পুষ্টি নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা

চর্বি, ডিমের কুসুম বা অতিরিক্ত কফি পান নিয়ে রয়েছে নানান ধারণা।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2019, 07:02 AM
Updated : 7 Oct 2019, 07:02 AM

তবে সব ধারণা ঠিক নয়।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে আমাদের চারপাশে উপদেশের অভাব নেই। কি ধরনের খাবার খেতে হবে, কোন ধরনের শরীরচর্চা অনুশীলন করতে হবে এসব ব্যাপারে সবাই উপদেশ দিতে চায়। তবে স্বাস্থ্য আপনার তাই সবার কথাতেই অন্ধ বিশ্বাস রাখা উচিত হবে না।

পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যের আলোকে জানানো হলো এমন কিছু ভুল ধারণা সম্পর্কে।

কফি অস্বাস্থ্যকর: অতিরিক্ত কফি গ্রহণ করার কারণে বাড়তে পারে রক্তচাপ। আগেভাগেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা না থাকলেও তা হতে পারে। তবে এই বাড়তি রক্তচাপ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। আবার কফি কিছু মারাত্বক রোগে ঝুঁকি কমাতেও ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি কফি মানুষের মন ভালো রাখে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। কফিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কর্মক্ষমতা বাড়ায় ১১ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত।

চর্বি কম, কার্বোহাইড্রেট বেশি: খাদ্যাভ্যাসে চর্বি কমানোর উপকারিতা নির্ভর করে প্রধানত কতটুকু ক্যালরি ঝরালেন তার উপর। শুধু চর্বি কমানোর মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব যদি শারীরিকভাবে পরিশ্রমী হন। তাই একজন কর্মঠ ব্যক্তির জন্য চর্বি কম, কার্বোহাইড্রেট বেশি এমন খাদ্যাভ্যাস কার্যকর হতে পারে, তবে অলস জীবনযাপন করা কিংবা হজমের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা হতে পারে ধ্বংসাত্বক।

ওজন বাড়ার সঙ্গে সম্পর্ক আছে চর্বির: হয়ত ভাবছেন চর্বি খেলেই আপনার ওজন বাড়বে। তাই ওজন কমাতে চাইলে চর্বি বাদ দিতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে সব চর্বি খারাপ নয়। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেইটের মতো আরেকটি পুষ্টির উৎস চর্বি। ওজন বাড়ার পেছনে মুল কালপ্রিট হল ক্যালরি। যে ক্যালরি খরচ করছেন তার চেয়ে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করলে ওজন বাড়বে। এজন্য শুধু চর্বিকে দোষারোপ করা যাবে না।

ডিমের কুসুম খাওয়া ভালো না: ডিমের কুসুম কখনই অস্বাস্থ্যকর নয়, বরং তা প্রোটিনের আদর্শ উৎস। প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকার কারণে ডিমকে হৃদরোগের কারণ মনে করা হয়। তবে আসল কথা হল ‘টেস্টোস্টেরন’ তৈরি করার জন্য শরীরের চাই কোলেস্টেরল। আর এই ‘টেস্টোস্টেরন’ই শরীরকে জ্বালানি যোগায়, পেশি গঠন করে। আবার ডিমের কুসুমে থাকা কোলেস্টেরল আসলে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়, তাই নিশ্চিন্তে ডিমের কুসুম খাওয়া যেতে পারি।

চিনি মানেই খারাপ: চিনিতে খালি ক্যালরি থাকে যাতে কোনো পুষ্টি মেলে না একথা সত্য। তাই বলে সব চিনিই যে খারাপ তা নয়। অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে ঠিক তবে প্রাকৃতিক চিনি যা ফলমূলে পাওয়া যায় তা স্বাস্থ্যকর।

সোডিয়াম বাদ: রক্তচাপ সামলাতে সোডিয়াম বা লবণ গ্রহণের পরামর্শ কমবেশি সবাই পেয়েছেন। তবে একজন স্বাস্থ্যবান মানুষের ১৫০০ থেকে ২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম প্রয়োজন প্রতিদিন, যা প্রায় ১ চা-চামচ লবণের সমান। তবে খুব কম বা খুব বেশি সোডিয়াম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। একজন সুস্থ মানুষকে সোডিয়াম খাওয়া কমাতে হবে এমন কোনো কথা নেই।

স্যাচারেইটেড ফুড অস্বাস্থ্যকর: হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ানোর জন্য ‘স্যাচারেইটেড’ ধরনের খাবারকে দায়ী করা হয়। তবে এ ধরনের খাবার খাদ্যাভ্যাস থেকে বাদ দিলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় না। অপরদিকে ‘স্যাচারেইটেড ফ্যাট’ কোষের ‘মেমব্রেইন’ বা ঝিল্লি তৈরি করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আবার হৃদযন্ত্রের জ্বালানি হিসেবে এই ‘স্যাচারিইটেড ফ্যাট’ই ব্যবহার হয়।

আরও পড়ুন