আক্রান্ত অথচ উপসর্গ দেখা দেয়নি, এমন ব্যক্তির মাধ্যমেও ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস।
Published : 05 Feb 2020, 06:27 PM
করোনাভাইরাস পুরো বিশ্বজুড়ে এখন এক আতঙ্কের নাম। এই আতঙ্কের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ধারণা হল- যারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত কিন্তু কোনো উপসর্গ বা রোগ দেখা দেয়নি তাদের মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কীনা?
যেসকল বিশেষজ্ঞ করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করছেন তাদের মনে এই প্রশ্ন উঁকি দিয়ে আসছে অনেকদিন থেকেই। আর তাদের এই ধারণা যদি সত্যি হয় তবে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা আরও জটিল হয়ে উঠবে।
‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এক গবেষণার বিবৃতিতে বলা হয়, সংক্রমণের উপসর্গ নেই এমন ব্যক্তিরাও করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য উৎস। আর এই ভাইরাস বিস্তার রোধের পরিকল্পনায় এই বিষয়ও বিবেচনায় আনা উচিত।
এই গবেষণায় জার্মানিতে হওয়া সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। যার সুত্রপাত হয় চীনের সাংহাই থেকে আসা এক পর্যটকের মাধ্যমে। এই পর্যটক জার্মানির ব্রাভিয়াতে ছিলেন চার দিন এবং সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। তার সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দেওয়া শুরু করে যখন তিনি চীনে ফেরত যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করেন।
গবেষকরা এই প্রতিবেদন দেখে স্বভাবতই আতঙ্কিত। কারণ করোনাভাইরাস বিস্তার রোধের ক্ষেত্রে নেওয়া পদক্ষেপগুলো এক্ষেত্রে অসম্ভব হয়ে যেতে পারে।
তবে সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলছে, ওই প্রতিবেদনের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ জেগেছে জার্মানির। দেশটির এক মুখপাত্র বলেন, “সাংহাই থেকে আসা ওই পর্যটকের স্বাস্থ্যপরীক্ষায় অনির্দিষ্ট কিছু উপসর্গ দেখা যায়। ব্রাভিয়ার স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষ ও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেনর, তার উপসর্গের মধ্যে ছিল পিঠব্যথা। এমনকি জ্বর কমানোয় ব্যবহৃত ‘অ্যান্টিপাইরেটিক’ ওষুধও সেবন করেন তিনি। এই ওষুধগুলো জ্বর কমানোর পাশাপাশি ব্যথা কমায় এবং প্রদাহনাশেও ব্যবহার করা হয়।”
বিশেষজ্ঞরা ওই প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এবং তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস’য়ের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশিয়াস ডিজিজ’য়ের পরিচালক ডা. অ্যান্থনি ফাউচি বলেন, “ওই প্রতিবেদন হয়ত মিথ্যা নয়, তবে নিশ্চিত হতে চাই বিস্তারিত গবেষণা। ধারণাটিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। তাই উপসর্গ দেখা দেয়নি এমন মানুষকেও স্বাস্থ্যপরীক্ষার আওতায় আনতে হবে।”
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন