সফলতার পথে বাধা ঘুমের অভাব

রাত জেগে সিনেমা দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করা কিংবা মোবাইল ফোনে অযথাই সময় ব্যয় করার আগে ভেবে দেখুন, হয়ত এই কারণেই জীবনে সফলতা আসছে না।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2019, 01:43 PM
Updated : 18 March 2019, 01:43 PM

আর এই ধারণা আর ভিত্তিহীন নয়, পেছনে আছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।

যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে অবস্থিত হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ‘ডিভিশন অফ স্লিপ মেডিসিন’য়ের একদল গবেষকের করা গবেষণা অনুযায়ী, ঘুমের অভাব একজন কর্মীর মন-মেজাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, হারায় মনোযোগ এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কয়েকদিন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাজ কিংবা বিনোদনের জন্য কয়েক ঘণ্টা রাত জাগার মাশুল গুনতে হবে পরের দিন কর্মক্ষেত্রে গিয়ে, যখন আপনার কাজের স্পৃহা নষ্ট হয়ে যাবে।

নিউ ইয়র্কের ইউনিভার্সিটি অফ রোচেস্টার’য়ের করা আরেকটি গবেষক দল কাজ করেন ঘুমের অভাব ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার উপর তার প্রভাব নিয়ে।

গবেষকদের মতে, মানুষ যখন ঘুমায় তখন মস্তিষ্ক তার নিউরন থেকে বিষাক্ত প্রোটিন অপসারণ করে। যে কারণে মানুষ পরদিন পরিষ্কারভাবে চিন্তা করতে পারে, নতুন তথ্য সহজে আয়ত্তে আনতে পারে। তাই ঘুমের ঘাটতি থাকলে যত কফি পান করুন না কেনো লাভ হবে না।

অফিসে গিয়ে এটা ওটা খেতে মন চাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা পালন করে ঘুমের অভ্যাস। আর এভাবেই সমস্যা সমাধানের পারদর্শীতা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং আবেগের তাড়না নিয়ন্ত্রণে গোলমাল বাঁধানোর পাশাপাশি ঘুমের অভাব ওজনও বাড়ায়।

অসংখ্য গবেষণায় বলা হয়েছে ঘুমের অভ্যাস স্বাস্থ্যকর না হলে ক্ষুধা লাগে বেশি এবং হজম-ক্রিয়ার উপরেও বাড়তি চাপ ফেলে। ক্যালরি পোড়াতে শরীরকে বেগ পেতে হয়। অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ক্ষতির শিকার হয়।

কর্মক্ষেত্রে সিংহভাগ দক্ষ কর্মীর প্রধান গুণ হল তারা মানসিকভাবে বুদ্ধিদীপ্ত এবং প্রচণ্ড মানসিক চাপেও তারা নিজেদের শান্ত রাখতে পারেন।

এই কর্মীরা জানেন কীভাবে কর্মক্ষেত্রে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, আর এই ক্ষমতা অর্জন করার জন্য শরীরের পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

তাই অফিসে গিয়ে সামান্যতেই মেজাজ খিটখিটে হয়ে কিংবা নিজের সর্বোচ্চ দক্ষতা প্রয়োগ করতে না পারলে নিজের ঘুমের অভ্যাসের দিকে নজর দিন।

একজন সুস্থ মানুষের প্রতিরাতে গড়ে সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। মনে রাখতে হবে কর্মদক্ষতা, কাজে মনোযোগ এবং মন মেজাজ ফুরফুরে রাখতে সুস্থ শরীর ও মন প্রয়োজন সমানভাবে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন