রুম টু রিড’য়ের মত বিনিময় সভা

রুম টু রিড বাংলাদেশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট যৌথভাবে একটি মত বিনিময় সভার আয়োজন করে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2019, 06:51 AM
Updated : 24 Oct 2019, 06:51 AM

বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে  এই সভায় মানসম্মত শিক্ষার জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক স্তরে বাংলা বিষয়ে পড়ার দক্ষতা ও পাঠাভ্যাস উন্নয়নে বিদ্যমান উদ্যোগসমূহ এবং ভবিষ্যতে করণীয় দিকনির্দেশনা নিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ মতামত প্রকাশ করেন।

এই মত বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ এফএম মনজুর কাদির এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির মহাপরিচালক মো. শাহ আলম।

মো. জাকির হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, “বর্তমান সরকার শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সমান গুরুত্ব প্রদান করছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান মনষ্কতা তৈরী করার জন্য বর্তমান সরকার গনিত অলিম্পিয়াডসহ নানান ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। রুম টু রিড বাংলাদেশ প্রাথমিক স্তরে পড়ার দক্ষতা ও অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে যেসকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে তার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছি এবং তাদের উত্তোরত্তোর সাফল্য কামনা করছি।”

অনুষ্ঠানের সহ-সভাপতি, রুম টু রিড বাংলাদেশ’য়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাখী সরকার স্বাগত বক্তব্যে মানসম্মত শিক্ষার উন্নয়ন এবং শিক্ষালাভের জন্য শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ ও শিশুবান্ধব পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শ্যামলী আকবর।

তিনি রুম টু রিড বাংলাদেশ’য়ের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, “আমাদের দেশে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উঠে শিক্ষার্থীরা বুঝে উচ্চারণ করে মিনিটে ৩৩টি শব্দের বেশি পড়তে পারে না। আন্তর্জাতিকভাবে এই ধাপে মাতৃভাষায় শব্দ বুঝে উচ্চারণ করে পড়তে পারার হার মিনিটে ৪৫ থেকে ৬০টি শব্দ। ‘জাতীয় শিক্ষার্থী মূল্যায়ন ২০১৫: শ্রেণি ৩য় ও ৫ম’ থেকে দেখা যায়, শিক্ষা অধিদপ্তর আয়োজিত কৃতী অভীক্ষায় ৩য় শ্রেণির শতকরা ৩৫ ভাগ শিক্ষার্থী বাংলা পঠনে কাঙ্ক্ষিত মান অর্জন করেনি।”

তিনি শিশুর পঠন দক্ষতা বৃদ্ধিতে সুপারিশমালা তুলে ধরেন। যেগুলোর মধ্যে আছে-  পাঠের বিষয় আনন্দদায়ক ও আকর্ষণীয় করা বাঞ্ছনীয়। পরিচিত পরিবেশের শব্দ ও বিষয় থাকা। বাহুল্য তথ্য ও বড় পরিসরের অনুচ্ছেদ বর্জন করা। যুক্তবর্ণের শুদ্ধ উচ্চারণের জন্য ক্রম অনুসারে অনুশীলন অপরিহার্য তবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে যুক্তবর্ণ ও ফলার ব্যবহার যথাসম্ভব কম থাকা বাঞ্ছনীয়। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে বর্ণ শব্দ ও বাক্যের পুনরাবৃত্তি হবে এবং তা শ্রেণির ক্রমানুসারে কমতে থাকবে।

মত বিনিময়ে সভায় আলোচনায় অংশগ্রহণ অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান, সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম), এনসিটিবি; অধ্যাপক ড. আরিফুল হক কবির, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; মাজহার করিম, ব্যবস্থাপক, লিটারেসি (দক্ষিণ এশিয়া), রুম টু রিড প্রমুখ।

সভায় বিভিন্ন শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগি এবং সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দা তাহমিনা আক্তার বলেন, “আজকের এই মত বিনিময় সভার মাধ্যমে বাংলাদেশের শিশুদের পঠন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে সেই প্রত্যাশা করছি।”

উল্লেখ্য, রুম টু রিড একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা যা বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকা, নাটোর ও কক্সবাজার জেলায় ৫৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ পাঠাগার স্থাপন, শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ প্রকাশনা ও সরবরাহের মাধ্যমে ২০০৯ সাল থেকে শিশুদের পঠন দক্ষতা ও পড়ার অভ্যাস তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে।

- বিজ্ঞপ্তি।