উদ্বেগ কমাতে গভীর ঘুম

যাদের রাতে গভীর ঘুম হয় পরদিন তাদের দুশ্চিন্তায় ভোগার সম্ভাবনা কমে।

লাইফস্টাইল ডেস্কআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2019, 10:36 AM
Updated : 6 Nov 2019, 10:36 AM

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকদের করা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকা মস্তিষ্ক শান্ত করতে পারে গভীর ঘুম। ঘুমের এই পর্যায়ে স্নায়বীয় কম্পন প্রচণ্ড ভাবে কমে যায়, পাশাপাশি হৃদস্পন্দ ও রক্তচাপ কমে আসে।

গবেষকরা আরও জানান, ঘুম হীন রাত দুশ্চিন্তার মাত্রা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে।

জ্যেষ্ঠ গবেষক অধ্যাপক ম্যাথিউ ওয়াকার বলেন, “গভীর ঘুমের নতুন কার্যকারিতা চিহ্নিত করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। সেটা হল গভীর ঘুম মস্তিষ্কের যোগাযোগ পন্থা পুনর্গঠনের মাধ্যমে দুশ্চিন্তা কমিয়ে দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “মনে হচ্ছে যে গভীর ঘুম দুশ্চিন্তা দমনে সহায়ক, আর সেটা প্রতিটা রাত যতক্ষণ পারা যায়।”

গবেষণার প্রধান এটি বেন সিমন বলেন, “আমাদের গবেষণা এটাই প্রমাণ করে যে, অপর্যাপ্ত ঘুম দুশ্চিন্তার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় আর গভীর ঘুম এই ধরনের চাপ কমায়।”

এমআরআই এবং পলিসমনোগ্রাফি’র মাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে এই বিষয়ে পরীক্ষা করা হয়। গবেষকরা ১৮ জন তরুণের ওপর পর্যবেক্ষণ চালান। অন্যান্য পরীক্ষার মধ্যে ছিল অংশগ্রহণকারীদের সারা রাত ঘুমের পর মানসিকভাবে আন্দোলিত করে এরকম ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়। আবার একই পরীক্ষা চালানো হয় ঘুমহীন রাত কাটানোর পর।

প্রতি সেশনের পর দুশ্চিন্তার মাত্রা পরিমাপ করতে প্রশ্নমালা ব্যবহার করা হয় যা ‘স্টেইট-ট্রেইট অ্যাংজাইটি ইনভেন্টোরি’ নামে পরিচিত।

একটি ঘুমহীন রাত কাটানোর পর মস্তিষ্ক স্ক্যান করে দেখা যায়, এর যে অংশ উদ্বেগ দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণে রাখে তা বন্ধ আছে। অন্যদিকে আবেগীয় অংশ ছিল অতি-কর্মক্ষম।

অন্যদিকে একরাত পূর্ণাঙ্গ ঘুমের পর দেখা গেছে দুশ্চিন্তার মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

সিমন বলেন, “মস্তিষ্কের যে অংশ আমাদের আবেগ কমাতে, শরীরবৃত্তীয় প্রভাবক এবং দুশ্চিন্তার বাড়ার হাত থেকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, গভীর ঘুম সেই অংশকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারে।”

১৮ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর করা এই গবেষণার ফলাফল নিয়ে গবেষকরা একই রকম পরীক্ষা চালান ৩০ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর।

সমস্ত অংশগ্রহণকারীদের থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে আবারও দেখা গেছে, রাতে যাদের যত বেশি গভীর ঘুমের অভিজ্ঞতা হয়েছে পরদিন তাদের দুশ্চিন্তার মাত্রা ততই কম ছিল।

ন্যাচার হিউম্যান বিহেইভিয়র’ জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন