গৃহবন্দিত্বে বৈশাখী আমেজ

এইবারের বৈশাখে নেই কোন উৎসবের আমেজ , নেই কোন আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি।

তৃপ্তি গমেজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 April 2020, 05:55 AM
Updated : 14 April 2020, 08:05 AM

জাতীয় পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজন করা না হলেও বৈশাখকে বরণ করার ঘরোয়া পর্যায়ে ছোট খাট করে অনেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন।

কেউ রান্নায় বৈচিত্র্য এনে, কেউবা পরিবারের সদস্যদের জন্য ভিন্ন কিছু আয়োজন আর সাজগোজ করে পালন করছেন পহেলা বৈশাখ।

কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তাদের বর্ষ বরণের প্রস্তুতি সম্পর্কে। খুব একটা ঘটা করে না হলেও সবাই নিজেদেরকে এই মহামারীর আতঙ্ক থেকে খানিকটা দূরে রাখার জন্য চালিয়ে যাচ্ছেন ছোটখাট প্রচেষ্টা।

এসিসিএ’য়ের শেষ বর্ষের ছাত্রী অদ্বিতি জানান, “এইবার বৈশাখে বাইরে যাওয়া হবে না তাই ভাবছি বাসাতেই শাড়ি পরে সাজগোজ করবো, বিকালে  হয়ত একটু ছাদে যাব, ছবি তুলবো। মা বাসায় পান্তা ইলিশ করবেন, বৈশাখের আয়োজন বলতে আসলে এগুলোই।”

পরিবারকে সময় দেওয়াই এইবারের বৈশাখের অন্যতম আকর্ষণ। সবাই কম বেশি চেষ্টা করলেও অনেক ক্ষেত্রে কাটিয়ে উঠতে পারছেননা মহামারীর ত্রাস। তাছাড়া ঘরে থেকে একঘেয়ে ভাবটাও অনেকটা হালকা করার চেষ্টায় আছেন অনেকে।

গৃহীনি সাদিয়া রহমান আশা বলেন, “অন্যান্য বারের মতো এবার বৈশাখে আর বাইরে যাওয়া হবেনা, কেনাকাটাও করা হয় নি। তাই বলা যায়, আমেজ নেই খুব একটা। তবে বছরের প্রথম দিন একদম নিরামিষভাবে কাটাতেও ভালো লাগবে না। তাই বিশেষ কিছু রান্না করব। স্বামী সন্তানকে সময় দিব, একসঙ্গে টেলিভিশন দেখে সময় কাটাবো।”

একান্নবর্তী পরিবারগুলোতে অনুষ্ঠানের আমেজটা বরাবরই একটু ভিন্ন। কোয়ারেন্টিনের জন্য পারিবারের সবাই একসঙ্গে থেকে উৎসব পালন করবে এটাকেই অনেক বড় পাওয়া বলে মনে করছেন অনেকে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের মমতা গমেজ জানান, “আমার যৌথ পরিবার। একসঙ্গে অনেক মানুষ থাকি। কোনো আনন্দ উৎসব করতে গেলে খুব বেশি পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়না আমাদের। অন্যান্যবার বাড়ির ছেলে মেয়েরা এদিনে বাইরে যায়। এবার অনেকদিন ধরেই সবাই বাসায়, কেউই বের হচ্ছিনা আমরা। তাই সবাইকে নিয়ে একটা সুন্দর দিন কাটানোর চেষ্টা করবো।”

“বাড়ির অধিকাংশ মানুষই পৃথিবীর অবস্থা নিয়ে বেশ চিন্তিত ও আতঙ্কিত। তাই সবাইকে খানিকটা আনন্দ দিতে একটু ভালো মন্দ রান্না করা, সবাই একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া করা, সাজগোজ করা এসব করেই দিনটা কাটানোর চেষ্টা করবো। এই বছরে চাওয়া থাকবে একটাই- যেন পৃথিবীটা আমার আগের মতো হয়ে যায়। আমরা সবাই যেন আবার সেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারি।”

মহামারীর আতঙ্ক কম-বেশি সবার মাঝেই বিরাজ করছে। নিজের মনকে খানিকটা দুঃশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখতে ঘরোয়া পরিবেশে আনুষ্ঠানিকতা পালন করা ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসতেই পারে এই বৈশাখে।