শরীরচর্চা হোক আনন্দের

গায়ে ব্যথা না হলে শরীরচর্চা ঠিক মতো হচ্ছে না- এই ধারণা ঠিক নয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2019, 09:39 AM
Updated : 21 August 2019, 09:39 AM

ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমানো কিংবা পেশিবহুল শরীর গড়া- উদ্দেশ্য যাই হোক না কেনো আশপাশের প্রায় প্রতিটি মানুষই বলে নিজের সর্বোচ্চ শ্রম দিতে এবং পারলে আরেকটু।

ব্যায়াম নিয়ে সকল অনুপ্রেরণা যোগানো কথাগুলো বরাবরই অমানুষিক পরিশ্রমের দিকে ইঙ্গিত দেয়। তবে এমনটা করলেই বিপত্তি বাধায় হরমোন ‘কর্টিসল’, যা অপর নাম ‘স্ট্রেস হরমোন’।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় শরীরচর্চা বিশেষজ্ঞ গগন আরোরা বলেন, “যখনই শরীরের ওপর কোনো ধকল যায়, রক্তে ‘কর্টিসল’ নিঃসৃত হয়। এই ধকল শারীরিক নাকি মানসিক, মস্তিষ্ক তার মধ্যে পার্থক্য দেখে না্। মস্তিষ্ক সবসময় টিকে থাকার চেষ্টা করে আর তাই ‘কর্টিসল’ দেখা দেয় সমস্যা হিসেবে।”

ক্লান্ত তবু নির্ঘুম: সারাদিনের ক্লান্তিতে শরীর ভেঙে পড়েছে কিন্তু বিছানায় শুয়ে ঘুম আসে না, শরীরচর্চার ধকল থেকে সামলে উঠতে অনেক সময় লাগে- ইত্যাদি হল শরীরে অতিরিক্ত ‘কর্টিসল’য়ের উপস্থিতির ফল। এর মানে হল ক্লান্তি কিংবা মানসিক চাপ সামলানোর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে কাজ করছে না। এমতাবস্থায় ভারী শরীরচর্চা করলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।

এসময় চাই মৃদুমাত্রার ব্যায়াম যা শরীরে নতুন কোনো ‘কর্টিসল’ সরবরাহ করবে না। এই ব্যায়ামের সময় হবে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। আর ভারী ব্যায়াম থেকে এসময় দূরে থাকতে হবে।

গায়ের জোর নয় মনের জোর: দুদিনেই শরীর-স্বাস্থ্য গড়ে ওঠে না, তাই ব্যায়ামাগারে গিয়ে শুরু থেকেই গায়ের জোরে অতিরিক্ত ব্যায়াম করা উচিত হবে না। বরং মনোযোগ দিতে হবে দীর্ঘদিন ব্যায়ামের অভ্যাস ধরে রাখার প্রতি।

আরোরা বলেন, “সহজ ব্যায়াম কাজে আসে না এমন ভুল ধারণা অনেকেরই আছে। তবে সুস্বাস্থ্যের জন্য সহজ ও কঠিন ব্যায়ামের সামঞ্জস্য প্রয়োজন। ৪৫ থেকে ৬০ মিনিট উপর্যুপরি পরিশ্রমের তুলনায় সারাদিন সাধারণ নড়াচড়ার মধ্যে থাকা বেশি উপকারী।”

ব্যায়ামের মাত্রায় প্রতিনিয়ত ভিন্নতা আনতে হবে। যেদিন স্বাভাবিক জীবনযাত্রা একটু বেশিই ঝক্কির, সেদিন নিজেকে ছুটি দিয়ে ‘কর্টিসল’ নিয়ে সচেতন হতে হবে।

ধকল থেকে সেরে ওঠা: মানসিক বা শারীরিক যেটাই হোক, চাপ সামাল দিতে জানতে হবে। আর এই সামাল দেওয়ার উপায় যদি ব্যায়াম হয় তবে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা।

ঘুম হওয়া উচিত সবার আগে, আর ‘কর্টিসল’য়ের মাত্রা সামলানোর জন্য হাঁটা, বাগান করা, বিশ্রাম, হালকা সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, নাচ ইত্যাদি বেশ উপকারী।

মজার ব্যাপার হল এই কাজগুলোতে হৃদস্পন্দন খুব একটা বাড়বে না, তবে চর্বি কিন্তু ঠিকই ঝরবে। বিশেষত, ‘ভিসারাল ফ্যাট’ যা অতিরিক্ত ‘কর্টিসল’য়ের একটি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া।

অতিরিক্ত ‘কর্টিসল’য়েল উপসর্গ

* ফোলাভাব, বিশেষত চেহারায়। * ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরে ব্যথা কিংবা পেশি শক্ত হওয়া। * সাধারণ খাবারে রুঁচি নেই তবে ‘কার্বোহাইড্রেট’ গ্রহণের ইচ্ছা। * শরীরের চর্বি ঝরানো দুষ্কর হওয়া, বিশেষত শরীরের মাঝের অংশের। * চিনি, স্টার্চ কিংবা চর্বিযুক্ত খাবারের আকাঙ্ক্ষা। * অল্প আঘাতে রক্ত জমে যাওয়া। * পেশি দূর্বল। * মনোযোগে সমস্যা।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন