদের মতামত কী? তাদের মাদকাসক্ত হয়ে ওঠার পেছনে কি ধরনের কারণ আছে? এবং আসক্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা কতটুকু?

দেখা যায় এই ‘টুইট’গুলোতে মাদকদ্রব্য সেবন এবং মাদকাশক্তি সম্পর্কে নেতিবাচক কথা থাকে না বললেই চলে। এই তরুণ সমাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে মাদকদ্রব্য নিয়ে আলোচনায় কতটা সময় পার করে সেটারও ধারণা পাওয়া যায় এই গবেষণায়।

বিভিন্ন সাংকেতিক শব্দ, ‘হ্যাশট্যাগ’ খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা যার মাধ্যমে মাদকদ্রব্যে আগ্রহীদের সঙ্গে তরুণরা আলোচনা করে, মাদক সেবনে সমর্থন প্রকাশ করে।

স্টিভেন্স বলেন, “তরুণ প্রজন্মের আচরণ, মানসিক অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে। বিভিন্ন জনগোষ্ঠীতে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের এই তরুণ প্রজন্ম কোন সময়ে কী ভাবছে সে সম্পর্কে গভীর ধারণা থাকাটা মাদকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত জরুরি।”

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন