বৃক্কে পাথর হওয়ার লক্ষণ

তলপেটে হঠাৎ তীব্র ব্যথা হওয়া বৃক্কে পাথর হওয়ার সাধারণ লক্ষণ। তবে এই ব্যথা অন্য কারণেও হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2019, 10:32 AM
Updated : 15 Dec 2019, 10:33 AM

পরিচিত কারও ‘কিডনি স্টোন’ বা বৃক্কে পাথর হয়ে থাকলে হয়ত জানেন এই রোগ কতটা যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। আকস্মিক হানা দেওয়া তীব্র যন্ত্রণাকে অনেক রোগী সন্তান প্রসবের যন্ত্রণা চাইতেও বেশি বলে দাবি করেন। তাই স্বভাবতই বৃক্কে পাথর হওয়ার উপসর্গ হল তলপেটে ব্যথা। তবে আরও অনেক শারীরিক জটিলতায় শরীরের এই অংশে ব্যথা হতে পারে, তাই ইঙ্গিত বুঝতে না পারা সাধারণ ঘটনা।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যের আলোকে জানানো হল বৃক্কে পাথর কীভাবে হয় এবং তার উপসর্গগুলো বোঝার উপায়গুলো কী।

বৃক্ক পাথর

বৃক্কে সৃষ্ট পাথর হল শরীরের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন খনিজ উপাদান ও লবণের সমষ্টি। সচরাচর এর প্রধান উপাদান হয় ক্যালশিয়াম, ইউরিক অ্যাসিড। সাধারণত পাথরগুলো হয় শক্ত। প্রস্রাবে কোনো নির্দিষ্ট খনিজের মাত্রা বেশি হলে বৃক্কে এই পাথরগুলো জমতে থাকে। আর এই জটিলতায় দুটি প্রধান কারণ হল পানিশূন্যতা ও অতিরিক্ত খাওয়া।

শরীরে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা না হলে প্রস্রাব ঘন হয়। যা থেকে বিশেষ কিছু খনিজের মাত্রা বেড়ে বৃক্কে পাথর হতে শুরু করে।

বৃক্কে সৃষ্ট এই পাথরগুলো আকার বিভিন্ন রকম হতে পারে। এমনকি মুত্রনালির অন্যান্য অংশেও এগুলো চলে যেতে পারে। অধিকাংশ সময় এই পাথরগুলো প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। তবে আকার বড় হয়ে গেলে মুত্রনালি দিয়ে বের হতে পারে না, আর তখনই অস্ত্রোপচার করতে হয়।

উপসর্গ

পেটে, পিঠে ও পাশে তীব্র ব্যথা: নারীদের ক্ষেত্রে বৃক্কে জমা পাথর সরু জরায়ু পথ দিয়ে বের হতে গিয়ে আটকে গেলে বৃক্কে চাপ বাড়তে থাকে। আর তখনই ব্যথা শুরু হয়। এসময় আক্রান্ত ব্যক্তি তার পিঠ, পাঁজরের নিচের অংশে, বুকের একপাশে ব্যথা অনুভব করবে। পাথর বেশি বড় হলে যেই স্থানে পাথরটি আটকাবে সেই স্থানটি ফুলে যেতে পারে।

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া: মূত্রত্যাগ করতে গিয়ে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া অনুভব করলে তার সম্ভাব্য কারণ হতে পারে বৃক্কের পাথর। মূত্রত্যাগের সময় ব্যথা তখনই হয় যখন বৃক্কে সৃষ্ট পাথর মুত্রনালী ও মুত্রথলির সংযোগস্থলে পৌঁছায়। ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই)’ বা মূত্রনালীতে সংক্রমণের কারণেও প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া হতে পারে।

প্রস্রাবের রং: প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত মিশে যাওয়া বৃক্কে পাথর হওয়ার আরেকটি লক্ষণ। প্রস্রাবের রং যদি লাল, গোলাপি কিংবা বাদামি হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রস্রাবের বাড়তি বেগ: বৃক্কের বড় পাথরগুলো মূত্রনালী আটকে দিলে প্রস্রাবের প্রবাহ ব্যহত হয়। এতে মূত্রথলি একবারে খালি হতে পারে না। তাই বারবার শৌচাগারে যাওয়ার তাগিদ অনুভূত হয়।

বিস্বাদ ও বমি: পেটে তীব্র ব্যথা হওয়ার পাশাপাশি বৃক্কে পাথর হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে বমিভাব ও বমি হওয়া বেশ সাধারণ বিষয়। সেই সঙ্গে থাকবে মুখে বিস্বাদভাব। এর কারণ হল বৃক্ক ও ‘গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট’ অর্থাৎ পাকস্থলি এবং অন্ত্রের স্নায়ু পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন