সারা পৃথিবীতে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বাংলাদেশও এর প্রভাব থেকে মুক্তি পায়নি। লাল শাড়ি-পাঞ্জাবি, হাতে এক গোছা ফুল অথবা পছন্দের উপহার নিয়ে শুরু হয় ভালোবাসা দিবস। তরুণ তরুণী, মাঝ বয়সি এমনকি বৃদ্ধ লোকদের কাছেও দিন দিন গুরুত্ব বেড়ে চলেছে ভালোবাসা দিবসের।
১৪ ফেব্রুয়ারি একেক জনের কাছে একেক রকমের। কারও কাছে বিশেষ দিন, আবার কারও কাছে খানিকটা বাড়াবাড়ি। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এ দিনটা ঠিক তাদের কাছে কেমন আর কীভাবে কাটানো হয় সারা দিন- সে সম্পর্কে জানা যায়।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, ঢাকা’র অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী এলিজা বলেন, “১৪ ফেব্রুয়ারি মানেই উৎসব মুখর দিন। এইদিনটা নিজের মতো কাটাতে ভালো লাগে। কখনও সারাদিন কোনো কারণ ছাড়াই বাসায় সেজেগুজে থাকি। আবার কখনও কাছের মানুষদের সঙ্গে বাইরে যাই। কাছের মানুষ বলতে যে বিশেষ কেউ হতে হবে তা নয় বন্ধুবান্ধব অথবা বড় ভাই বোনের সঙ্গে ঘোরাফেরা করেও দিনটা কাটাতে ভালো লাগে।”
“এই দিনে একজন আরেকজনকে ফুল ও উপহার দেয় এটা আমার বেশ ভালোই লাগে। ছোট বড় যেমনই হোক না কেনো উপহার দেওয়ার মানসিকতা তৈরি হওয়াটাই তার কাছে অনেক বড়। বললেন এলিজা।
তিনি আরও বলেন, “যে কোনো কিছুই অনবরত চলতে থাকলে খানিকটা স্তিমিত অনুভূতি আসে। সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে না হয় এই একটা দিনকেই একটু ভিন্ন ভাবে, একটু সুন্দরভাবে সাজানো হল। এতে সঙ্গী এমনকি নিজের মধ্যেও একটা চনমনেভাব আসে যা সম্পর্কে আরও জোরালো ও মধুর করে।”
গত এক দশক ধরে এই দেশে ভালোবাসা দিবস ঘটা করে পালন করা হচ্ছে। এর আগে এমন কোনো দিবস আছে বলে জানতেন না অনেকেই।
২৭ বছর আগে প্রেম করেই বিয়ে করছিলেন মার্টিন ও লিন্ডা।
মার্টিনের কথায়, “আগে তো এমন কোনো দিনের নামই শুনিনি। প্রথম প্রথম যখন ভালোবাসার জন্য আলাদা দিনের কথা শুনি তখন বিষয়টা বেশ হাস্যকর লাগতো। কয়েক বছর বাদে বিষয়টা বেশ স্বাভাবিকই লাগে।”
তার নিজেরও ইচ্ছা হয় স্ত্রীর জন্য ফুল কিনতে কিন্তু অনেকটা সংকোচের কারণেই ফুল কেনা হত না। মানুষ কী ভাববে এই বয়সে ফুল কিনলে। ‘কখনও কখনও সংকোচ ভেঙে ভোরে হাঁটাহাঁটি করে ফেরার পথে ফুল কিনে দিয়েছেন এই ভালোবাসা দিবসে।
তার লিন্ডা বলেন ‘শুরুতে আমাদের প্রজম্নের অনেকেই দিনটাকে খুব একটা আমলে নেয়নি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটা এখন উৎসবে পরিণত হয়েছে যা দেখতে বেশ ভালোই লাগে।”
“বিবাহ বার্ষিকী, জন্মদিন ইত্যাদির মতো ভালোবাসা দিবসও আলাদা করে পালন করা যায়। দলবেঁধে সেজেগুজে বাইরে যায় দেখতে বেশ ভালোই লাগে আমার।” বললেন এই গৃহিনী।
সব প্রজন্মের মানুষই মোটামুটি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে ‘ভালোবাসা দিবস’কে। এই বিশেষ দিনে সঙ্গী, বন্ধু, ভাই-বোনকে নিয়ে একটু ভিন্নভাবে পরিকল্পনা করলে সবার কাছেই ভালো লাগে। এতে নিজেদের সম্পর্ক ও পারিবারিক বন্ধন অটুট হয়।