ঈদের আনন্দ হোক রোগ মুক্ত

শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঈদের আনন্দে যাতে ভাটা না পড়ে সেজন্য চাই সাবধানতা।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2019, 09:29 AM
Updated : 5 June 2019, 09:29 AM

ঈদের ছুটিতে প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাড়ি ফিরেছে মানুষ। সারাদিন রোজা রেখেও শপিংমলগুলো ঘুরে ঈদের কেনাকাটা করছেন।

সবকিছুর পেছনেই মূল অনুপ্রেরণা হল ঈদের আনন্দ। তবে সামান্য পেট খারাপের কারণে যদি সেই আনন্দ ভেস্তে যায় তাহলে কেমন লাগবে?

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সের মেডিসিন বিভাগের পরামর্শদাতা ডা. কামরুল হাসান (বিসিএস স্বাস্থ্য) জানাচ্ছেন ঈদের দিনগুলোতে সম্ভাব্য শারীরিক সমস্যা ও তা এড়ানোর উপায়।

ঈদের সকাল শুরু হয় সেমাই, পিঠা, মিষ্টি ইত্যাদি দিয়ে অর্থাৎ শর্করা। সঙ্গে থাকে চটপটি, নুডুলস ইত্যাদিও। নামাজের পর শুরু হয় খাওয়ার উৎসব, যেখানে কোনো বাছবিচার সেই।

দুধের সেমাই খাওয়ার পরই মসলা কাবাব পেটে চালান হয়ে যায়। তারপর টুপ করে গিলে ফেলেন এক টুকরা ডিমের পুডিং। আর সারাদিন ঘুরে ফিরে যে ভাজাপোড়া খাওয়া হয় তা বলাই বাহুল্য।

দুপুরের খাবারে কয়েকপদের মাংস তো খেতেই হবে। সঙ্গে মাছ ভাজাও থাকবে।

বিকাল কিংবা সন্ধ্যার আড্ডাটা জমবে হয়ত কোনো রেস্তোরাঁয়, বার্গার, চিকেন ফ্রাই, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইতে চারদিক সয়লাব।

রাতে কমপক্ষে একটা দাওয়াত তো থাকবেই।

গতকালও প্রায় ১৪ ঘণ্টা রোজা রাখার কারণে সারাদিন যেই পেটে এক ফোঁটা পানিও যায় নি, আজ সেখানে যেন খাদ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এতকিছুর পর সুস্থ থাকাটাই বরং অস্বাভাবিক।

অনিয়ন্ত্রিত খাবার খাওয়ার কারণে পেটের গোলমাল, ডায়ারিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া ও ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দেয়।

দিনের তিনবেলা প্রধান খাবারগুলোর মাঝে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা বিরতি রাখতে হবে। এই খাদ্য বিরতির মাঝে হালকা খাবার খাওয়া যেতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আর প্রতিটি পরিবারের উচিত তাদের ডায়াবেটিস রোগীর খাবারের দিকে বিশেষ নজর রাখা।

ঈদের দিন অতিথি ও পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসে খাবার খাওয়া হয়। ফলে আড্ডা জমে বেশ। তবে মনে রাখতে হবে, খাওয়ার সময় বেশি কথা বলা বা হাসাহাসি করা ঠিক নয়। খেতে বসে একটু অসাবধানতার কারণে শ্বাসনালীতে খাবার ঢুকে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

খাবার খাওয়ার সময় ভালোমতো চিবিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। তাছাড়া ঈদের দিনে গুরুপাক খাবার খাওয়া হয় বেশি। তাই দ্রুত হজমে সাহায্য করে এমন খাবার যেমন- টক দই, সালাদ, লেবু ইত্যাদি খাওয়া উচিত।

মসলাদার খাবার যতটা কম খাওয়া যায় ততই ভালো হবে। রজমান মাসে শরীরের সবচাইতে যে উপাদানের অভাব হয়েছে তা হল পানি। তাই কোমল পানীয় এড়িয়ে যথাসম্ভব পানি পান করতে হেব।

পানির ঘাটতি ধীরে ধীরে পূরণ করতে হবে। হাতের কাছে খাবার স্যালাইন রাখতে হবে। ঈদের মুখরোচক খাবারের মাঝে তাজা ফল থাকলে সবচাইতে ভালো।

তবে ফল খাওয়ার আগে-পরে কি খাচ্ছেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন, দুধের সেমাই খাওয়ার পর কমলা কিংবা মাল্টা খাওয়া মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বাইরের খাবার থেকে দূরে থাকুন।