সম্পর্কের ইতি টানা যখন জরুরি

বৈবাহিক সম্পর্ক মানে সবসময় মনে প্রজাপতি উড়তে থাকবে এমন নয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2019, 06:03 AM
Updated : 30 Nov 2019, 06:03 AM

লম্বা সময় সম্পর্কে কাটানোর পর একটা সময় আসবে যখন মনে হবে এই সম্পর্কের কোনো ভবিষ্যত নেই, তাকে আঁকড়ে ধরে থাকার কোনো কারণ নেই, এমনকি হয়ত আপনার আর আগ্রহই নেই সম্পর্কটিকে বাঁচিয়ে রাখার। এমন সময়গুলোতে আবেগতাড়িত নয়, চাই বাস্তবতাকেন্দ্রিক চিন্তা। শুধু ভালোবাসা নয়, পারস্পারিক বোঝাপড়া, আত্নত্যাগ আর বোধগম্যতার মাপকাঠিতে মাপতে হবে সম্পর্কটিকে। বিচ্ছেদ যত যন্ত্রণাদায়কই হোক না কেন, বিষাক্ত সম্পর্ক নিরন্তর চালিয়ে যাওয়া আরও কঠিন, কষ্টের। আপনার সম্পর্কেও হয়ত আস্থা, যোগাযোগ, ঘনিষ্ঠতা ইত্যাদি সকল সঠিক উপকরণগুলো সঠিক পরিমাণেই ছিলো, তবে এতকিছুর পরও তা ব্যর্থ হতে পারে।

সম্পর্কবিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের আলোকে জানানো হলো কিভাবে বুঝবেন আপনার প্রেম এখন শুধই বোঝা, যা থেকে বেরিয়ে আসাই অর্থবহ।

পারস্পারিক যোগাযোগের অভাব: এক অপরের মধ্যে যোগাযোগ সংসারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। আর প্রিয়জনের সঙ্গে অর্থবহ যোগাযোগই যদি কমে যায় তবে সম্পর্ক তো দূর্বল হবেই। পরস্পরের প্রতিদিনের ঘটনাগুলো ভাগাভাগি করে নেওয়ার মাধ্যমেই আপনারা একে অপরের কাছাকাছি থাকেন, কমান নিজের মধ্যকার দুরত্ব। তাই ক্লান্তি, অবসাদ যতই হোক না কেনো আলাপে আগ্রহ হারানো সম্পর্কে আগ্রহ হারানোর ইঙ্গিত।

ঘনিষ্ঠতার অভাব: বিবাহিত জীবনে শারীরিক ঘনিষ্ঠতাকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত তা দেওয়া হয়না। প্রেমময় শারীরিক সম্পর্ক শুধু যে শারীরিক ও মানসিক ধকল কাটায় এমন নয়, তা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার ভালোবাসাকে জোরদার করে, বাড়ায় আস্থা। তবে সঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার অদম্য ইচ্ছায় যদি ভাটা পড়ে থাকে, তবে নতুন করে ভাবতে সেই ইচ্ছেটাকে পুনরায় জাগিয়ে তোলা নিয়ে। অন্যথায় হারিয়ে যাবে সম্পর্কের টানটুকুও।

ভরসা নিয়ে সংশয়: আপনার সঙ্গী আপনাকে ছাড়া কোথাও গেলেই কি আপনি সন্দেহ করা শুরু করেন? কিংবা সঙ্গীর মোবাইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তদন্তের দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করেন? এমনটা হলে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্কে মারাত্বক ফাটল দেখা দিয়েছে ইতোমধ্যেই। শরীরে রক্ত না থাকলে যেমন বেঁচে থাকা সম্ভব নয়, তেমনি আস্থা না থাকলে বৈবাহিক সম্পর্কেরও বেঁচে থাকা অসম্ভব। যদি শুধু সন্দেহই হয় তবে গোয়েন্দাগিরি না করে সঙ্গীর সঙ্গে আলাপ করতে করতে হবে। আরি এই আলাপ হবে আলোচনা, কাঠগড়ায় নিয়ে জেরা করা নয়। 

অন্যের মনোযোগ যখন কাঙ্খিত: প্রতিটি মানুষ চায় তার প্রিয় মানুষগুলোর সীমাহীন মনোযোগ, বিশেষ করে স্বামী কিংবা স্ত্রীর। আর তা না পাওয়ার কষ্টটা বুকভাঙ্গা। তবে সম্পর্কের বাইরের কারও মনোযোগ পাওয়া যদি আপনার কাঙ্খিত হয়ে উঠে তবে বুঝতে হবে আপনার সম্পর্ক আর স্বাভাবিক নেই, আর তার পেছনে দায়ি আপনিই। তাই স্বামী কিংবা স্ত্রী ব্যাতীত অন্যকারও কাছ থেকে একইধরনের মনোযোগ যদি আপনার কাঙ্খিত হয় তবে দ্রুত পুরনো সম্পর্ক থেকে বের হতে হবে।

সঙ্গীর ব্যক্তিগত জীবন অচেনা: বিবাহের মাধ্যমে দুটি মানুষ একত্রিত হয় তাদের পুরো জীবনটা এক অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে। তবে বিবাহের পরও স্বামী-স্ত্রীর জীবন যদি পৃথকই থেকে যায়, নিজেদের জীবনে অপরজন যদি জায়গা দেওয়া না হয় তবে সেই সম্পর্ক গড়ারই কোনো কারণ ছিলো না।

প্রতারণার ভাবনা: স্ত্রীর সঙ্গে টুকটাক ঝগড়ার পর যদি পুরনো প্রেয়সির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন তবে আপনি ইতোমধ্যেই প্রতারণা শুরু করে দিয়েছেন, বাকি শুধু তা প্রকাশ পাওয়া। প্রতারণা চিন্তাও যথেষ্ট ধ্বংসাত্বক, কারণ এসময় আপনার বিবেক ইতোমধ্যেই পরাজিত হয়েছে, সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা আবেগ এখন শুধুই অতীত।