শীতে বাড়ে হাড়ের জোড়ের ব্যথা

শীতকালে ব্যথা বাড়ার কারণ ও তা থেকে মুক্তি পেতে করণীয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Dec 2019, 11:44 AM
Updated : 20 Dec 2019, 11:44 AM

বাত, প্রদাহ, আঘাত ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে হাড়ের জোড়ে ব্যথা হয়। ব্যথার পাশাপাশি আক্রান্ত স্থান ফুলে যাওয়া, নড়াচড়ায় অপারগতা ইত্যাদি যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে দেয়। তবে শীতে নতুন কিংবা পুরনো ব্যথা নতুন করে ফিরে আসা ভিন্ন এক যন্ত্রণা। বয়স্ক ব্যক্তিরা প্রায়শই এই ঋতুতে ব্যথায় কাতর থাকেন, বিশেষত, বাতের ব্যথায়। আর এই যন্ত্রণা মনগড়া নয়, আসলেই শীতল আবহাওয়া ব্যথার যন্ত্রণা তীব্রতর করে তোলে। কিন্তু প্রশ্ন হলো কেনো হয় এমনটা?

স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য অবলম্বনে জানানো হলো এমনটা হওয়ার কারণ সম্পর্কে।

কারণ:

শীতকালে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার নিশ্চিত কারণ সনাক্ত করা যায়নি, তবে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। কারও মতে, শীতে শরীর শারীরিক তাপ সঞ্চয় করতে শুরু করে এবং শরীরের মধ্যবর্তী অংশে থাকা অঙ্গগুলোতে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। ফলে হাত, পা, কাঁধ ও হাঁটুর জোড়গুলো শক্ত হয়ে যায়, দেখা দেয় ব্যথা ও অন্যান্য অস্বস্তি।

আরেকটি ধারণা হলো, শীতকালে পৃথিবীর অভ্যন্তরীন আবহাওয়ার চাপ বা ‘ব্যারোমেট্রিক প্রেশার’য়ে পরিবর্তন আসে, যা হাড়ের জোড়ে অস্বস্তি তৈরি করে। পাশাপাশি এই ঋতুতে আমাদের স্নায়ু স্বাভাবিকের চাইতে বেশি সংবেদনশীল হয়ে যায়, ফলে সামান্য ব্যথাও তীব্র যন্ত্রণা দেয়।

হাড়ের জোড়ের ব্যথা সামলানোর উপায়:

- ব্যথা এড়ানোর প্রথম ধাপ হবে শরীর উষ্ণ রাখা। ঘরের বাইরে যাওয়ার আগে পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরতে হবে। ঘরের ভেতরেও ঠান্ডা অনুভব করলে গরম কাপড় পরতে হবে।

- পানি পানের পরিমাণ শীতের দিনে অনেকটাই কমে যায়। এর কারণে শরীর পর্যাপ্ত পানি না পেলে পেশি ও হাড়ের জোড়ের ব্যথা দেখা দিতে পারে। সমাধানটা সমস্যার মাঝেই আছে, পর্যাপ্ত পানি পান নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে কুসুম গরম পানি পান করতে হবে।

- শরীরে ভিটামিন ডি’য়ের অভাব থাকলে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে। কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মেলে কম, ফলে ভিটামিন ডি’য়ের সর্বোত্তম উৎস রোদ থেকে মানুষ বঞ্চিত হয়। তাই ভিটামিন ডি’য়ের সরবরাহ নিশ্চিত করতে ‘সাপ্লিমেন্ট’ কিংবা ভোজ্য উৎসের দিকে মনযোগ বাড়াতে হবে।

- শরীরচর্চা সব ঋতুতেই জরুরি, তবে শীতকালে আলসেমির জয়ই হয় বেশি। হাড়ের জোড়ের ব্যথা তীব্রতর হলে তা সামলাতে উপকারী হবে হালকা শরীরচর্চা। মনে রাখতে হবে, যে জোড়ে ব্যথা হচ্ছে তার উপর অতিরিক্ত চাপ দেওয়া যাবে না। কম্বলের নিচে ঘাপটি মেরে দিন পার না করে স্বাভাবিক নড়াচড়ার মধ্যে থাকতে পারলেও ব্যথা নিয়ন্ত্রণে অনেকটা উপকার পাবেন।

ঘরোয়া এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করার পরও ব্যথা না কমলে ‘অর্থোপেডিস্ট’ কিংবা ‘ফিজিকাল থেরাপিস্ট’য়ের পরামর্শ নিতে হবে। ব্যথা সহ্য করে গেলে বা অবহেলা করলে পরিস্থিতি ক্রমেই গুরুতর রূপ নিতে পারে। আর এই জোড়ের ব্যথা হতে পারে বাত কিংবা অন্যান্য রোগের পূর্বাভাস, তাই সতর্ক থাকতে হবে।