অফিসের পরেও যদি প্রাতিষ্ঠানিক কাজের মেইল বা ম্যাসেজের নজরদারিতে থাকতে হয় তবে জীবন হয়ে উঠতে পারে অতিষ্ট।
Published : 15 Aug 2018, 03:38 PM
একজন কর্মীর ক্ষেত্রে অফিসের সময়ের পর বাকি সময়টা একান্তই নিজের। এই সময় নিজের পছন্দ মতো কাজ করা, পরিবারকে সময় দেওয়া বেড়াতে যাওয়া বা বিশ্রাম যে কোনো কিছুই হতে পারে।
তবে কর্মঘণ্টার পরেও যদি কর্মী ব্যক্তিসময়ের মধ্যে অফিসের মেইল বা কাজ নিয়ে পড়ে থাকেন মানসিক শান্তির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
এই বিষয়ে গবেষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া’তে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ‘ভার্জিনিয়া টেক’। গবেষণার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কিলিং মি সফ্টলি: ইলেক্ট্রনিক কমিউনিকেইশনস মনিটরিং অ্যান্ড এমপ্লয়ি অ্যান্ড সিগনিফিকেন্ট আদার ওয়েলবিয়িং’।
এই গবেষণা অনুযায়ী, অফিসের নির্ধারিত সময়ের বাইরে অফিসের ‘মেইল চেক’ করতে হবে এই চিন্তাটুকুই কর্মী এবং পরিবারকে অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
একজন কর্মীর অফিসের সময়ের বাইরে অফিসের কাজ নিয়ে মাথা খাটিয়ে কাজকে জীবনের বোঝায় পরিণত করার প্রয়োজন নেই, এই বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে এই গবেষণা।
কর্মক্ষেত্রে নির্ধারিত সময় কাজ করার পর আবার অফিসের কাজে নিয়ে ভাবতে হবে, এই চিন্তা একজন কর্মীর মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকলে তাতে ওই কর্মীর পারিবারিক জীবনে কলহ তৈরি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। কারণ, অফিসের চিন্তায় মগ্ন থাকার কারণে ওই কর্মী তার পারিবারিক বিষয়গুলোর প্রতি পুরোপুরি মনযোগ দিতে পারেন না।
এই গবেষণার সহকারী লেখক উইলিয়াম বেকার বলেন, “কর্মক্ষেত্র আর ব্যক্তিগত জীবনের সীমাহীন দায়দায়িত্বগুলো একজন ব্যক্তিকে অসহায় পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। আর এই অসহায় পরিস্থিতি থেকে সৃষ্টি হয় অস্বস্তি, ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা।
দুঃখের বিষয় হল, সকাল নয়টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করাকে মানুষ যতটা অবলীলায় মেনে নেয়, ব্যাপারটা ততটা স্বাভাবিক নয়। তার ওপর আবার যোগ হয় বাড়তি সময় কাজ করার চাপ, কাজের যেনে কোনো শেষ নেই।
সঙ্গে যোগ হয়েছে মানুষকে সবসময় পরস্পরের কাছে রাখার প্রযুক্তি, যা প্রিয় মানুষকে কাছে রাখার চাইতে অফিসের কাজকে কাছে রাখতেই যেন বেশি উপকারী। ফলাফল- অফিস থেকে বেরিয়ে বাসায় ফিরেও অফিসের কাজ।
কী করা উচিত
বেকার বলেন, “এই পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করার একটি আদর্শ উপায় হল অফিসের পর অফিস বিষয়ক ইমেইল, এসএমএস ইত্যাদির দিকে নজরই না দেওয়া। আর এই লড়াইতে কর্মীদের প্রতি সহায়ক হতে হবে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও, তৈরি করতে হবে এই সমাধানের সঙ্গে সমর্থনপূর্ণ নিয়মাবলী।”
“অফিসের কাজ সম্পর্কিত যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে একজন কর্মীকে কতক্ষণ পাওয়া যাবে সেই বিষয়ে সীমাবদ্ধতা তৈরি করতে হবে ওই কর্মীকেই। কোনো কর্মক্ষেত্রে যদি অফিসের সময়ের বাইরেও যোগাযোগের জন্য নাগালের মধ্যে থাকতে হয়, তবে তা আগেভাগেই কর্মীকে জানিয়ে দিতে হবে।”
বেকার পরামর্শ দেন যে, “অফিসের নির্ধারিত সময়ের পর অফিসের ইমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে দুরে থাকতে হবে, অফিসের ফোন বন্ধ করে দিতে পারেন। আর অফিসের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ব্যক্তিগত জীবনে মনযোগ দিন।”
আরও পড়ুন