প্রথম চাকরি হোক কিংবা পঞ্চম, সবাই চায় বেতনটা লোভনীয় হোক। কাজের ক্ষেত্রে, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ, অফিসের দূরত্ব, অন্যান্য সুযোগ সুবিধা- সব কিছু ছাপিয়ে প্রাধান্য পায় বেতনের সংখ্যা। ৎ
কারণ নিজের সন্তুষ্টির পাশাপাশি একজন মানুষের সামাজিক অবস্থান অনেকাংশে নির্ভর করে তার উপার্জনের ওপর। তারপরও চাকরির সাক্ষাৎকারে বেতন বিষয়ক প্রশ্নে ভড়কে যান অনেকেই, বিশেষত যারা কর্মজীবনে নতুন।
জীবনযাপন-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল কীভাবে নিজের কাজের আর্থিক মূল্য নিয়ে আলোচনা করা যায় ভদ্রভাবে।
বাজার জ্ঞান: যে খাতে কাজ করছেন বা করতে যাচ্ছেন এবং যে পদে কাজ করতে যাচ্ছেন তার জন্য বেতনের মাত্রা কেমন হয় তা নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করা জরুরি। নিজের যোগ্যতাও বিবেচনায় আনতে হবে। একই খাতে ও পদে বহাল আছেন এমন পরিচিত মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে ধারণা পেতে পারেন। যে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করছেন, ইন্টারনেটে তা সম্পর্কে তথ্য আহরণ করলেও ধারণা পেতে পারেন। বেতন বৃদ্ধির আবেদনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
নিজস্ব চাহিদা: সাধ আর সাধ্যের সমীকরণ মেলানো বেশ কঠিন কাজ। জীবনে যত সাফল্য অর্জন করবেন, সামাজিক মর্যাদা বাড়বে। আর সেই মর্যাদা বজায় রাখতেই আয়ের একটি বড় অংশ ব্যয় হয়ে যাবে। তাই নতুন চাকরি কিংবা কর্মরত স্থানেই বেতন বাড়ানোর আবেদনের আগে আপনার আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবসম্মত পর্যায়ে আনতে হবে। আপনি যতটা চান তা পাওয়ার মতো যোগ্যতা আপনার আছে কিনা এবং তা দেওয়া সাধ্য প্রতিষ্ঠানের আছে কিনা- দুটোই হিসাব করতে হবে।
সময় জ্ঞান: সব হিসাবে কষার পর এবার সাক্ষাৎকারের পালা। বেতন সংক্রান্ত আলোচনা সাক্ষাৎকারের শেষের দিকে হওয়াই ভালো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তেমনটাই হয়। এতে নিজের যোগ্যতার যথাসাধ্য ইতিবাচকগুলো তুলে ধরার সুযোগ মেলে। আর তা যদি অপরপ্রান্তের প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট হয় তবে বেতনের আলোচনা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। আলোচনার সময় প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ দক্ষতা, অভিজ্ঞতা যতটা সম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করতে হবে।
সঠিকভাবে উপস্থাপন: বেতনের প্রত্যাশা ব্যাক্ত করার সময় কথায় থাকা নিরপেক্ষ ধাঁচ এবং প্রমাণ করতে হবে আপনি অযৌক্তিক দাবি করছেন না। নিজের সফলতাগুলো কর্মকর্তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে এবং আপনার অভিজ্ঞতা কীভাবে প্রতিষ্ঠানের কাজে আসবে সেদিকে জোর দিতে হবে। আর কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ প্রকাশ করতে ভুলবেন না।
প্লাটা প্রশ্নের জন্য প্রস্তুতি: সাক্ষাৎকার চলাকালে বেতনের দর কষা ইতিবাচক লক্ষণ। কারণ এতে প্রমাণ হয় কর্মকর্তারা আপনার প্রতি আগ্রহী। আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা এবং ভদ্রতাই পুরো ব্যাপারটা ইতিবাচকভাবে সম্পন্ন করার প্রধান হাতিয়ার।
সিদ্ধান্তের আগে ভাবুন: প্রতিষ্ঠান থেকে প্রস্তাবপত্র বা ‘অফার লেটার’ পাওয়ার পর সেটা ভালোভাবে পড়ে দেখতে হবে। দেখতে হবে কত টাকা আপনি নগদ পাবেন আর কতটুকু অন্যান্য সুবিধা হিসেবে যুক্ত হয়েছে। অন্যান্য সুবিধাগুলো আপনার জন্য কতটা বাস্তবসম্মত সেটাও ভেবে দেখা উচিত। আর নগদ যা পাবেন সেটাও আপনার জন্য যথেষ্ট কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠানে ‘অফার লেটার’ পাওয়া পরও আলোচনার সুযোগ থাকে। যদি থাকে তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে নিজের মতো করে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন