স্তন ক্যান্সারের অবহেলিত পূর্বাভাস

প্রাথমিক অবস্থাতেই রোগ সনাক্ত করা সম্ভব হলে ক্যান্সার উৎপাটন করা সহজ হয়। চিকিৎসা সফল হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে বেশি।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2019, 06:05 AM
Updated : 19 Oct 2019, 06:05 AM

অক্টোবরকে বিশ্বব্যাপি স্তন ক্যান্সার নিয়ে সচেতন হওয়ার মাস হিসেবে পালন করা হয়।

বিশ্ব ক্যান্সার গবেষণা সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ নারী স্তন ক্যান্সারের আক্রান্ত হন। আমাদের দেশেও এই রোগের প্রকোপ ক্রমবর্ধমান।

তাই স্তন ক্যান্সার নিয়ে জনসাধারণের জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত হওয়া জরুরি।

তবে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনীহা এবং ব্যক্তিগত সচেতনতার অভাবে অনেকেই এই রোগের উপসর্গ সম্পর্কে অজ্ঞ। আবার উপসর্গও সবার ক্ষেত্রে এক রকম নয়। নারী-পুরুষ উভয়েরই ধারণা স্তনের আকার-আকৃতিতে পরিবর্তন, স্পর্শে গোটা অনুভব করা ইত্যাদিই স্তন ক্যান্সারের একমাত্র উপসর্গ।

স্তন ক্যান্সারের প্রায়শই অবহেলিত থেকে যাওয়া কিছু উপসর্গ সম্পর্কে জানানো হল স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।

ত্বকের রং পরিবর্তন: অস্বাভাবিক গোটা অনুভব করা। স্তন থেকে তরল বের হওয়া, ফুলে যাওয়া ইত্যাদির পাশাপাশি আরেকটি উল্লেখযোগ্য উপসর্গ হলো স্তনের ত্বকের রং লাল কিংবা কমলা হওয়া।

স্কিন ডিম্পলিং: স্তনের বাইরের অংশের ত্বক কমলার খোসার মতো উঁচুনিচু হওয়া স্তন ক্যান্সারের একটি ভয়ঙ্কর উপসর্গ। এই উপসর্গ যদিও খুব কম দেখা যায়। তবে স্তন পরীক্ষা করার সময় এই বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। উপসর্গটি প্রথম দর্শনে র‌্যাশ মনে হতে পারে, থাকতে পারে চুলকানি এবং অ্যালার্জির আক্রমণের মতো ফোলাভাব। সমস্যা তীব্র হলে স্তন ফুলে যেতে পারে এবং তার চারপাশের ত্বকের পুরুত্ব বেড়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে স্তনের ত্বকে গর্ত দেখা দিতে পারে।

মূলত সংক্রমণজনীত স্তন ক্যান্সারের উপসর্গ ‘স্কিন ডিম্পলিং’, যা অত্যন্ত মারাত্বক। তবে খুব কম মানুষই তাতে আক্রান্ত হন। এই ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত অংশের ত্বকের ভেতরের ও চারপাশের ‘লিম্ফ নোড’ বা গ্রন্থি  ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে কারণে ত্বকের সমতলের মসৃণতায় পরিবর্তন আসে।

‘ফ্যাট নেক্রোসিস’ নামক সমস্যাতেও ত্বকের এমন অবস্থা হতে পারে, যেখানে চর্বি কোষ মরে গিয়ে তার স্থান দখল করে তেলজাতীয় উপাদান। স্তনের ক্ষেত্রে যা হয় তা হল এর ক্ষতিগ্রস্ত চর্বির কোষ চারপাশে জমা হয়ে ত্বকের সমতলে পরিবর্তন আনে। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী গোটা যদি বড় হতে হতে ‘স্কিন ডিম্পলিং’ হওয়া অংশের কাছাকাছি যেতে থাকে তবে পরিস্থিতি জটিল।

 ‘স্কিন ডিম্পলিং’য়ের সঙ্গে আরও কিছু উপসর্গের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। যেমন,

    - স্তনে চারপাশে ফোলাভাব এবং উষ্ণ হয়ে থাকা।

    - স্তনে সংবেদনশীলতা বা স্পর্শে ব্যথা অনুভূত হওয়া।

    - আক্রান্ত স্তনে ক্রমাগত ব্যথা।

    - জ্বলুনি কিংবা খোঁচানো অনুভুতি।

    - যেকোনো এক স্তনে লালচে কিংবা কালচেভাব দেখা দেওয়া।

পরীক্ষার সময়

ক্যান্সার থেকে নিরাময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল প্রাথমিক অবস্থায় তা সনাক্ত করতে পারা। যত দ্রুত তা সনাক্ত করা যাবে, রোগ মুক্তির সম্ভাবনা ততই বেশি হবে। প্রতি বছরে এক কিংবা প্রতি ছয় মাসে একবার স্তন পরীক্ষা করানো জরুরি। বংশে কারও স্তন ক্যান্সার হয়ে থাকলে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। বয়স ৩৫ পার হলেই নিয়মিত ‘ম্যামোগ্রামস’ এবং ‘স্ক্রিনিংস’ করানো উচিত।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন