‘সাইন্টিফিক রিপোর্টস’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, ঠাণ্ডা ও কফির মধ্যে রাসায়নিক উপাদানজনীত তফাৎ রয়েছে। যার প্রভাব থাকতে পারে যিনি পান করছেন তার স্বাস্থ্যের উপর।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘থমাস জেফার্সন ইউনিভার্সিটি’র রসায়ন ও প্রাণরসায়ন বিভাগের দুই অধ্যাপক নাইনি জি. রাও এবং মেগান ফুলার এই গবেষণার জন্য ইথোপিয়ান, ব্রাজিলিয়ান ও কলম্বিায়ান অল্প রোস্ট করা কফির গুঁড়া ব্যবহার করেন।
দেখা গেছে, গরম পানিতে ফুটিয়ে তৈরি করা কফিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বেশি থাকে যা এই পানীয়র কয়েকটি গুণের মধ্যে একটি।
বিভিন্ন কফি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এবং লাইফস্টাইল ব্লগে অনেকটা দালালি করে জানানো হয় ‘কোল্ড কফি’তে অম্লের পরিমাণ গরম কফির তুলনায় কম। তাই গরম কফি খাওয়ার কারণে বুক জ্বালাপোড়া কিংবা গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
তবে গবেষণায় দুই ধরনের কফিরই ‘পিএইচ’ বা অম্ল-ক্ষারের মাত্রা একই। পর্যবেক্ষণ করা সবগুলো কফিতেই এর মাত্রা ছিল ৪.৮৫ থেকে ৫.১৩।
তাপ ছাড়া দীর্ঘক্ষণ ভিজিয়ে রেখে তৈরি করা হয় কোল্ড কফি, যা বিগত কয়েক বছরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তবে গবেষকরা এই কোল্ড কফি নিয়ে কোনো গবেষণা খুঁজে পাননি। অপরদিকে গরম কফিতে যে স্বাস্থ্যগুণ আছে, যা ডায়বেটিস ও হতাশাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়, সে বিষয়ে রয়েছে তথ্য সমৃদ্ধ গবেষণা।
গবেষকরা আরও বলেন, “দুই ধরনের কফির পিএইচের মাত্রা একই হলেও গরম কফিতে ‘টিট্রাটেবল’ অ্যাসিড বেশি থাকে। গরম কফিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বেশি হওয়ার সম্ভবত এটাই কারণ। কফিতে প্রচুর পরিমাণের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, তাই পরিমাণ মতো গ্রহন করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।”
‘গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল’ বা পাকস্থলী ও অন্ত্রের সমস্যা এড়াতে কোল্ড কফি বেছে নেওয়াকে নিরুৎসাহীত করেন গবেষকরা।
কফির গুণাগুণ
- কফিতে রয়েছে সুরক্ষাদানকারী উপাদান যা যকৃতকে বিভিন্ন সমস্যা থেকে বাঁচায়। ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটিলিভার ডিজিজ’ থেকেও রক্ষা করতে সক্ষম কফি।
- যারা নিয়মিত কফি পান করেন তাদের হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক ছন্দজনীত সমস্যা কম হয়। স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে বলে দাবি করে কিছু গবেষণা।
- কফিতে থাকা ‘ক্যাফেইন’ মস্তিষ্ক প্রখর করে। ফলে মনোযোগ ও ক্ষিপ্রতা বাড়ে।
- গরম কালো কফি ওজন কমাতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কালো কফিতে ক্যালরি থাকে কম, ফলে শরীরচর্চার আগে এটি একটি উপকারী পানীয় হতে পারে। ক্ষুধাও নিয়ন্ত্রণ করে কফি। যোগান দেয় পর্যাপ্ত কর্মশক্তি।
আরও পড়ুন