ঋতুস্রাবে কতটা রক্ত ঝরে

মাসের বিশেষ দিনগুলোতে রজঃবন্ধ হয়নি এমন প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে ভুগতে হয় ঋতুস্রাবের যন্ত্রণাদায়ক অনুভুতিতে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2020, 10:52 AM
Updated : 19 Jan 2020, 12:54 PM

ব্যথা, রক্তপাত, খিঠখিটে মেজাজ, হরমোনের তারতাম্যজনীত অস্বস্তি ইত্যাদি নানান বাজে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাদের। স্বভাবতই তাদের মনে হতে পারে প্রতিমাসে অনেকটা রক্তক্ষরণ হয়ে যাচ্ছে নিয়মিত, তবে আসলে যতটা মনে হয় ততটা নয়।

স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটের প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হল ঋতুস্রাবের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে ঠিক কতটা রক্তক্ষরণ হয় নারীদের।

স্বাভাবিক রক্তক্ষরণ: পুরো ঋতুস্রাব চলাকালীন স্বাভাবিক রক্তক্ষরণের কারণে হারানো রক্তের পরিমাণ প্রায় ৩০ থেকে ৫০ মি.লি.লিটার, যা প্রায় দুই থেকে তিন টেবিল-চামচ। কিছু বিশেষজ্ঞের বিশ্বাস, ঋতুস্রাবের সময় একজন নারী প্রায় চার টেবিল-চামচ পরিমাণ রক্ত হারান। তবে ভুক্তভোগীরা হয়ত কঠোরভাবে এর বিরোধিতা করবেন কারণ, দেখে মনে হয় রক্তক্ষরণের মাত্রা তার চেয়ে অনেক বেশি।

এর কারণ হল ঋতুস্রাবের সময় স্ত্রী জননাঙ্গ থেকে নিঃসৃত তরল শুধু রক্ত নয়। এর সঙ্গে থাকে ‘ইউটেরাইন টিস্যু’, ‘এন্ডোমেট্রিয়াল সেলস’, জমাট বাঁধা রক্ত ইত্যাদি যা একত্রিত হয়ে পরিমাণ অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। আর একারণেই মনে হয় প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

হেভি পিরিয়ড: ‘হেভি পিরিয়ড’য়ের ব্যাখ্যা নারীভেদে ভিন্ন। একজনের ভারি ঋতুস্রাব হয়ত আরেকজনের জন্য স্বাভাবিক মাত্রা। ঋতুস্রাবের তরলের মাত্রা ৮০ মি.লি.লিটারের বেশি হলে তাকে ‘হেভি পিরিয়ড’ হিসেবে ধরা হয়। এছাড়াও সাতদিনের বেশি সময় উল্লেখযোগ্য হারে রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকলে তাকেও ‘হেভি পিরিয়ড’ বলা যাবে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সাধারণ কিছু কারণ হল ‘এন্ডোমেট্রিওসিস’, ‘কোয়াগুলেশন ডিজওর্ডার’, ‘ইউটেরাইন ফাইব্রোয়েডস’, ‘ইন্ট্রাইউটেরাইন ডিভাইস (আইইউডি), ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (পিসিওএস)’।

রক্তপাত পোশাক ভেদ করলে, ‘স্যানিটারি প্যাড’ প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর পরিবর্তন করতে হলে, জমাট বাঁধা রক্তের আকার এক ইঞ্চির বড় হলে কিংবা একসঙ্গে দুই ধরনের ‘স্যানিটারি প্যাড’ ব্যবহার করতে বাধ্য হলে সেটাও ‘হেভি পিরিয়ড’ হিসেবে ধরা হয়।

যাদের ধারণা তাদের ‘হেভি পিরিয়ড’ তাদের উচিত হবে ঋতুস্রাব চক্রের হিসাব রাখা। সেখানে থাকতে পারে মাসিক চলাকালীন কয়দিন রক্তপাত হয়, দিনে কতবার ‘স্যানিটারি প্যাড’ পরিবর্তন করতে হয় ইত্যাদি। ব্যথা হচ্ছে কি-না সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে এবং ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নিজের শরীরের অস্বাভাবিকতা শুধু নিজেরই টের পাওয়া সম্ভব। তাই শরীরের যেকোনো অস্বাভাবিক আচরণকেই অবহেলা করা উচিত হবে না।