ঐতিহাসিক গাড়ির প্রদর্শনী

অতীতের ছোঁয়া পেতে চাইলে পুরানো আমলের গাড়ির এই প্রদর্শনীতে ঘুরে আসতে পারেন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2019, 05:26 AM
Updated : 22 Feb 2019, 05:53 AM

শখের গাড়ি সংগ্রাহক মাহমুদুল ফারুক, রাজধানীর উত্তরখান মৈনারটেক বাজারে তার সংগ্রহশালা। আর এখানেই চলছে তার সংগ্রহশালার ঐতিহাসিক সব গাড়ির প্রদর্শনী।

২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই আয়োজন চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সময় সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা।

সংগ্রহশালার দুটি গাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও।

অস্টিন ১৯৩০

ওল্ডসমোবিল ১৯৫৩, পাকিস্তান আমলে মার্কিন দূতাবাসে ব্যবহৃত হত এই গাড়ি। পরে ফরিদপুরের এক হিন্দু ব্যবসায়ী গাড়িটি কিনে নেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনী ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে আক্রমণ করে। তবে ব্যবসায়ীকে না পেয়ে তার গাড়ির উপর চড়াও হয় এবং গুলিবর্ষণ করে। গাড়ির সামনের কাঁচে গুলির আঘাতের চিহ্ন এখনও রয়েছে। পরে একজন ভাঙারি ব্যবসায়ী গাড়িটি কিনে ঢাকায় নিয়ে আসেন। এই ভাঙারি ব্যবসায়ির কাছ থেকেই গাড়িটি সংগ্রহ করেন মাহমুদুল ফারুক।

শেভ্রোলে ডিলাক্স ১৯৫১

শেভ্রোলে ১৯৫৬ স্টেশন ওয়াগন, ১৯৫৬ সালে বাংলাদেশে আসা এই গাড়ি ব্যবহার করত চট্টগ্রাম বন বিভাগ। সে সময় চট্টগ্রাম সফরে গিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এ গাড়িতে চড়েছেন।

চট্টগ্রামে তখন হাতে গোনা কয়েকটি উন্নতমানের গাড়ি ছিল, যার মধ্যে চট্টগ্রাম ক-২১৩৩ নম্বরের গাড়িটি অন্যতম। ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সফরে এসে চট্টগ্রাম গিয়ে এই গাড়ি ব্যবহার করেছিলেন আইয়ুব খান। স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম সফরে গিয়ে চড়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।

গোগামোবল ১৯৫৬

মাহমুদুল ফারুক বলেন, “এই গাড়ি স্বাধীনতা যুদ্ধের অংশ। ১৯৭১ সালে গাড়িটি পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল মুক্তিবাহিনী। এখনও গাড়ির জানালায় গুলির দাগ রয়েছে। পাক সেনাবাহিনীর কাছ থেকে গাড়িটি ছিনিয়ে তারা যুদ্ধের সরঞ্জাম আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহার করতেন।”

এছাড়াও কয়েকটি গাড়ির পেছনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস জানা যায় তার কাছ থেকে।

ইন্টারন্যাশনাল ১৯৭৩

ইন্টারন্যাশনাল ১৯৭৩, ইন্টারন্যাশনাল মোটর কোম্পানি ইউএসএ’র তৈরি এই গাড়ি রাঙামাটির এক প্রকল্পে ব্যবহার হত। রাঙামাটির এক পাহাড়ি গ্রামে দুই পাহাড়ের খাদ থেকে গাড়িটি উদ্ধার করেন তার সংগ্রহশালার যোগ করেন মাহমুদুল ফারুক।

গোগামোবল ১৯৫৬, বাংলাদেশে এই ব্রান্ডের সম্ভবত এই একটি গাড়িই বিদ্যমান। ফরাসি বংশদ্ভুত এবং বাংলাদেশে কুমিল্লায় বসবাসরত ডিলনী পরিবারের কাছ থেকে গাড়িটি সংগ্রহ করা হয়।

ওল্ডসমোবিল

শেভ্রোলে ডিলাক্স ১৯৫১, উত্তরবঙ্গের একটি চিনিকলে ব্যবহার হত। নিলামে গাড়িটি বিক্রি করা হলে তা সংগ্রহ করেন মাহমুদুল ফারুক।

হোল্ডেন ১৯৬৩, অস্ট্রেলিয়ার হোল্ডেন মোটরসের তৈরি এই গাড়ি ২০ বছর আগে সংগ্রহ করেছিলেন মাহমুদুল ফারুক।

অস্টিন ১৯৩০, বগুড়ার একজন চিকিৎসক এই গাড়ি ব্যবহার করতেন। সংগ্রহ করা হয় প্রায় ২৫ বছর আগে।

ছবি: সংগ্রাহকের ফেইসবুক থেকে।