মৌসুমি ফল আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারাহ মাসুদা বলেন, “আম নানান পুষ্টি উপাদানে ভরপুর যা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি কর্মশক্তি যোগাতেও সহায়তা করে।”
আমের পুষ্টি গুণ সম্পর্কে তিনি জানান:
পাকাআমে ক্যারোটিনের মাত্রা বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ২৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন থাকে। এতে ১.৩ গ্রাম আয়রণ, ১৪ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম, ১৬ মি.গ্রা. ফসফরাস, ১৬ মি.গ্রা. ভিটামিন সি, ০.৯ মি.গ্রা. রিভোফ্লেভিন এবং ০.০৮ মি.গ্রা. থায়ামিন থাকে।
এছাড়াও পাকাআমে রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও বি-২। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ০.১ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-১ ও ০.০৭ মি.গ্রা. বি-২ রয়েছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ০.৫ গ্রাম খনিজ লবণ থাকে। এতে কিছু পরিমাণ প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে। যেমন- প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ১ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৭ গ্রাম ফ্যাট থাকে।
আম শ্বেতসারের ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ২০ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়।
পাকাআমের উপকারিতা সম্পর্কে ফারাহ মাসুদা বলেন, “এর পুষ্টি উপাদান শরীরের নানাভাবে শক্তি যুগিয়ে ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে মানবদেহ সুস্থ রাখতে সহায়ক।”
যেমন-
- আমের ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে।
- কার্বোহাইড্রেইট কর্মশক্তি যোগায়।
- আমের আয়রন অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।
- ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে।
- আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি।
- এর পটাশিয়াম রক্ত স্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে।
- এই ফলের আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে।
- আম কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- পাকাআম রক্তে কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের পাকাআম খাওয়া ঠিক নয়। এটা ভুল ধারনা।
পরিমিত পরিমাণ আম খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। তাই ডায়াবেটিকরা পরিমিত পরিমাণে পাকাআম খেতে পারেন বলে জানান এই অধ্যাপক।
আরও পড়ুন