সুখী হওয়ার অতিরিক্ত চেষ্টাই হয়ত অসুখী হওয়ার কারণ

সুখী হতে কে না চায়। জীবনের সব কাজের আসল উদ্দেশ্যই তো ভালোভাবে থাকা। তবে কি দুঃখ, অশান্তি, অস্বস্তি পুরোপুরি খারাপ বিষয়?

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2018, 09:34 AM
Updated : 2 Sept 2018, 07:11 PM

এই বিষয়ের ওপর করা গবেষণার ফলাফল নিয়ে জীবনযাপন-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, সুখী হওয়ার অতিরিক্ত চেষ্টা থেকে জীবন আরও অতিষ্ট হয়ে উঠতে পারে।

২০১৭ সালে করা এক জরিপে দেখা যায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মাত্র ৩৩ শতাংশ মুখ ফুটে বলেছে তারা  সুখী।

‘ইমোশনাল’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এই জরিপে দেখা যায়, জীবনে সুখ অর্জন করার চেষ্টায় মগ্ন হয়ে তারা আসলে ব্যর্থতা বা নেতিবাচক আবেগের মধ্যে আটকা পড়ে যায়, যার ফলাফল হয় অবিরাম মানসিক চাপ।

এ বিষয়ে দুটি গবেষণা চালানো হয়। প্রথম গবেষণায় ছিল তিনটি দল। প্রতিটিতে ছিলেন ৩৯ জন শিক্ষার্থী। যাদের ৩৫টি ধাঁধাঁ-জাতীয় প্রশ্নের সমাধান করতে দেওয়া হয়। প্রথম দুই দলকে দেওয়া হয় অসমাধানযোগ্য সমস্যা আর শেষ দলকে দেওয়া হয় সহজ সমস্যা।

courtesy: Reuters/Mike Blake

প্রথম দলটি সমস্যাগুলোর সমাধান করে অনুপ্রেরণামূলক পোস্টারে ঘেরা একটি ঘরে বসে। দ্বিতীয় দলটি ছিল সাধারণ একটি ঘরে আর শেষ দলটি ছিল জীবনে সুখী হওয়া বিষয়ক বিভিন্ন পোস্টারে ঘেরা ঘরে।

সমস্যা সমাধান করার পর তাদেরকে শ্বাসপ্রশ্বাসভিত্তিক ব্যায়াম করতে বলা হয় এবং তারা কেমন অনুভব করছেন তা জিজ্ঞেস করা হয়।

অনুপ্রেরণামূলক পোস্টারে ঘেরা কক্ষে থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যর্থতা আর নেতিবাচক অনুভূতি নিয়ে কথা বলে। অপরদিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দলের শিক্ষার্থীরা সে বিষয়ে কোনো কথা বলেনি।

দ্বিতীয় গবেষণায় দুইশ জন আমেরিকান নাগরিককে তাদের নেতিবাচক মনোভাব এবং সেসম্পর্কে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়।

দেখা গেছে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা অস্বস্তি, হতাশা এবং ভয়ের মতো আবেগগুলোতে ডুবে থাকার পরও সমাজে সুখী হওয়ার আশা করছেন তারাই নেতিবাচক অনুভুতি নিয়ে মানসিক চাপে থাকছেন।

যখন মানুষ সুখী হওয়ার চেষ্টায় বিভোর হয়ে যায় তখন তাদের জীবনে ব্যর্থতা ও নেতিবাচক অভিজ্ঞতা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

courtesy: REUTERS/Eric Gaillard

জীবনের অসুখী সময়গুলোকে মেনে নেওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি বিষয়- এই তথ্য জানানোই ছিল গবেষণা দুটির উদ্দেশ্য। আর এগুলো এড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে মানুষ আরও বাজেভাবে সাড়া দেয়।

বরং দুঃখের সময়গুলোকে হাসি-মুখে আপন করে নেওয়ার মাধ্যমে মানুষের সুখানুভূতি বাড়ে। পাশাপাশি মানসিক চাপগ্রস্ত থাকার সময় খারাপ সংবাদ সামাল দিতে পারে আরও ভালোভাবে।

জীবনের চলা পথের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ব্যর্থতা। যা সাফল্য ও অভিজ্ঞতা অর্জনেরই একটি অংশ। তাই ব্যর্থতাকে হাসি মুখে বরণ করে সেটা থেকে শিক্ষা গ্রহণের মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

আরও পড়ুন