কারণ এখানকার ‘সিএইচটি এক্সপ্রেস’ ও ‘হেবাং’ রেস্তোরাঁ দুটি পরিচালনা করছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীরা। রসুইঘরের পাচকও সেখানকার।
তাই বাঁশ মুরগি, লাকসু সালাদ কিংবা মুংদি’র খাঁটি স্বাদ পাওয়া যাবে সেখানে।
সিএইচটি এক্সপ্রেস
‘চট্টগ্রাম হিল ট্র্যাক্স এক্সপ্রেস’য়ের সংক্ষিপ্ত রূপ এইচটি এক্সপ্রেস। মিরপুরের কাজীপাড়া ফুটওভার ব্রিজের নিচে, স্বপ্ন’র পাশ দিয়ে যাওয়া গলিতে ঢুকে কয়েক কদম এগোলেই হাতের বামে পড়বে এই রেস্তোরাঁ।
দেয়ালে ফ্রেমে বাঁধানো কাপড়ের টুকরোগুলোকে প্রথম দর্শণে নকশিকাঁথা মনে হতে পারে। তবে আসলে তা চাকমা, মারমা, ম্রো, চাক এবং খেয়াং সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাক।
খাবারের আলাপে আসা যাক। রেস্তোরাঁর মেন্যুর প্রথম তিন পাতা পুরোপুরি বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের খাবার। যেখানে মুরগির মাংস, গরুর মাংস, কাঁকড়া, মাছ ও হাঁসের মাংসের বিভিন্ন পদ।
অর্পন চাকমা বলেন, “এদের মধ্যে জনপ্রিয় খাবার হল ‘ব্যাম্বু চিকেন’ (প্রতি প্লেট ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, পুরো বাঁশ ৭শ’ থেকে ১ হাজার টাকা)।”
সুপের মধ্যে জনপ্রিয় হল মারমাদের নুডুলস সুপ ‘মুংদি’, ৫০ থেকে ১শ’ টাকা। আর তিব্বতীয় অঞ্চলের নুডুলস সুপ ‘থুকপা’, ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
স্ন্যাকসের মধ্যে আছে- মাছ, গরু কিংবা মুরগির মাংসের তিন ধরনের মোমো ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এশীয় উপমহাদেশের বিশেষ বার্গার ‘বাও’ ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।
অর্পন চাকমা বলেন, “মুরগির মাংসে পদগুলোতে ব্রয়লার আর পাহাড়ি এই দুই ধরনের মুরগি ব্যবহার করা হয়।”
তার কথায়, “পাহাড়ি রান্নাগুলোতে মসলার ব্যবহার হয় কম, ভেষজ লতাগুল্মই থাকে বেশি। যেমন- ধান সাবারাং (লেমন গ্রাস), সাবারাং (ওয়াইল্ড বেসিল), ভাত পাটা (পানড্যান লিভস), বাগোর (ধনে পাতা), মাচ্ছো বাগোর ইত্যাদি।”
“বাঙালি ভর্তা আর পাহাড়ি ভর্তার মধ্যে তফাৎ আছে। বাঙালিরা ভর্তা বানায় একবারে পিষে। তবে পাহাড়িদের ভর্তার বেশিরভাগই হয় উপকরণগুলো কুঁচি করে কেটে।”
“বাঁশ যত বয়স্ক হবে ততই ভালো। কারণ কচি বাঁশ দ্রুত পুড়ে যায়। বাঁশের মধ্যে মাংস রান্না করতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।” বললেন অর্পন চাকমা।
হেবাং
মিরপুর কাজীপাড়ার স্বপ্ন আউটলেটের পাশের ভবনের দোতলায় এই রেস্তোরাঁ। ২০১৬ সালে হোম ডেলিভারি দিয়ে যাত্রা শুরু করে হেবাং।
চার বোনের প্রচেষ্টা আর ক্রেতা ও বন্ধু-বান্ধবের অনুপ্রেরণায় ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর রূপ নেয় রেস্তোরাঁয়।
মুরগির পদগুলোর দাম ১৮০ থেকে ৯শ’ টাকা। হাঁস পাওয়া যাবে ২৮০ টাকায়।
মাছের মধ্যে আছে চিংড়ি, বাইল্ল্যা, ছুরি, লইট্টা ইত্যাদির বিভিন্ন পদ। মাছ ভাজা, শুটকি ভর্তা, সিদ্ধ মাছের ভর্তা, দাম ২শ’ টাকার মধ্যে।
আবার পাঁচটি চাপিলা মাছ ভাজা পাওয়া যাবে ১০০ টাকায়।
শামুকের পদও মিলবে ২শ’ টাকায়।
ছবি: সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের।