রক্ত থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করতে

রক্ত পরিশোধনের প্রধান দায়িত্ব পালন করে বৃক্ক এবং যকৃত। গৃহস্থালী কিছু উপকরণ এই রক্ত পরিশোধন প্রক্রিয়ার উপকারী ভূমিকা পালন করতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2019, 06:19 AM
Updated : 23 May 2019, 06:19 AM

বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়ার ফলাফল হিসেবে রক্তে মিশে থাকা বর্জ্য অপসারণে এবং কিছু রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে এই ঘরোয়া উপকরণগুলো সহায়ক।

স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হল।

লেবু: রক্ত এবং হজমতন্ত্র পরিষ্কার করে লেবুর রস। অম্লীয় ধরনের এই রস অম্ল-ক্ষারের মাত্রা পরিবর্তন করতে পারে এবং রক্ত থেকে বিষাক্ত উপাদান অপসারণ করতে পারে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে লেবুর রস পান করলে শরীরে থেকে দুষিত উপাদান অপসারিত হয়। কুসুম গরম পানিতে অর্ধেকটা লেবুর রস মিশিয়ে নিলেই যথেষ্ট।

অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ও বেইকিং সোডা: এই মিশ্রণ শরীরের অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করে, যা রক্ত এবং টিস্যু পরিশোধন করে। রক্ত থেকে ইউরিক অ্যাসিড পরিষ্কার করে এই মিশ্রণ।

দুই টেবিল-চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগারের সঙ্গে আধা টেবিল-চামচ বেইকিং সোডা একটি খালি গ্লাসে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে যাতে ফেনা কমে আসে। এরপর তাতে পানি যোগ করে সঙ্গে সঙ্গে পান করতে হবে। অ্যাপল সাইডার ভিনিগারের সঙ্গে মেশালে বেইকিং সোডা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তারপরও যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের এই মিশ্রণ পান করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

বেসিল: ব্যাকটেরিয়া ও প্রদাহরোধী গুণ রয়েছে বেসিলের। পাশাপাশি রক্ত পরিশোধনের ক্ষেত্রে এবং বৃক্ক ও যকৃত থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করতে এই ভেষজ উপাদান অনন্য। মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করবে এই উপাদান। প্রতিদিনের খাবারে পাঁচ থেকে ছয়টি বেসিল পাতার গুঁড়া মিশিয়ে দিলেই এর উপকার পাওয়া যায়। আবার একই পরিমাণ পাতা দিয়ে চা বানিয়েও পান করা যেতে পারে।

হলুদ: অত্যন্ত উপকারী একটি মসলা হলুদ, যা রক্ত পরিষ্কার করে এবং রোগ নিরাময় প্রক্রিয়া দ্রুত করে। হলুদে থাকা ‘কারকিউমিন’ প্রদাহ এবং শরীরের প্রায় সব ধরনের জটিলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে। নতুন লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতেও ভূমিকা রাখে হলুদ। আর হলুদের স্বাস্থ্যগুণ সেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার দিনগুলো থেকেই জন সমাদৃত। এক কাপ কুসুম গরম দুধের সঙ্গে আধা চা-চামচ হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে পান করতে হবে। যকৃতের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে এই পানীয়।

পানি: প্রাকৃতিক পরিশোধনকারী হল পানি। যত বেশি পানি পান করা হবে রক্ত ততই বিশুদ্ধ হবে। শরীর থেকে দূষিত উপাদান ধুয়ে প্রসাবের সঙ্গে বের করে দেয় পানি এবং সকল অঙ্গের স্বাভাবিক কার্যক্রম অক্ষুণ্ন রাখে। খনিজ উপাদান ও ভিটামিনের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক পানি।

অন্যান্য খাবার

উপরোক্ত খাবারগুলো উপকরণগুলো ছাড়াও আরও অনেক ফল ও সবজি আছে যা রক্ত পরিশোধনে কার্যকর।

ব্লুবেরি: প্রাকৃতিক রক্ত পরিশোধনকারী খাবারের মধ্যে সবচাইতে কার্যকর এই ফল। পাশপাশি যকৃত ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বৃদ্ধিও বন্ধ করে ব্লুবেরি।

ব্রকলি: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাঙ্গানিজ থাকে ব্রকলিতে। আর শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান অপসারণেও কার্যকর এই সবজি।

বিট: এতে থাকে ‘বেটালাইন্স’ এবং ‘নিট্রাটস’ নামক ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ যা রক্ত পরিশোধন করে।

গুড়: রক্ত পরিষ্কার করার কাজে গুড় একটি অনন্য উপাদান। শরীরের ভেতরে জমাট বেঁধে থাকা রক্ত দূর করে গুড় যা রক্ত পরিশোধনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন