দেশীয় রসনাবিলাসে এই খাবারগুলোর ব্যবহারও ব্যাপক। গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতে ঘি মাখিয়ে খাওয়া বাঙালির ঐতিহ্যের বাহক। রান্নায়ও এর ব্যবহার রয়েছে।
সকালের নাস্তায় রুটিতে মাখন মাখানো পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়। আর তেলছাড়া রান্নার কথা তো যেন ভাবাই যায়না। এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে এগুলোর মধ্যে কোনটি সবচাইতে স্বাস্থ্যকর?
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হল বিস্তারিত।
মাখন: ‘মিল্ক প্রোটিন’ ও ‘বাটার ফ্যাট’ হিসেবে মূলত ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ ব্যবহার করে তৈরি হয় মাখন। তেলে থাকা ‘পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট’য়ের সঙ্গে তুলনা করলে এই চর্বিগুলো হৃদযন্ত্র ও সার্বিক বিবেচনায় স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
মাখনের ২০ শতাংশ পানি, যা রান্নার সময় বাষ্প হয়ে যায়। তবে তেলের পুরোটাই চর্বি, যা কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়াই যা রান্না করা হচ্ছে তাতে শোষিত হয়ে যায়।
দুই থেকে তিন কাপ দুধের সর বা মালাই ব্যবহার করে ঘরেই মাখন বানিয়ে ফেলা যায়। এই মালাই সংগ্রহ করতে আট থেকে নয় দিন সময় লাগতে পারে। মালাই সংগ্রহ হয়ে গেলে তাতে আধা কাপ পানি ও আধা কাপ দুধ মিশিয়ে উচ্চ তাপমাত্রায় গরম করতে হবে পুরো মিশ্রণটিতে শক্তভাব আসা পর্যন্ত। এবার শক্ত অংশটুকু পানি থেকে আলাদা করে ঠাণ্ডা করে নিলে তৈরি হয়ে যাবে মাখন।
ঘি: মাখন উচ্চতাপে ফুটালে এবং দুধের অবশিষ্টাংশ সরিয়ে নিলে তৈরি হয় ঘি। দুধের অবশিষ্ট সরিয়ে নেওয়ায় অনেকটা চর্বি কমে যায়। মাখনের তুলনায় ঘিয়ে চর্বির মাত্রা অনেক কম। স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত ঘি কর্মশক্তি যোগাতে অত্যন্ত কার্যকর। তবে তা ব্যবহার করতে হবে অল্প পরিমাণে, যা যথেষ্ট। ঘিয়ে থাকা ‘বিউটেরিক অ্যাসিড’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে।
তেল: ‘পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট’য়ে ভরপুর থাকে তেল, যা শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে। তাই সামান্য পরিমাণে গ্রহন করাই শ্রেয়। বিভিন্ন ধরনের তেলের মধ্যে ‘অলিভ অয়েল’ বা জলপাইয়ের তেল তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর। তবে মনে রাখতে হবে উচ্চতাপে রান্নায় জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করা যাবে না। ঘি কিংবা মাখন ব্যবহার করতে পারেন।
জলপাইয়ের তেল উচ্চতাপে ‘অক্সিডাইজড’ হয়ে যায়। ডুবো তেলে ভাজার ক্ষেত্রে ‘রিফাইনড অয়েল’ ব্যবহার করতে পারেন, তবে অবশ্যই অল্প পরিমাণে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়তে মাখন, ঘি ও তেল ব্যবহারের অনুপাত হওয়া উচিত ২:২:১। অর্থাৎ প্রতিদিন যদি দুই টেবিল-চামচ পরিমাণ মাখন ও ঘি ব্যবহার করেন, তবে তেল ব্যবহার করতে হবে এক টেবিল-চামচ।
আরও পড়ুন