কথা বলার জড়তা কাটাতে

অনেক মানুষের মাঝে কথা বলতে গিয়ে হাত ঘামে, গলা কাঁপে? রয়েছে সহজ সমাধান।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2019, 11:35 AM
Updated : 31 Dec 2019, 11:35 AM

মঞ্চে কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে অনেক মানুষের মাঝে কথা বলতে গিয়ে হাঁটু কাঁপতেই পারে। হাত ঘামা, বুক ধড়ফড়, গলা কাঁপা, কথা আটকে যাওয়া ইত্যাদিসহ আরও নানান অভিজ্ঞতার স্বাদ নিতে হয় প্রথমবার কয়েকবার। কারও আবার গলার আওয়াজ পাল্টে যায়। বিজ্ঞানও বলে এসময় শরীর বাড়তি চাপ অনুভব করে যার কারণে স্বরতন্ত্র প্রভাবিত হয়।

এই ধরনের পরিস্থিতিতে সচরাচর শ্বাস-প্রশ্বাস ও গলার স্বরে পরিবর্তন দেখা যায়। মানুষের শরীরের গঠনও এখানে অনেকটা দায়ী।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘ভোকাল ফোল্ডস’ নামক এক ধরনের ত্বক-কোষ আমাদের বায়ুনালী পরিবেষ্টিত রাখে। যার কাজ হল এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবিলা করা।

যেমন শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, বাতাসে চাপ, মানসিক চাপ এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে পানি নিয়ে নেওয়া থেকে সুরক্ষা দেয় এই ‘ভোকাল ফোল্ড’।

জনসমাগমে কিছু বলতে গিয়ে যখন প্রচণ্ড চাপ অনুভব করলে স্বরতন্ত্রী সক্রিয় হয়। ‘ফাইট অর ফ্লাইট রেসপন্স’ অর্থা ‘মার কিংবা মর’ এই ধরনের পরিস্থিতিতে স্বরতন্ত্রীর চারপাশের পেশি সঙ্কুচিত হয়ে, হয় খুলে যেতে কিংবা বন্ধ হতে চাপ প্রয়োগ করে। ফলে কথা বলা ও গলার স্বর প্রভাবিত হয়। যে কারণে কথা আটকে যায়, বলতে কষ্ট হয়, যা আরও মানসিক চাপ বাড়ায়।

এই কারণে শরীর কাঁপে, ঘামতে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘স্প্যাজমোডিক ডিসফোনিয়া’।

গলা কাঁপার কারণেও কথা বলায় সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে মানুষের আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং মানসিক অস্বস্তিজনীত সমস্যাগুলোও অনুভূত হতে শুরু করে। কারও ক্ষেত্রে এই সমস্যা অত্যন্ত গুরুতর হয়, কথা আটকে যেতে পারে প্রতিটি শব্দে। এই সমস্যাগুলো পুরোপুরি মানসিক নয়।

করণীয়

বিশেষজ্ঞরা এই সমস্যা এড়ানোর জন্য সহজ একটি অনুশীলন করার পরামর্শ দেন, যা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে।

অনুশীলনটি হল যে কোনো এক হাতের তর্জনী মুখের কয়েক ইঞ্চি দুরে ধরে রাখতে হবে। এবার একটি লম্বা দম টানতে হবে। দম যখন ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইবে তখন দম ছাড়ার সময় পাঁচ থেকে ১০ সেকেন্ড সময় ধরে ‘উহ হু’ শব্দটি করতে হবে।

সাধারণ সময় ছাড়াও জনসম্মুখে দাঁড়ানোর আগে তিন থেকে চার বার এই অনুশীলন করতে পারেন।

অনুশীলনটির বর্ণণা শুনতে খামখেয়ালি মনে হলেও এর মাধ্যমে স্বরতন্ত্রী খুলে যাবে। আর লম্বা শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে ‘ভোকাল ফোল্ড’ শিথিল হবে। কথার বলার জড়তা কমবে, বায়ু চলাচল সুগম হবে, কণ্ঠ হবে বলিষ্ঠ। কথা বলার সময় জড়তা দেখা দিলে সেখানেও লম্বা দম নেওয়া উপকারী হবে। এতে হৃদস্পন্দন মন্থর হবে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন