চিকিৎসকের আয়কর গণনা

ডাক্তারদের আয়ের বিভিন্ন উৎস রয়েছে। সেগুলো থেকে আয়কর বিবরণী তৈরির পন্থা এখানে দেওয়া হল।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2018, 10:00 AM
Updated : 22 Nov 2018, 10:00 AM

১৯ নভেম্বর আয়কর মেলা শেষ হলেও ৩০ নভেম্বর আপনার টিন–এ উল্লেখিত সার্কেলে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।

এর আগে একটি লেখায় একজন শিল্পীর আয় এবং কর বের করার পন্থা জানানো হয়েছিল। আজ একজন চিকিৎসক কীভাবে তার আয় এবং কর গণনা করবেন সে ব্যাপারে জানানো হল।

একজন চিকিৎসক যদি চাকরি করেন তাহলে একজন চাকরিজীবী যেভাবে আয় গণনা করেন সেভাবেই তার করযোগ্য আয় বের করতে হবে। তবে একজন চিকিৎসক চাকরির পাশাপাশি বাইরে রোগী দেখে থাকেন। সেখান থেকে তার ভালো অংকের আয় হয়।

আপনি যদি একজন চিকিৎসক হয়ে থাকেন এবং প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন তাহলে কীভাবে আয় গণনা করবেন?

প্রথমে বেতন হিসেবে যেটা পাচ্ছেন তা থেকে করযোগ্য আয় বের করতে হবে। বেতন খাতে আয় থেকে করযোগ্য আয় বের করার সময় বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা ইত্যাদি খাতে যে ছাড় রয়েছে তা যথাযথভাবে বাদ দিয়ে বেতন খাতে করযোগ্য আয় বের করতে হবে।

তারপর প্রাইভেট প্র্যাকটিস থেকে যে আয় হয় তা থেকে করযোগ্য আয় বের করবেন।

আয়কর আইন অনুযায়ী, একজন চিকিৎসককে তার আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করতে হয়। কীভাবে তিনি তার হিসেব রাখবেন তা ছক কেটে টেবিল উল্লেখ রয়েছে আয়কর আইনে।

চিকিৎসক প্রতিদিন যে রোগী দেখেন তার একটি রেজিস্টার রাখতে হয়, যেটা কেইস রেজিস্টার নামে পরিচিত। সেখানে রোগীর নাম, কী ধরনের সেবা দেওয়া হয়েছে এবং সেজন্য রোগীর কাছ থেকে ফি কত নেওয়া হয়েছে তা লিপিবদ্ধ রাখতে হয়।

এরপর, আরেকটি খাতা রাখতে হয় যেখানে খরচের হিসাবগুলো থাকে।

এখানে খরচের বিবরণ লিখে নগদে টাকা পরিশোধ করে থাকলে নগদের ঘরে অথবা চেকে পরিশোধ করলে চেকয়ের ঘরে লিখবেন।

এভাবে একজন চিকিৎসকের আয় ও ব্যয় দুটি খাতায় লিপিবদ্ধ করে বছর শেষে মোট আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস থেকে করযোগ্য আয় বের করতে হয়।

তবে যারা উপরে উল্লেখিত নিয়মে হিসাব রাখেন না তারা কী করবেন?

আয়কর নির্দেশিকাতে একজন চিকিৎসক কীভাবে আয় এবং কর পরিগণনা করবেন তার একটি উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রাইভেট প্র্যাকটিস থেকে যে আয় হয়েছে তার এক-তৃতীয়াংশ আনুমানিক খরচ বিবেচনা করে করযোগ্য আয় বের করার পন্থা উল্লেখ আছে।

তাই খরচের হিসাব রাখা ঝামেলার মনে হলে বা কোনো কারণে রাখা সম্ভব না হলে, মোট আয় থেকে এক-তৃতীয়াংশ বাদ দিয়ে করযোগ্য আয় বের করতে হবে।

এবার চাকরি এবং প্রাইভেট প্র্যাকটিস- এই দুই খাতের করযোগ্য আয় যোগ করে মোট করযোগ্য আয় বের করতে হবে। তা থেকে কর রেয়াত এবং যদি কোথাও উৎসে কর দিয়ে থাকেন তাহলে সেগুলো বাদ দিয়ে নীট কর দায় বের করতে হবে।

এই নীট কর দায় যখন রিটার্ন দাখিল করবেন তখন দরকারী কাগজপত্রের সঙ্গে পে অর্ডার/ চালান/ চেক দিয়ে জমা দিলেই চিকিৎসকের আয়কর রিটার্ন দাখিল হয়ে যাবে।

ছবি: রয়টার্স।

লেখক: জসীম উদ্দিন রাসেল, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট।

আরও পড়ুন